নাড়াজোল বেড়াতে গিয়ে ছবি তোলার সময় হেনস্থা হতে হল পর্যটকদের। সম্প্রতি খোদ নাড়াজোল রাজবাড়ির সদস্যদের দ্বারায় ঘাটালের এক বাচিক শিল্পী তথা বিউটিসিয়ান ও তাঁর সঙ্গীসাথীদের অপদস্থ হওয়ার ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর সারা মহকুমা জুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। কেউই ভাবতে পারছেন না, নাড়াজোলের যে খান রাজ পরিবার একদা অতিথিপরায়ন হিসেবে রাজ্য জুড়ে খ্যাতিলাভ করেছিল সেই খান রাজ বংশের উত্তরসূরীরা তাঁদের অতিথিদের এভাবে অপমান-অপদস্থ করে কার্যত এলাকা থেকে বিতাড়িত করার ব্যবস্থা করবে বলে।
ঘাটাল মহকুমার অন্যতম দর্শনীয় স্থান দাসপুর-১ ব্লকের নাড়াজোল রাজবাড়ি। প্রায় ৬০০ বছরের পুরাতন রাজবাড়ির আনাচকানাচ, রাজবাড়ির দেওয়াল থেকে খসে পড়া চুন-সুরকি-ইঁট বয়ে চলেছে রাজার রাজত্বের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। আবার এই রাজবাড়ি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের সাথেও জড়িত ছিল। এখানে এসেছিলেন গান্ধীজি, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, জহরলাল নেহেরু থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-সহ অনেকেই। সম্প্রতি এই রাজবাড়ির বিভিন্ন নিদর্শন হেরিটেজ হিসাবেও ঘোষিত হয়েছে।
এই সব কারণে সেই পুণ্য মাটির টানে সারা বছর জুড়ে বিভিন্ন সময়ে পর্যটকদের ভিড় লেগেই থাকে নাড়াজোলের রাজবাড়িতে। প্রবেশ এবং ছবি তোলায় কোথাও নেই কোনও লিখিত বাধ্যবাধকতা। এই রাজবাড়িতে হয়েছে একাধিক ছবির শ্যুটিং। বিভিন্ন ফোটোগ্রাফাররাও এখানে আসেন ফটো শ্যুটে।
কিন্তু সম্প্রতি এক তিক্ত অভিজ্ঞতার শিকার হতে হল ঘাটালেরই খ্যাতনামা বাচিক শিল্পী এবং বিউটিসিয়ান বৈশাখী দত্ত হড়কে।
অভিযোগ শুনে আমরা ফোনে যোগাযোগ করি রাজ পরিবারের সদস্য তথা নাড়াজোল হেরিটেজ বোর্ডের অন্যতম কর্মকর্তা সন্দীপ খানের সাথে।
ঘটনা যাই হোক, নাড়াজোল রাজবাড়ির সাথে ঘাটালবাসীর সম্পর্ক আত্মিক। রাজবাড়ি ঘাটাল মহকুমার অহংকারও। কারণ ঘাটাল মহকুমা নিয়ে দুচার কথা বলতে গেলে নাড়াজোল রাজবাড়ির কথাও চলে আসে। আর বর্তমানে নাড়াজোল রাজবাড়ি পর্যটকদের কাছে মুক্তাঞ্চল নামেই পরিচিত। নবরূপে সাজছে ঐতিহাসিক নাড়াজোল রাজবাড়ি। এমন ভালো লাগার মাঝে উক্ত অনভিপ্রেত ঘটনা আর যেন না ঘটে সে কামনাই আমাদের সবার।