দাসপুরে পুলক মাস্টারের হাত ধরে নাট্য বিপ্লব,সময়ের বাইরে গিয়ে শিক্ষকের নাট্য চর্চা

সৌমেন মিশ্র, ‘স্থানীয় সংবাদ’, ঘাটাল: কথা হচ্ছিল রাজনগর ইউনিয়ন হাইস্কুলের(Rajnagar union high school) সপ্তম শ্রেণির ছাত্র সায়নের মা সঙ্গীতা পণ্ডিতের সাথে।
[‘স্থানীয় সংবাদ’-এর সমস্ত কিছু জানতে এখানে ক্লিক করুন]
তিনি বলছিলেন ছেলে পড়াশোনায় বড্ড আনমনা হলেও জানতামই না ছেলের অভিনয়ের(acting) দক্ষতার কথা। নাটক(drama) বা থিয়েটারে(theater) অভিনয়ের মাধ্যমে নিজের চরিত্রের বাইরে গিয়ে অন্যের চরিত্রকে নিজের মধ্যে এনে তা দর্শকদের(audiance) কাছে পরিবেশন। কাজটা নেহাত কম শিক্ষনীয় বিষয় নয়। বর্তমান যুগেতো এই অভিনয় জগৎ জুড়ে কোটি কোটি টাকার ছড়াছড়ি। এই গ্লামার দুনিয়ায় প্রবেশে অনেক যুবক যুবতীর এক মাত্র লক্ষ্য থাকে। তবে এখন আপনি ঘাটালের দাসপুরে এলে দেখবেন স্কুলে স্কুলে খুদে অভিনেতা অভিনেত্রীর(actor-actress) ছড়াছড়ি। এলাকা ও এলাকার বাইরে তাদের রীতিমতো ডাক পড়ছে। বিভিন্ন উৎসব অনুষ্ঠানে এই খুদেদের অভিনীত একের পর এক নাটক মঞ্চস্থ হচ্ছে। হাজার হাজার দর্শক তা দেখছে। নিজের ছেলে মেয়েকে হাজার হাজার দর্শকের মাঝে মঞ্চে তাক লাগানো অভিনয় করতে দেখে অবাক এই সঙ্গীতাদেবীর মতো অনেক মায়ের পাশাপাশি বাবারাও। সারা বাংলায় যখন কচিকাঁচা থেকে যুবক যুবতীদের বিরুদ্ধে একেবারে অপসংস্কৃতিতে মেতে থাকার অভিযোগ সেই সময় দাসপুর জুড়ে নতুন প্রজন্মের এই নাট্য চর্চা কিন্তু বেশ সাড়া ফেলেছে। আর এসবের পিছনে কিন্তু দাসপুরেরই এক বাসিন্দা। তিনি পেশায় শিক্ষক(Teacher) নাম পুলক আদক। পুলক বাবুর বাড়ি দাসপুরের যদুপুরে, তিনি বর্তমানে ঘাটাল এলাকার প্রসাদচক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। পুলকবাবু দীর্ঘ প্রায় ৫ বৎসর ধরে নিজের স্কুল ছুটির পর বা ছুটির দিনগুলিতে দাসপুরের বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে নাটকের ক্লাস করছেন। সামাট, রামগড়,ধান্যখাল, রাজনগর, গোকুলনগরের এর মতো গ্রামে গ্রামে প্রাথমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা(students) এমন নাটকের ক্লাস করতে পেরে উচ্ছ্বসিত। স্কুলের বার্ষিক অনুষ্ঠান হোক বা বিভিন্ন পুজো পার্বণে অনুষ্ঠান মঞ্চে এই পুলকবাবুর নির্দেশনায় নাটক মঞ্চস্থ হচ্ছে আর অভিনয়ে বিদ্যালয়ের কচিকাঁচারা। সব চাইতে বড় কথা দাসপুরের এই শিক্ষক সমস্তটাই করছেন বিনা পারিশ্রমিকে ভালোবেসে। এলাকার কচিকাঁচাদের ছোটো থেকে বাংলার ঐতিহ্য সংস্কৃতির সাথে জড়িয়ে দেবার জন্য। অন্যদিকে স্কুলে স্কুলে এর জেরে স্কুল ছুট পড়ুয়ার সংখ্যাও কমছে,এক ঘেঁয়েমি পাঠ্য বই এর বাইরে এসে এমন নাট্য চর্চায় শিক্ষার্থীরা যেন রিচার্জ হয়ে আরও জোর কদমে পড়াশোনার মধ্যে ডুবতে পারছে। দাসপুরের বাসিন্দা পাশাপাশি ঘাটালের কিসমত দেওয়ানচক ভবানন্দ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিশ্বজিৎ জানা বলেন, পুলক আমার ভাইয়ের মতো সত্যিই পুলক বাংলার নাটককে ধরে রাখতে একটা আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। আমি নিজেও দেখেছি নাটকের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পাঠে এক ঘেয়েমি দূর হয়।

 

ঘাটাল মহকুমার সমস্ত আপডেট তে যুক্ত হন আমাদের সাথে!