তৃপ্তি পাল কর্মকার:এবার থেকে ঘাটাল মহকুমার প্রত্যেকটি রেস্টুরেন্ট, বিরিয়ানি ও মিষ্টি দোকানগুলিতে থাকা খাবারগুলির ওপর প্রশাসন ও খাদ্য সুরক্ষা দপ্তর আরও কড়া নজরদারি চালাবে। ১৭ জানুয়ারি ঘাটালের মহকুমা শাসক অসীম পাল এবং ঘাটালের খাদ্য সুরক্ষা আধিকারিক অরুণাভ দে’র নেতৃত্বে ঘাটাল শহর ও বরদা চৌকান এলাকার বেশ কয়েকটি খাবার দোকানে অভিযান চালানো হয়েছিল। খাবার দোকানের ফ্রিজ থেকে যেসমস্ত খাবার বেরিয়েছে তা দেখে আধিকারিকরাই অবাক হয়ে গিয়েছিলেন। একটি হোটেলের ফ্রিজ থেকে ছত্রাক ফুটে যাওয়া স্যালাড, মসলা বেরিয়েছে। বিরিয়ানি দোকানে ছিল বাসি মাংস ও মশলা। মিষ্টির দোকানের মিষ্টি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এই ধরনের খাবার খাওয়া উচিত নয়। ওই দিনই সমস্ত কিছু বার করে সঙ্গে সঙ্গে নষ্ট করে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
মিষ্টি দোকানে মিষ্টিতে ঢাকা না দিয়েই রেখে দেওয়া হয়েছে। মিষ্টিতে রাস্তার ধূলো উড়ে পড়ছে। অধিকাংশ মিষ্টি বা তেলেভাজা দোকানের বিক্রেতারা যে হাতে খদ্দেরদের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছেন এবং ফেরৎ দিচ্ছেন সেই হাতেই মিষ্টি বা তেলেভাজা তুলে দিচ্ছেন। খাদ্য সুরক্ষা আধিকারিক অরুণাভ দে বলেন, টাকায় অনেক ধরনের রোগ জীবাণু থাকে কোনও ভাবেই টাকা নিয়ে সেই হাতে কোনও খাবার দেওয়া-নেওয়া করা উচিত নয়।
ক্রেতা সুরক্ষা আধিকারিক বলেন, বেশিরভাগ ব্যবসায়ীই সব জেনেও খদ্দেরদের নোংরা হাতে খাবার দিয়ে থাকেন। বাসি ও পচা খাবার দেওয়ার বিষয়টি প্রত্যেক ব্যবসায়ীই ইচ্ছেকৃতভাবে করে থাকেন। বেশি হওয়া মালপত্র ফেলে দিলে তাঁদের ক্ষতি হবে। তাই সেটাকে পরবর্তীকালে খদ্দেরদের যেনতেন প্রকারে চালিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। তেলেভাজা দোকানে একই তেলে একাধিক বার ভাজাভুজি করা হয়। এটাও ঠিক নয়। একবার ব্যবহৃত তেল পরে আবার ব্যবহার করলে তেল থেকে ফ্রি রাডিকল তৈরি হয়। যা আমাদের হার্টের ক্ষতি করে। হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
এই বিষয়গুলি কোনও ভাবেই মেনে নেবে না খাদ্য সুরক্ষা দপ্তর। অরুণাভবাবু বলেন, আমরা এভাবে বিভিন্ন পত্রপত্রিকার মাধ্যমে এবং সচেতনতা শিবিরের মাধ্যমে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়কেই সচেতন করছি। কিন্তু তা সত্ত্বেও খাবারের কোনও দোকানদারই আমাদের নির্দেশ মেনে চলছে না। তাই আমাদের অভিযান চালাতে বাধ্য হতে হচ্ছে। আগামী দিনে অভিযান চালিয়ে যে সমস্ত দোকান থেকে নিয়ম বহির্ভুত খাবার পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।