কাজলকান্তি কর্মকার [মো: 9933066200]: পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাজুড়ে স্ক্রাব টাইফাসে বহু মানুষ আক্রান্ত। গত কয়েক সপ্তাতে সব মিলিয়ে এই জেলায় ৪১১জন এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। তার মধ্যে ঘাটালেরও কিছু মানুষ রয়েছেন। ইতিমধ্যেই মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ল্যাবরেটরিতে এই পোকার কামড়ে আক্রান্তদের রক্ত পরীক্ষা করার বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে। জেলার একাধিক ব্লকে বহু মানুষ এই রোগে বহু মানুষ আক্রান্ত হওয়ায় স্বাভাবিকভারে জেলার বাসিন্দারা রীতিমতো আতঙ্কিত। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ গিরিশচন্দ্র বেরা জানিয়েছেন, অনেকে নিয়মিত ওষুধ খেয়ে সুস্থ হয়ে গিয়েছেন। অযথা রোগীদের উদ্বেগ করার কারণ নেই। 👉স্ক্রাব টাইফাস: মাইট নামে অতি ক্ষুদ্র একটি জীব কামড়ালে ব্যাকটেরিয়াঘটিত এই অসুখ হয়। যার জন্য দায়ী ওরিয়েনসিয়া শুশুগামুসি (Orientia Tsutsugamushi) নামের একটি ব্যাক্টেরিয়া। দেখতে ছোট পোকার মতো হলেও আদতে মাইট কিন্তু কোনও পোকা নয়। আকারে ০.২ মিলিমিটার থেকে ০.৪ মিলিমিটার মাপের হয় মাইট। এর লার্ভা থেকে এই রোগ ছড়ায়। উত্তরবঙ্গের মিরিক এবং সংলগ্ন পাহাড়ি অঞ্চলেই সাধারণত মাইটের ব্যাপক খোঁজ পাওয়া যায়। 〰রাজ্যে এসেছে: বছর দুই আগে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথে ভর্তি হওয়া এক শিশুর শরীরে এই রোগ ধরা পড়ে। 》》বাহক: ঝোপঝাড়, আবর্জনাবহুল এলাকায় এই মাইট বেড়ে ওঠে। মাকড়ের বাহক ইঁদুর ও কুকুর। 》》লক্ষণ: জীবাণু সংক্রমণ হওয়ার প্রায় ১-২ সপ্তাহ পর ঠাণ্ডা ও কাঁপুনিসহ আকস্মিক জ্বর, মাথাব্যথা ও অন্যান্য ফ্লু এর মত উপসর্গ হয়। এছাড়াও লক্ষণ শুরুর ৫- ৭ দিন পর দেহে ফুসকুড়ি দেখা দেয় যা হাত ও পায়ে ছড়ায় তবে মুখমণ্ডল, হাত ও পায়ের তালুতে ফুসকুড়ি হয় না। তাছাড়াও সাংঘাতিক মাথা ব্যথা হাই-ফিভার (১০৪ পর্যন্ত জ্বর) পিঠে ও বুকে র্যাশ (যা ক্রমশই ছড়াবে) লো ব্লাড প্রেশার উজ্জ্বল আলোর দিকে চোখ মেলে তাকাতে না পারা পেশিতে বিশাল ব্যথা হতে পারে। 》》আশঙ্কা: ঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু হলে ভয়ের বিশেষ কারণ নেই। সঠিক সময়ে চিকিৎসা হলে জীবনহানির সম্ভাবনাও সেভাবে নেই। কিন্তু, চিকিৎসায় দেরি হলে মাল্টি-অরগ্যান ফেলিওর হয়ে আক্রান্তের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। যেমনটি কিছু দিন আগে মুর্শিদাবাদের নবগ্রামের এক যুবকের হয়েছিল বা উল্টোডাঙার শুভ ময়রার (৫)। ওরা দুজনই মারা গিয়েছেন। তবে এই রোগ ছোঁয়াচে নয়। তবে বেশ কিছু দিন ধরে ভুগতে হতে পারে। 💥এড়ানোর উপায়: ঝোপজঙ্গল থেকে দূরে থাকতে হবে। আশপাশের ইঁদুরের গর্ত বুজিয়ে দিতে হবে। শিশুদের হাত-পা ঢাকা পোশাক, বিশেষত, জুতো পরিয়ে রাখতে হবে। রাস্তার কুকুরের কাছাকাছি যাওয়া চলবে না। বহুতলেও মশারি টাঙিয়ে ঘুমোতে হবে। জ্বর এলে শিশুর শরীরে কোনও ছেঁকার দাগ আছে কি না, দেখতে হবে, থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।