নিজস্ব সংবাদদাতা: চাকরি দেওয়ার নাম করে বেশ কয়েক লক্ষ টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূল নেতা তথা ঘাটালের প্রাক্তন বিধায়ক শঙ্কর দোলইয়ের বিরুদ্ধে। শুধু মৌখিক অভিযোগই নয়, শঙ্কর দোলইয়ের নামে ঘাটাল থানায় ৪০৬, ৪২০, ৫০৬ এবং ৩০৬ ধারায় একটি এফআইআরও হয়েছে। পুলিস জানিয়েছেন, কুশপাতা ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা এক বিধবা ৬ ফেব্রুয়ারি থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। ওই অভিযোগের পর থেকেই শঙ্করবাবুকে এলাকায় পাওয়া যাচ্ছে না। যদিও শঙ্করবাবু স্থানীয় সংবাদকে ফোনে জানিয়েছেন, তাঁকে চক্রান্ত করে ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি কারোর কাছ থেকে টাকা নেননি।
ওই বিধবা পুলিশকে লিখিত আকারে জানিয়েছেন, তাঁর ছেলের চাকরির জন্য বছর চারের আগে তাঁর স্বামী সুজিত মণ্ডল শঙ্করবাবুকে অনুরোধ করেছিলেন। শঙ্করবাবু সেই সময় সুজিতবাবুকে জানিয়ে ছিলেন তাঁর সঙ্গে উপর মহলের অনেকের চেনাজানা রয়েছে। তাই শঙ্করবাবুকে ১০ লক্ষ টাকা দিলে সুজিতবাবুর ছেলেকে চাকরি করে দিতে পারবেন। শঙ্করবাবুর কথায় বিশ্বাস করে সুজিতবাবু ২০১৮ বিভিন্ন দফায় নগদ আট লক্ষ টাকা। এবং চেকের মাধ্যমে দুলক্ষ টাকা দেন।
ওই বিধবা বলেন, ১০ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়ে যাওয়ার পর থেকে শঙ্করবাবু আমাদের পরিবারকে এড়িয়ে যেতে শুরু করেন। তখনই সুজিতবাবুর পরিবার বুঝে নেয় চাকরি হবে না। তখন সেই টাকা ফেরৎ চাইলে শঙ্করবাবু সুজিতবাবুদের নানা ভাবে হুমকি দিতে শুরু করেন। সূজিতবাবু ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী ছিলেন। ছেলের চাকরির জন্য শেষ সম্বল শঙ্করবাবুর হাতে তুলে দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই টাকা ফেরৎ না পেয়ে ক্রমশ মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করেন। শেষে ১৮ জানুয়ারি অ্যাসিড খেয়ে আত্মহত্যা করেন। এরই পর সুজিতবাবুর স্ত্রী গত ৬ ফেব্রুয়ারি শঙ্করবাবুর বিরুদ্ধে ঘাটাল থানায় এফআইআর করেন। এফআইআর করার পর পুলিস তদন্ত করে জানতে পারে, শেষের চেকের মাধ্যমে দেওয়া দুলক্ষ টাকা শঙ্করবাবু তাঁর জামাই অভিজিৎ মাল ওরফে রাজু মালের অ্যাকাউন্টে জমা দিয়েছিলেন। সেই ক্লু থেকে পুলিশ ৭ ফেব্রুয়ারি রাজুকে গ্রেপ্তার করে আজ ৮ ফেব্রুয়ারি ঘাটাল আদালতে তোলে। আদালত রাজুকে ৬ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেয়। পুলিস জানিয়েছে, তারা শঙ্করবাবুর তল্লাশি চালাচ্ছে। কিন্তু তিনি এলাকা থেকে পলাতক।
তৃণমূলের ঘাটাল ব্লক সভাপতি তথা ঘাটাল পঞ্চায়েত সমিতির সহকারী সভাপতি দিলীপ মাজি বলেন, আমি ঘটনাটি সোমবার রাতেই শুনেছি। শুনে খারাপ লাগলেও এনিয়ে আমি কোনও মন্তব্য করব না। তবে বলব, আমাদের দল আইনের প্রতি আস্থাশীল। তাই আইন আইনের পথে চলবে। কেউ দোষ করে থাকলে বিচার ব্যবস্থাই তার শাস্তির বিধান দেবে।