তৃপ্তি পাল কর্মকার: করোনা সংক্রমণ রুখতে লকডাউন পরিস্থিতিতে বাড়িতে বাইরের মানুষের আনাগোনা করাতে কেউই চান না। তাই বুদ্ধপূর্ণিমা তিথিতে পরিবারে দীর্ঘদিন থেকে হয়ে আসা সত্যানারায়ণের পুজো সারা হল ভিডিও কলের মাধ্যমে। বৃহস্পতিবার এই পদ্ধতিতেই সত্যনারায়ণ পুজো সারলেন ঘাটাল শহরের কোন্নগরের বাসিন্দা চিকিৎসক সুনীল পাল। তিনি বলেন, প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে ভিডিও কলের মাধ্যমে পুরোহিত পুজোর মন্ত্র বলেছেন, কীকী করতে হবে তা জানিয়েছেন। সেই মতোই পুজো সম্পন্ন হয়েছে।
প্রত্যেক বছর বুদ্ধ পূর্ণিমা তিথিতে সুনীলবাবুর বাড়িতে সত্যনারায়ণ পুজো হয়। আর ওই পুজো করেন পারিবারিক ব্রাহ্মণ ঘাটাল ব্লকের গোপমহলের অজিত বন্দ্যোপাধ্যায়। গোপমহল থেকে ঘাটালের দূরত্ব প্রায় সাত কিলোমিটার। সুনীলবাবুর স্ত্রী মৃদুলাদেবী বলেন, এমনিতেই লকডাউন চলছে। তার ওপর কয়েক দিন আগে আমাদের কোন্নগরেরই এক অ্যাম্বুল্যান্স চালকের করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে। তাই আমরা কার্যত গৃহবন্দিই। আমরা গৃহবন্দি হলেও বাড়ির পুজো তো আর বন্ধ করে রাখা যায় না। কিন্তু পুজো কী করে করব তা নিয়েই চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম। হঠাতই আমার স্বামীই ব্রাহ্মণকে ভিডিও কলের মাধ্যমে মন্ত্র বলার প্রস্তাব দেন।
অজিতবাবুর বর্তমান বয়স ৭৪ বছরের আসেপাশে। এই ডিজিটাল পদ্ধতিতে পুজো করার ব্যাপারটিতে বৃদ্ধ ব্রাহ্মণের সায় ছিল না। তিনি বলেন, মন থেকে ইচ্ছে না থাকলেও সুনীলবাবুদের প্রস্তাবে রাজি হই। আমার নিজের কোনও স্মার্ট ফোন নেই। তাই বৌমা পাপিয়া বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্মার্ট ফোনে প্রথমে পুজোর নিয়ম বলি। তারপর পর্যায় ক্রমে মন্ত্র বলে পুজো সারি। অন্যদিকে সুনীলবাবুরা ব্রাহ্মণের নির্দেশ মতো একের পর এক পুজো এবং আচার সারেন।
এই পদ্ধতিতে এর আগে কোনও পুজো না করলেও এদিনের অভিজ্ঞতা অজিতবাবুর মন্দ লাগেনি বলে তিনি জানান। সুনীলবাবুও বলেন, ব্রাহ্মণের মন্ত্রেই আমাদের পারিবারিক পুজো হয়েছে এতেই আমরা ষোল আনা পরিতৃপ্তি পেয়েছি।