লকডাউনের শক্ত জাল ছিঁড়েই সুদূর মহারাষ্ট্র থেকে ঘাটালের নিজের গ্রামে এলেন পেশায় স্বর্ণ শিল্পী। কিন্তু তার পর? বাড়িতে ঢুকতে পারলেন তো?
মার্চ ২০২০ হঠাৎই দেশে করোনার থাবা,তার জেরে দেশের প্রত্যেকটি রাজ্যে লাগু লকডাউন! বন্ধ বাস,ট্রেন,বিমান সমস্ত পরিসেবাই। কর্মসূত্রে ঘাটাল ছাড়িয়ে ভিন রাজ্য ও দেশে আটকে পড়েছেন বহু ঘাটালবাসী। রীতিমতো মাথা খাটিয়ে পরিস্থিতির সাথে যুদ্ধ করে সুদূর মহারাষ্ট্র থেকে আজ ৭ এপ্রিল মঙ্গলবার ঘাটালের শীতলপুরের নিজের গ্রামে পৌঁছলেন এক স্বর্ণ শিল্পী।
মহারাষ্ট্রের জলগাঁওতে লকডাউনে আটকে পড়া ওই ব্যক্তি মরিয়া ছিলেন বাড়ি ফিরতে। লকডাউনের মাঝেই প্রশাসন আইনের চোখে ধুলো দিয়েই নিজের কর্ম স্থল থেকে আগের সপ্তাহেই বেরিয়ে পড়েন তিনি। হেঁটে কখনো মালবাহী লরির মাথায় চেপে কখনও বা সব্জী গাড়ির সব্জীর বস্তার উপর বসে এক প্রকার না খাওয়া দাওয়া করেই সোজা ঘাটালের শীতল পুর গ্রামে।
কিন্তু গ্রামে ফিরলেও ঘরে ফেরা হল না তাঁর। গ্রামে নিজেদের দায়িত্বে তৎপর স্থানীয় ভিলেজ পুলিস,সিভিক,ভি আর পি এবং আশা দিদিদের সাথে পাড়া প্রতিবেশী। ভিন রাজ্য থেকে ওই ব্যক্তির ঘরে ঢোকার আগেই বাড়ির দরজা আটকে সিভিক,ভি আর পি আশা দিদিরা,মুহূর্তে হাজির মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ থেকে পাঠানো বিশেষ অ্যাম্বুলেন্স। বাড়ির সামনে পৌঁছতেই সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ ওই স্বর্ণ শিল্পীকে অ্যাম্বুলেন্সে তুলে সোজা পাঠানো হয় মেদিনীপুর। জানা গেছে সেখানেই তাঁর প্রাথমিক পরীক্ষা হবে এবং রাখা হবে ১৪ দিন কোয়ারেনটাইনে।
প্রশ্ন? আদৌ কি ওই ব্যক্তি নিজের পরিবারকে ভালোবাসেন? তাঁর শরীরে করোনার ভাইরাস তো বাসা বেঁধে থাকতেও পারে! পরীক্ষার রিপোর্ট যাই হোক ঘাটালবাসীর দাবি তিনি একেবারেই অবিবেচকের মতো কাজ করেছেন। তিনি তাঁর কর্মস্থলেই থাকতে পারতেন। বাড়িতে এসে তিনি পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরও সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াতেন,যদি না স্থানীয় ভি আর পি সিভিক আশা দিদিরা খবর পেয়ে ওনার পৌঁছানোর আগে ওনার বাড়ি না পৌঁছাতে পারতেন।
যে যেখানে আছেন সেখানেই থাকুন,আইনের চোখে ধুলো দিলে সে ধুলো যে আপিনারই চোখে পড়বে তার উদাহরণ আজকের এই ঘটনাই।