করোনার জেরে লকডাউনে ১০ ফুট বাই ১০ ফুট রুমে গাদাগাদি করে থাকা পরিযায়ী শ্রমিকরা ক্ষোভে ফুঁসছেন। অনাহারে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত সারা বাংলার সাথে ঘাটালের পরিযায়ী শ্রমিকরাও বাংলার মসনদ থেকে তৃণমূলকে হটিয়ে দেবার হুঙ্কার দিচ্ছেন।
সোশ্যাল মিডিয়াজুড়ে সেইসব ভিডিওই এখন ভাইরাল। কেউ বলছেন ঘাসফুল পুড়ে ছাইয়ের কথা কেউ বা ঘাটালের সাংসদ দেবকে সরাসরি আক্রমণ করেছেন। কিন্তু পরিযায়ী শ্রমিকরা চটলেন কেন? পরিযায়ী শ্রমিকদের বেশিরভাগ অংশই স্বর্ণশিল্পী। আর এই স্বর্ণ শিল্পীরাই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ঘাটাল এলাকার সার্বিক উন্নতির ভিত্তি।
এঁদের মাধ্যমে ভিনরাজ্যের অর্থ আসে আমাদের রাজ্য সাথে আমাদের ঘাটালে। আয় বেশি বলে এঁরা দাম দিয়ে জিনিস কিনতে পিছপা হননা। সাথে পাড়া গ্রাম সর্বপরি ঘাটাল মহকুমার বড় পকেট এই স্বর্ণ শিল্পী। বাড়ির পুজো থেকে পার্টির সম্মেলন সবেতেই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে এদেরও আর্থিক সাহায্য থাকেই।
সেই শিল্পীরাই জানাচ্ছেন,করোনায় লকডাউনে চরম দুর্দশায় আছেন তাঁরা।
দীর্ঘ লকডাউনের জেরে অধিকাংশ পরিযায়ী শ্রমিকদের খাদ্য এবং টাকা দুইই ফুরিয়েছে। বাড়ি ফেরার জন্য দিনরাত টিভি ও মোবাইলে চোখ,এই বুঝি বাড়ি ফেরার ট্রেনের ঘোষণা হল।
অভিযোগ দেশের সব রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকরা বাড়ি ফিরতে শুরু করলেও এখনও বাংলার তরফে বাড়ি ফেরার সেভাবে কোনো উদ্যোগই নেননি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। ঘাটালের সাংসদ এবং ঘাটাল দাসপুর চন্দ্রকোণার বিধায়করা তাঁদের ফোন পর্যন্ত তুলছেন না।
তবে সাংসদ দেব এই অভিযোগ পুরোপুরি মানতে নারাজ,এমনই জানিয়েছেন সাংসদ প্রতিনিধি রামপদ মান্না। তিনি জানান, ইতিমধ্যেই বাংলার মোট কত স্বর্ণশিল্পী রাজ্যের বাইরে আছেন এবং কোন রাজ্যে কতজন আছেন তার একটি তালিকা স্বর্ণ শিল্পীদের সংগঠনগুলি থেকে চাওয়া হয়েছে। সেই তালিকা হাতে এসে পৌঁছলেই দ্রুত বিভিন্ন রাজ্য থেকে ট্রেনের ব্যবস্থা হবে।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি জানিয়েছেন,ট্রেনের জন্য অপেক্ষা না করতে চাইলে ব্যক্তিগত ভাবে পরিযায়ী শ্রমিকরা গাড়িভাড়া করে স্থানীয় প্রশাসনের দেওয়া পাশ নিয়ে রাজ্যের বর্ডার পর্যন্ত পৌঁছে গেলে দল তাঁদের রাজ্যে প্রবেশের অনুমতি পাইয়ে দেবে। সর্বপরি শুক্রবারই তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সাথে সরাসরি কথা বলেছেন,মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন প্রত্যেককে স্ক্রিনিং করেই রাজ্যে ঢোকাতে হবে,হুড়োহুড়ি করা যাবে না।