তৃপ্তি পাল কর্মকার: এই করোনা আবহে ঘাটাল মহকুমায় কোনও মেলা চাইছেন না এক শ্রেণীর মানুষ। সমস্ত রকম মেলা বন্ধ করার জন্য তাঁরা প্রশাসনের সমস্ত স্তরের পাশাপাশি জন প্রতিনিধি এবং মেলা কমিটিকে লিখিত আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাতেও কোনও কাজ হয়নি। তাই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার অন্যতম বড় মেলা ‘ঘাটাল উৎসব ও শিশুমেলাকে’ বন্ধ রাখার জন্য কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হল। ১৮ ডিসেম্বর ২০২০ ওই মেলা কমিটির স্মরণিকা সম্পাদক দিবাকর সী, কুশপাতা ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা শান্তি দত্ত কর্মকার সহও ঘাটাল শহরের বেশ কয়েক জন বাসিন্দা ওই মামলা দায়ের করেছেন। দিবাকরবাবু বলেন, আমরাও জানি ঘাটাল মহকুমা ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকার কয়েক লক্ষ মানুষ ওই মেলাটির জন্য সারা বছর প্রতীক্ষায় থাকেন। কিন্তু এই করোনা আবহে এখনও পর্যন্ত স্কুল-কলেজ খুলেনি। মেলা হলেই শিশু ও কিশোর-কিশোরী, যুবক-যুবতীদের ভিড় বেশি হবে। ফলে করোনা সংক্রমণের সম্ভাবনাও বাড়বে। তাই এবছর আমরা মেলাটি কোনও ভাবেই করতে চাইছি না। কিন্তু মেলার অন্যান্য উদ্যোক্তারা মেলা করার জন্য নানা রকম প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছেন। সেজন্যই বাধ্য হয়ে আদালতের স্মরণাপন্ন হতে হল। মেলার কার্যকরি সম্পাদক তথা ঘাটালে বিধায়ক শঙ্কর দোলই বলেন, মেলার জন্য একটি বর্ধিত সভা ডাকা হয়েছিল। সেখানে সবাই মেলা করার পক্ষে সওয়াল করেছেন। তাই মেলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। আমি একা নিজে থেকে মেলা করছি না।
তবে ঘাটাল মহকুমার এক শ্রেণীর মানুষের অভিযোগ, মেলা করার পেছনে বিশেষ উদ্দেশ্য থাকে। সেই কারণে মেলা বন্ধ করা হচ্ছে না। করোনা আবহেও সংস্কৃতি বা ঐতিহ্যকে ধরে রাখার বিষয়টি কোনও ইস্যুই নয়।
প্রসঙ্গত, ঘাটাল মহকুমার সব চাইতে বড় মেলা ‘ঘাটাল উৎসব ও শিশু মেলা’ এবং তার পরেই রয়েছে বীরসিংহের ‘বিদ্যাসাগর মেলা’। এর আগেই ওই দু’টি মেলাও সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রাখার জন্য আবেদন রাখা হয়েছে। আবেদনকারীদের যুক্তি, মেলা হলেই প্রত্যাশিতভাবে প্রচুর মানুষের ভিড় জমবে। তার ফলে করোনা সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। আর কোনও ভাবে যদি একটা বছর মেলা বন্ধ রাখা হয় তাহলে কোনও রকম সমস্যা হবে না। মানুষের স্বাস্থ্য ও জীবনের স্বার্থে এই সিন্ধান্ত নেওয়া যেতেই পারে।