তৃপ্তি পাল কর্মকার: ঘাটাল-পাঁশকুড়া সড়ক সংস্কারের কাজ ডিসেম্বর থেকেই শুরু হচ্ছে, রাজ্যের শাসক দলের পক্ষ থেকে এরকমই আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে। পূর্ত দপ্তর সূত্রে জানানো হয়েছে, নভেম্বর মাসের তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ করে দেওয়া হবে। ডিসেম্বর মাসের শুরুতেই মেচোগ্রাম থেকে ঘাটাল বিবেকানন্দ মোড় পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু হয়ে যাবে।
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় সরকারের ট্রান্সপোর্ট ও হাইওয়ে মন্ত্রকের অ্যাসিস্ট্যান্ট এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার (জোন-৫) হরিশ জাখর ১ অক্টোবর রাজ্যের অন্যান্য ছ’টি রাস্তার সঙ্গে ঘাটাল-মেচোগ্রাম রাস্তা সংস্কারের জন্য টাকা বরাদ্দ করেছেন। ঘাটাল শহরের বিবেকানন্দ মোড় থেকে মেচোগ্রাম পর্যন্ত ওই ৩১ কিলোমিটার ৭৫০ মিটার রাস্তার জন্য ১৬৬ কোটি ৮৮লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের সেন্ট্রাল রোড ইনফ্রাসট্রাকচার ফান্ড (সি.আর.ই.এফ) থেকে এই রাস্তা সংস্কারের টাকা দেওয়া হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকারের এই পর্যায়ে সিআরইএফ থেকে এই বাজ্যে মোটে যে সাতটি রাস্তার জন্য টাকা বরাদ্দ করেছে তার মধ্যে এই রাস্তাটির জন্য সবচাইতে বেশি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। দ্বিতীয়স্থানে রয়েছে কলকাতা বাসন্তী রাস্তাটি। সেখানে প্রায় ২৯ কিলোমিটার রাস্তার জন্য প্রায় ১২৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। যদিও ঘাটালের বিধায়ক শঙ্কর দোলই বলেন, রাস্তার জন্য বরাদ্দ এই টাকা প্রকারন্তে এই রাজ্য সরকারেরই। সিআরইএফ থেকে যে টাকা দেওয়া হয় তা আমাদের রাজ্যের টোল ট্যাক্স থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। সেই টাকাই ওই ফান্ডের মাধ্যমে আমাদের এখানে রাস্তা করার জন্য দেওয়া হচ্ছে।
ঘাটাল শহরে রাস্তার দু’দিক দখল মুক্ত হবে
•ওই রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু করার আগেই ঘাটাল ব্রিজ থেকে কুশপাতা পর্যন্ত রাস্তার দু’দিকের সমস্ত অবৈধ দখলকারীদের সরিয়ে দেওয়া কাজ শুরু করা হবে বলে পূর্ত দপ্তর সূত্রে জানানো হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, নতুন রাস্তাটি তৈরির জন্য বর্তমান রাস্তার মাঝখান থেকে দু’দিকে মোট ৩৩ ফুট করে (মোট ৬৬ ফুট) নেওয়া হতে পারে।
মূল রাস্তাটি মোট ১০ মিটার চওড়া করা হবে। তার পর হেঁটে বা সাইকেলে যাওয়ার জন্য থাকবে মোরাম রাস্তা। রাস্তাটির জন্য এতো টাকা বরাদ্দ হলেও খুকুড়দহ, গৌরা এবং ঘাটালে শিলাবতী নদীর উপর এই মুহূর্তেই কোনও নতুন ব্রিজ তৈরি করা হচ্ছে না। পুরানো ব্রিজগুলি ওই অবস্থাতেই থাকবে। শঙ্করবাবু বলেন, এই মুহূর্তে ওই তিনটি ব্রিজ তৈরি করতে হলে রাস্তার জন্য আরও অতিরিক্ত ৫০-৬০ কোটি টাকা পড়ে যেত। তখন বরাদ্দের পরিমাণটাও অনেকটা বেড়ে গেলে হয়তো এই টাকাটাও পাওয়া যেত না।
ঘাটাল থেকে মেচোগ্রাম পর্যন্ত রাস্তার দু’দিকের সমস্ত বিদ্যুতের খুঁটি সরিয়ে দেওয়া হবে। নতুন রাস্তার সঙ্গেই ঘাটালের ব্রিজ থেকে কুশপাতা পর্যন্ত মূল রাস্তার দু’দিকে পাঁচ মিটার করে একটি করে পিচ রাস্তা তৈরি করা হবে। বিধায়ক বলেন, মূল রাস্তা থেকে সেগুলি রেলিং দিয়ে ঘেরা থাকবে। যে রাস্তা দিয়ে হেঁটে, সাইকেল, বাইক, টোটো, অটো এবং চার চাকার গাড়ি যাতায়াত করবে। সেটা তৈরি করতে হলে এক দিকে কলেজের মূল গেট এবং অন্য দিকে হাসপাতালের মূল গেট পর্যন্ত অতটাই চওড়া জায়গা দরকার হবে। সেজন্য নতুন রাস্তার কাজ শুরু করার আগেই ব্রিজ থেকে কুশপাতা পর্যন্ত রাস্তার দু’দিকের অবৈধ নির্মাণগুলি সরিয়ে না দিলে রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু করা সম্ভব হবে না।
পূর্ত দপ্তর জানিয়েছে, টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হলেই রাস্তার দুদিক দখল মুক্তের কাজ শুরু করা হবে। রাস্তাটি সম্পূর্ণ করতে প্রায় দেড় বছর সময় লাগবে বলে পূর্ত দপ্তর সূত্রে জানানো হয়েছে।
ঘাটাল মহকুমার সমস্ত খবর পেতে আমাদের MyGhatal মোবাইল অ্যাপ ডাউনলোড করুন [লিঙ্ক 👆] এবং ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করে রাখুন[লিঙ্ক 👆]।