নিজস্ব সংবাদদাতা, ‘স্থানীয় সংবাদ’, ঘাটাল: চোখের সামনে কভারহীন বিদ্যুতের(Uncovered power cord) তারে হুকিং করে বিদ্যুৎ চুরি করতে দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়।
[✔‘স্থানীয় সংবাদ’-এর সমস্ত কিছু জানতে এখানে ক্লিক করুন]
পুজোর পর মাত্রাটা যেন বেড়েছে। এখন যদিও ঠাণ্ডার সময়। তীব্র গরমে সিলিং এর পাখাটা(Ceiling fan) ঘুরতে ঘুরতে হঠাৎ স্লো(Slow) হয়ে যায়। তখনই পাশের বাড়ি থেকে কানে আসে এয়ার কন্ডিশনের(Air condition) শব্দ। কথা হচ্ছিল দাসপুরের নুনিয়াগোদার আদিত্য দাসের সাথে, তিনি আবার জানালেন, আশেপাশে অনেকেই হুকিং(Hooking) করে কেউ বা মিটারে কারচুপি করে বিদ্যুৎ চুরি করছেন। বিদ্যুৎ চুরি রোধে টোল ফ্রি(Toll free) নাম্বার আছে। তাতে ফোন করে জানালেই হয়। কিন্তু নাম পরিচয় জেনে গেলে আবার চাপ। দাসপুরের তাতার খাঁ গ্রামের শ্যামল পোড়িয়ার প্রশ্ন, আচ্ছা এত যে সব ঘরে ঘরে এসি লাগাচ্ছে সাবমার্সিবাল বসাচ্ছে এর জন্য বিদ্যুৎ দপ্তরের পারমিশন নিতে হয় না? দাসপুরের তাপস রায়ের আবার সাফ কথা বিদ্যুতের কাভারিং তার লাগাতে লাগাতে মাঝ রাস্তায় তো সব কাজ বন্ধ। খোলা তারে হুকিং করা অনেক সহজ। দাসপুর ২ পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি নিশিত পোড়ের দাবি, বিদ্যুতের স্মার্ট মিটার(Smart meter) সাধারণ মানুষকে অনেক চাপে ফেলতে চলেছে।
অন্যান্য জায়গার সাথে তাল মিলিয়ে তবে কি দাসপুরেও বিদ্যুতের চুরি বাড়ছে? ঘরে ঘরে এসি সাবমার্সিবাল এর জ্বালায় গ্রীষ্মের দিনগুলোতে আরও অস্বস্তি বাড়বে? আধুনিক জীবনে স্মার্ট মিটার তবে কি সত্যিই সাধারণের মিটার ডাউন করবে? আপনার পাড়ার বিদ্যুতের তারে তবে কি আর কভার চড়বে না? কী বলছে রাজ্য বিদ্যুৎ দপ্তর? আমরা কথা বলেছি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বন্টন নিগমের দাসপুর গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার(Assistant Engineer) এবং স্টেশন ম্যানেজার(Station Manager) শেখ সরিফুল ইসলাম এর সাথে। তিনিও এক প্রকার মেনে নিয়েছেন পুজোর পর পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বন্টন নিগমের(WBSEDC) দাসপুর গ্রাহক পরিষেবা এলাকায় বিদ্যুৎ চুরি বাড়ছে। স্বভাবতই উদ্বিগ্ন বিদ্যুৎ দপ্তর। তিনি বলেন, আমরা এনিয়ে নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছি। গত কয়েক দিনের মধ্যে বিদ্যুৎ চুরির জন্য পাঁচজনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। জানা গেছে, ওই গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রের অধীন প্রায় ১১০০ কিলোমিটার লো-টেনশন বিদ্যুৎ লাইন রয়েছে। এর মাধ্যমেই সরসরি গ্রাহকদের বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়। বিদ্যুৎ দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ১১০০ কিলোমিটারের মধ্যে ৫০০ কিলোমিটার ওপেন তারকে বদলে কভার তার করে দেওয়া হয়েছে। এখনও প্রায় ৬৪৩ কিলোমিটার তার খোলা অবস্থাতেই রয়েছে। অভিযানে গিয়ে দেখা গেছে ওই খোলা তারের জায়গা থেকেই বেশি বিদ্যুৎ চুরি হচ্ছে। এছাড়াও কিছু কিছু গ্রাহক মিটার থেকে কারচুপি করেও বিদ্যুৎ চুরি করছে। যদিও বিদ্যুৎ দপ্তর জানিয়েছে, আর কিছু দিনের মধ্যেই সমস্ত খোলা তার বদলে কভার তার করে দেওয়া হবে।
স্টেশন ম্যানেজারের আবেদন, সুষ্ঠু বিদ্যুৎ সরবরাহ পেতে গ্রাহকদেরও সহযোগিতা করতে হবে। বিদ্যুৎ চুরির ঘটনা জানতে পারেলে আমজনতাকেও স্বপ্রণোদিতভাবে এগিয়ে এসে আমাদেরকে জানাতে হবে। বিদ্যুৎ চুরি করলে আমাদের ১৯১২১ টোল ফ্রি নম্বরে সরাসরি জানানো যেতে পারে। সেক্ষেত্রে যিনি অভিযোগ জানাবেন তাঁর পরিচয় সম্পূর্ণ গোপন থাকবে। দপ্তরের তরফে বলা হয়, আমরা চুরি সংক্রান্ত অভিযোগ জানানোর জন্য কয়েকদিনের মধ্যে আমাদের গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রে একটি ড্রপবক্সও বসাচ্ছি। সেখানে যেকেউ বিদ্যুৎ চুরির অভিযোগ জানাতে পারেন। এক্ষেত্রেও নাম পরিচয় সম্পূর্ণ গোপন থাকবে। অন্যদিকে এদিন স্টেশন ম্যানেজার তাঁর বক্তব্যে বিদ্যুতের স্মার্ট মিটার সাথে বাড়িতে এসি বা সাবমার্সিবালের মতো উচ্চ ক্ষমতার বিদ্যুতের সরঞ্জাম বসানোর নিয়মাবলিও জানান।