দেবযানী পাত্র, স্থানীয় সংবাদ, ঘাটাল: বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ সম্পর্কে আজ শুক্রবার রামজীবনপুরের বালিকা বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হলো একটি নাটক। নাটকটির নাম “ আলো”। পশ্চিম মেদিনীপুর, মিনিস্ট্রি অফ ইয়ুথ এফেয়ার্স, গভারমেন্ট অফ ইন্ডিয়া এবং ইউএনআইসিইএফ এর যৌথ উদ্যোগে, কমিউনিটি মবিলিসেশন থ্রু মিড-মিডিয়া এক্টিভিটিস অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়েছিল। এই অনুষ্ঠানটির মূল বিষয় ছিল বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করা। যাতে সমাজের প্রতিটি শিশুই বড় হয়ে নিজেদের লক্ষ্যে পৌঁছতে পারে। আমাদের সমাজ এগিয়ে গেলেও, আমাদের হাতের মুঠোয় ইন্টারনেটের মাধ্যমে পুরো দুনিয়া থাকলেও, কুসংস্কার হয়ে এখনো শিখর ছড়িয়ে বসে আছে এই বাল্যবিবাহ। যার ফলে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে সমাজ এবং সংস্কৃতি। যেই ব্যাধি থেকে বেরিয়ে আসতে পারছেন না সমাজের একশ্রেণীর মানুষেরা। বাড়ির মেয়েরা একটু বড় হলেই বিশেষ করে বয়স যখন ১৪ থেকে ১৬র কটায় পৌঁছই তখনই বাড়ির কিছু বয়ঃজ্যেষ্ঠরা মেয়েদের জোর করেই বিয়ের পিঁড়িতে বসায়। এর ফলে হেসে খেলে বেড়ানোর বয়সে মেয়েদেরকে ধরতে হয় সংসারের হাল। অল্প বয়সে বিয়ের কারণে অপুষ্ট মা জন্ম দেয় আরও একটি অপুষ্ট বাচ্চার। মা অল্প শিক্ষিত হওয়ার কারণে সঠিকভাবে শিক্ষা দিতে পারেনা বাচ্চাদের। যার ফলে সমাজে এবং পরিবারে অত্যন্ত ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। এর ফলে মেয়েদের অল্প বয়সেই অপরিণত গর্ভধারণের সমস্যা, মানসিক সমস্যা, এবং অনেক জটিল রোগের মুখোমুখি হতে হয়। যাতে সমাজপ্রথা নামের এই কুসংস্কারটি চিরতরে মুছে ফেলা যায়, তাই এই অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত করেছিলেন জয়গুরু সেবাঞ্জলি সেবা সমিতির সদস্যরা। তাছাড়াও অনুষ্ঠানটি সঙ্গ দিয়েছিলেন শিশু সুরক্ষা সমিতি, চাইল্ড লাইন, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, এবং শিক্ষক শিক্ষিকা গণ ইত্যাদি। বিশেষ অতিথি ছিলেন চন্দ্রকোনা দুই ব্লকের ফিল্ড ফেসিলেটর সৌমি ঘোষ। প্রধান শিক্ষিকা অর্চনা মাইতি, এবং সহকারী শিক্ষিকারা আল্পনা বেরা, বীথিকা আচার্য, জয়ীতা মুখার্জি, মিতা কর্মকার প্রমুখ। বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন এই নাটকটি কিশোরীদের অল্প বয়সে বিবাহ প্রতিরোধে পাথেয় হয়ে থাকবে। এছাড়াও অনুষ্ঠানের সম্পাদক প্রশান্ত কুমার ঘোষ বলেন, অনুষ্ঠানটির মূল উদ্দেশ্য হলো সমাজের শিশু রূপী প্রতিটি কুড়ি যাতে সুন্দরভাবে প্রস্ফুটিত হতে পারে, সমাজকে এবং নিজেদেরকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে, এবং শক্ত হাতে সমাজের হাল ধরতে পারে তাই আমাদের এই ছোট্ট প্রয়াস।