মন্দিরা মাজি, স্থানীয় সংবাদ, ঘাটাল: কেক কেটে বা পার্টি করে নয়, নিজের ছেলের জন্মদিনের আনন্দ ভাগ করে নিল মঠের দৃষ্টিহীন ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে। দাসপুর-১ ব্লকের নাড়াজোলের [✔‘স্থানীয় সংবাদ’-এর সমস্ত কিছু জানতে এখানে ক্লিক করুন] এক মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে মনোজিৎ কুণ্ডু। আজ ৩১ জানুয়ারি তাঁর একমাত্র ছেলে সম্পর্ক কুণ্ডুর জন্মদিন ছিল। একটু অন্যরকম ভাবে ছেলের জন্মদিন করার ভাবনা থেকেই মনোজিৎবাবু পৌঁছে গিয়েছিলেন দাসপুর-১ ব্লকের বৈকুণ্ঠপুর নিম্বার্ক মঠে। সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী শ্বাশতী মণ্ডল কুণ্ডু ও ভাই শুভজিৎ। মনোজিৎবাবুর কথায়, বাড়িতে কেক কেটে আত্মীয় পরিজনদের নিয়ে গতানুগতিক ভাবে জন্মদিন পালন আমরা সবাই করে থাকি। কিন্তু যে ছেলেমেয়েগুলো পরিবার থেকে আলাদাভাবে সম্পূর্ণ একটি অন্য পরিবেশে রয়েছে, যারা জন্মদিনের আনন্দ সেভাবে কখনও পায় না তাদের সঙ্গে ছেলের জন্মদিন পালন করার ইচ্ছে গতবছর থেকেই ছিল। কারণ গতবছর আমার ছেলের পাঁচ বছর পূর্ণ হয়েছিল। কিন্তু পরিবারের বড়দের কথায় পাঁচ বছরের জন্মদিন বাড়িতেই পালন করতে হয়েছিল। তাই গতবছর হয়ে উঠেনি। গতবছরের সেই ইচ্ছে পূরণের জন্য এবছর ছেলেকে নিয়ে পৌঁছে গিয়েছিলাম মঠের দৃষ্টিহীন ছেলেমেয়ে ও মঠের বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিকদের কাছে।
মনোজিৎবাবু ও শ্বাশতীদেবী বলেন, কেক কেটে, মিষ্টি মুখ করিয়ে সামান্য কিছু আয়োজনে ওদের মুখে যে হাসি ফুটেছিল তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। কিন্তু জন্মদিন পালনে এই ধরনের ভাবনা কেন? তার উত্তরে মনোজিৎবাবু বলেন, আমি এক মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে। ছোট থেকে সাধারণ ভাবে জীবনযাপন করেছি এবং এখনও সেভাবেই থাকতে ভালোবাসি। তাই ছেলেকেও এখন থেকেই সেই ঘরানায় বড় করতে চাই। অহংকারের কোনও ছাপ যেন না থাকে। সবার মধ্যে থেকে, সবার সাথে যেন আনন্দ ভাগ করে নিতে পারে। তাই আজ ওকে মঠে নিয়ে গিয়েছিলাম। ইচ্ছে রয়েছে পরবর্তীতে আরও বড় করে মঠের ছেলেমেয়েদের বা সমাজে ওদের মতো যারা পিছিয়ে পড়া ছেলেমেয়েরা রয়েছে তাদের জন্য কিছু করার।
মনোজিৎবাবু চকলছিপুর প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক। তাঁর স্ত্রী একজন গৃহবধূ। মনোজিৎবাবুর এই ধরনের মানসিকতায় খুশি পরিবারের লোকজনেরাও।
Home এই মুহূর্তে বিশেষ প্রতিবেদন নিম্বার্ক মঠের দৃষ্টিহীন ছাত্রছাত্রী ও বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিকদের সঙ্গে জন্মদিন পালন করলেন মনোজিৎ...