নিজস্ব সংবাদদাতা: স্বামী কেন্দ্রীয় সরকারের মোটা মাইনের চাকরি করেন। ননদ বিধায়ক। সেই পরিবারের মহিলাকে নাকি নির্মাণকর্মীর কাজ করে সংসার চালাতে হচ্ছে! বাস্তব চিত্রটা বিপরীত হলেও দাসপুর-২ ব্লকের খেপুত দক্ষিণবাড় গ্রামপঞ্চায়েতের উত্তরবাড় গ্রামের বাসিন্দা রেশমা খাতুনের ক্ষেত্রে সরকারি তথ্য অন্তত তাই বলছে। ইতি মধ্যে তিনি রাজমিস্ত্রীর হেল্পারের ‘যন্ত্রপাতি কেনার জন্য’ দুহাজার টাকা তুলেও নিয়েছেন।
গোপীগঞ্জের বুকে ওই অভিজাত পরিবারের গৃহবধূ নির্মাণ কর্মীর বিভিন্ন প্রকল্পে নাম মাত্র সরকারি সুবিধে পাবার জন্য সরকারি খাতায় নাম লেখানোয় এলাকায় আলোড়ন তৈরি হয়েছে। কারণ, রেশমা খাতুন অত্যন্ত বিলাসবহুল জীবন যাপন করেন। অর্থনৈতিক এবং সামাজিক মান-মর্যাদার নিরিখেও ওই পরিবারকে এলাকার সকলে সমীহ করেন। রেশমা খাতুনের স্বামী শেখ সফিকুল ইসলাম সেনা বিভাগের ইঞ্জিনিয়ারিং দপ্তরের সিনিয়র কর্মী। শুধু তাই নয় রেশমা খাতুনের নিজের ননদ সেলিমা বিবি ডেবরার বিধায়ক।
ওই পরিবার তৃণমূল করেন। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সদস্য তপন দত্তের অন্ধ অনুগামী ওই পরিবার। রেশমা খাতুন বলেন, আমি গৃহবধূ। আমার স্বামীও তাঁর কাজে ব্যস্ত থাকেন। নির্মাণ কর্মীর জন্য টাকা পাওয়া যায় বলে আমার কোনও ধারণা ছিল না। এলাকার এক প্রভাবশালী নেতা আমাকে একটা কাগজ দিয়ে বলেন, এটায় সই করে দাও। কিছু করতে হবে না। ঘরে বসেই মাঝে মাঝে টাকা পাবে। সেই মতো সই করে দিয়ে দিয়েছিলাম। সেই মতো আমার বই তৈরি হয় (পুরানো বই নম্বর:সিএন-৪৪০২০০৩৬৩৩, নতুন বই নম্বর:২৪৪০২০০০৪৮৭১)। ওই বইতে টাকা ঢুকতে আমাকে খবরও দেওয়া হয়। আমি টাকাও তুলে নিয়েছি। পরে যখন জানলাম ওটা নির্মাণকর্মী হিসেবে টাকা আসছে তখনই তা বাতিল করার উদ্যোগ নিই। যদিও শ্রম দপ্তর সূত্রে জানানো হয়েছে, ওই বইটি বাতিল করার জন্য কোনও আবেদন আসেনি।
প্রসঙ্গত, রেশমা খাতুনের যিনি বই করে দিয়েছিলেন সেই প্রভাবশালী নেতা দাসপুর-২ পঞ্চায়েত সমিতির এক গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারী জনপ্রতিনিধি সহ বহু সঙ্গতিপূর্ণ পরিবারের সদস্যদের নির্মাণকর্মীর সরকারি সুবিধে পাইয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ। অথচ প্রকৃত প্রাপকরা নানাভাবে বঞ্চিত হয়েছেন। দাসপুর-২ বিডিও জানিয়েছেন, ওই ধরনের কোনও ঘটনার কথা তাঁর জানা নেই। তবে তাঁর কাছে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ এলে অসঙ্গতি সম্পন্ন সব কটি বই’ই বাতিল করে দেওয়া হবে।