দাসপুরে চাঞ্চল্য,কাঁসাই নদী থেকে উদ্ধার দৈব কাঠ,প্রায় পাঁচশো বছরের পুরানো, সত্যিই কি শিবলিঙ্গ?

সৌমেন মিশ্র, স্থানীয় সংবাদ, ঘাটাল: বর্ষা এখনও সেভাবে আসেনি, শুকনো নদী সে নদীর মাঝেই কিছু কিছু জায়গায় জল আছে।
[‘স্থানীয় সংবাদ’-এর সমস্ত কিছু জানতে এখানে ক্লিক করুন]
সে জলে নেমেই চমকে উঠলেন গ্রামবাসী। জলের মধ্য থেকে বেশ কিছুটা জায়গা জুড়ে উঠে আসছে কালো রঙের কিছু একটা। প্রায় ৩ থেকে ৪ মিনিট পর জল থেকে উঠে আসতে দেখা গেল এক উদ্ভুত বৃহদাকার কাঠ। কাঠটির সামনের দিক শিব লিঙ্গের ন্যায় পিছনের দিক চৌকা আকৃতিতে কাটা। তবে বৃহদাকার প্রায় ২০ ফুট দৈর্ঘ্যের এই কাঠ সম্পূর্ণ গোলাকৃতির। কাঠের উপরের অংশে প্রায় ২ থেকে ৩ ইঞ্চির শ্যাওলার পরত। গ্রামের বয়স্ক এবং বিশিষ্ট জনেদের দাবি, এই কাঠ সাধারণ কাঠ নয়, এর বয়স কম পক্ষে তিন থেকে চারশ বছর হবে। প্রথমে দেখে মনে হতে পারে কাঠটি চড়কের কাঠ কিন্তু গঠন এবং এই কাঠের যে বিন্যাস সাথে মুখের দিকে যে সম দূরত্বে ৩ ধরনের গর্ত তা দেখে মনে হবে কাঠটি চড়ক কাঠ নয়। তবে গ্রামবাসীরা একমত এই বিশেষ কাঠটি মন্দিরে ব্যবহৃত কোনও দৈব কাঠ হবে। গ্রামের কয়েকজনের দাবি কাঠটি প্রাচীন শিব লিঙ্গ। তাই কাঠের সামনের অংশ এবং গঠন লিঙ্গের মতই। ইতি মধ্যেই এই কাঠে মহিলাদের স্পর্শ করতে মানা করা হয়েছে। ঘটনা দাসপুর থানার সামাট গ্রামের। আজ রবিবারের সকালে সামাট গ্রামে কয়েক’শ বছরের প্রাচীন শিব শীতলা ও কালী মন্দিরের যে পীঠস্থান তার পাশেই কাঁসাই নদীর মাঝেই দক্ষিণে নদীর যে অংশ কালীর “দ” নামে পরিচিত সেই অংশেই স্নানে নেমে গ্রামবাসীদের নজরে আসে এই বিষয়টি। বেলা বাড়ার সাথে সাথে সে খবর সারা এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। শতাধিক মানুষের চেষ্টায় বেলা প্রায় সাড়ে ১২টা নাগাদ ওই বিশেষ কাঠটিকে নদী থেকে শিব মন্দির সংলগ্ন এলাকায় তোলা সম্ভব হয়। গ্রামবাসীরা জানাচ্ছেন, সাধারণ মানুষের দর্শনের জন্য আপাতত এই বিশেষ দৈব কাঠ মন্দির প্রাঙ্গণে রাখা থাকছে। অন্যদিকে এই বিশেষ পুরাতন কাঠ দেখে অবাক দাসপুরের সাহিত্য সংস্কৃতি নিয়ে যিনি নিরন্তর গবেষণা করে চলেছেন অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক উমাশঙ্কর নিয়োগী। তিনি বলেন, এই কাঠ প্রাচীন শিব লিঙ্গের মতো লাগছে। কিন্তু এতো দীর্ঘ শিবলিঙ্গ এ হয় না। অন্যদিকে পুকুরের মাঝে যে জাঠ পোঁতা থাকে তার মতো লাগলেও জাঠের দৈর্ঘ্য সাধারণত পুকুর মালিকের উচ্চতার দেড় থেকে ২ গুণ হয়। সেক্ষেত্রে তা ৮ থেকে ৯ ফুটের মধ্যে থাকলে তা মানা যেত। তিনি আবেদন রেখেছেন এই প্রাচীন কাঠ প্রশাসনের তরফে অধিগ্রহণ করে পুরাতাত্ত্বিক টিম এনে গবেষণা করা হোক। কারণ দাসপুরের এই সামাট গ্রামের ঐতিহাসিক গুরুত্ব যথেষ্ট। এই নদীতেই কয়েক বছর আগে প্রাচীন এক নৌকার দেখা মিলেছিল।

 

ঘাটাল মহকুমার সমস্ত আপডেট তে যুক্ত হন আমাদের সাথে!