মন্দিরা মাজি, স্থানীয় সংবাদ, ঘাটাল: নিজেরাই নিজেদের বিয়ে রুখে দিয়েছিল, অসীম সাহসিকতার জন্য জেলা শাসকের কাছ থেকে [✔‘স্থানীয় সংবাদ’-এর সমস্ত কিছু জানতে এখানে ক্লিক করুন] সংবর্ধিত হল তিন নাবালিকা। জেলার মধ্যে এমন তিনজন নাবালিকাকে নিজে হাতে সংবর্ধনা দিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা শাসক খুরশিদ আলি কাদরি। ওই ছাত্রীদের নাম শ্রাবণী পাত্র, বিলকিস খাতুন ও বাসন্তী টুডু। যার মধ্যে শ্রাবণী পাত্র ও বিলকিস খাতুন ঘাটাল মহকুমার চন্দ্রকোণার দুই ছাত্রী। বাসন্তী টুডুর বাড়ি শালবনীতে।
পড়াশোনা করতে চাই, অল্প বয়সে বিয়ে করতে চাই না। কিন্তু বাড়ি থেকে জোর করে বিয়ের ব্যবস্থা করেছে। তাই নিজেরাই নিজেদের বিয়ে রুখে দেওয়ার উদ্যোগ নেয় এবং তাতে সফলও হয়। দুই নাবালিকার এই সাহসিকতা যথেষ্ট প্রশংসা কুড়িয়েছে প্রশাসনিক মহল থেকে সাধারণ মানুষের কাছেও। আবার এই দুই ছাত্রীকে দেখে উৎসাহিত হয়েছে অন্যান্য ছাত্রীরাও। ২৭ ফেব্রুয়ারি চন্দ্রকোণা-২ ব্লকের ভগবন্তপুর হাই স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী শ্রাবণী পাত্র গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান ইসমাইল খানের কাছে গিয়ে বিয়ে বন্ধের জন্য আর্জি জানায়। বিয়ে না করলে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যার নিদান দিয়েছিল শ্রাবণীর বাবা। কিন্তু শ্রাবণী পড়াশোনা করতে চায়। তাই বিয়ে বন্ধের আর্জি জানালে চন্দ্রকোণা-২ ব্লকের বিডিও অমিত ঘোষে’র সহায়তায় বিয়ে বন্ধ হয় নাবালিকার। পাশাপাশি শ্রাবণীর পরিবারের কাছ থেকে একটি মুচলেকা লিখিয়ে নেওয়া হয় ১৮ বছর না হলে মেয়ের বিয়ে দেওয়া যাবে না।
অন্যদিকে এই ঘটনারই মাসখানেক পর ৩০ এপ্রিল চন্দ্রকোণা-২ ব্লকের মহেশপুর গ্রামের বিলকিস খাতুনের বিয়ে ঠিক করে তার বাবা মইদুল ইসলাম খান। বিলকিস মহেশপুর এইচএসইউ হাইস্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। বছর ১৬ র বিলকিস পড়াশোনায় খুব মেধাবী। তার ইচ্ছে সে আরও পড়াশোনা করে এগিয়ে যেতে চায়। কিন্তু পরিবারের তরফে বিয়ের জন্য চাপ দেওয়া হয়। তাই সে নিজেই বিডিও’র কাছে গিয়ে বিয়ে বন্ধের আর্জি জানায়। ভিডিওর সহায়তায় তার বিয়ের রুখে দেওয়া হয়।
নিজেরাই নিজেদের বিয়ে বন্ধ করে অসীম সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে এই দুই নাবালিকা। তাই জেলা শাসক আজ ১০ মে বুধবার মেদিনীপুরে জেলাশাসকের অফিস থেকে দুই নাবালিকাকে সংবর্ধিত করেন।