সৌমেন মিশ্র, স্থানীয় সংবাদ, ঘাটাল: সাপের কামড়ে মর্মান্তিক মৃত্যু আদিবাসী কিশোরীর, চরম অসতর্কতার নজির দেখল দাসপুর। সাপের কামড়ের পরে সাথে সাথে কেন কিশোরীকে স্থানীয় হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে রাতভর চলল প্রার্থনা, ঝাড়ফুক প্রশ্ন তুলেছেন পাড়া প্রতিবেশীদের পাশাপাশি আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষজনও। অন্যদিকে বিষয়টিকে অপরাধমূলক কাজ বলে উল্লেখ করেছেন শিক্ষক ও গবেষক সুব্রত বুড়াই। ঘটনা দাসপুর থানার সামাট গ্রামের। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ৪ আগস্ট বৃহস্পতিবার রাতে বিছানার মধ্যেই কায়রা শয়ের বছর ১৩ এর মেয়ে পারুল শয়কে সাপে কামড় দেয়। ওই রাতে এক প্রতিবেশীর কথায় মেয়েটিকে সাথে সাথে হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে বাড়িতেই প্রার্থনার আয়োজন করা হয়, মেয়েকে বাঁচাতে চলে ঝাড়ফুক। অবস্থা বেগতিক দেখে আজ শুক্রবার সকালে পারুলকে নাড়াজোল গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসক। আদিবাসী জনকল্যাণ উন্নয়ন মঞ্চের তরফে রাকেশ নায়েক সমস্ত ঘটনার তীব্র বিরোধিতা করেন। তিনি ওই পরিবার ও প্রতিবেশীকে বোঝাতে গেলেও বিক্ষোভের মুখে পড়েন। তাদের বদ্ধ ধারণা সাপের কামড়ের সাথে ডাইনির আক্রমণেই এই মর্মান্তিক মৃত্যু। তবে রাকেশবাবুর সাথে ওই পাড়ার অন্যান্যরা একমত হয়েছেন যে সাপের কামড় থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় সাথে সাথে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া। বিষয়টি জেনে মর্মাহত শিক্ষক ও গবেষক সুব্রত বুড়াই। সাপের কামড় থেকে বাঁচতে বছরের পর বছর এই সুব্রতবাবু ঘাটাল মহকুমা জুড়ে প্রচার করে চলেছেন। তিনি জানান, ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক। নাবালক ওই মেয়েটিকে হাসপাতালে সময়ে না নিয়ে যাওয়া একটি অপরাধ। তিনি আরও জানান, ওই এলাকায় কয়েকদিনের মধ্যেই সাপ নিয়ে তিনি বিশেষ সচেতনতা শিবিরও করবেন।