ক্রমশ ফিকে হচ্ছে ঘাটালের শতাব্দী প্রাচীন গঙ্গা মেলা

শুভম চক্রবর্তী:আধুনিক জীবনযাত্রা গ্রাস করেছে  আনেককিছুই। তেমনই আধুনিকতার  ঠেলায় জৌলুস হারিয়ে ম্রীয়মান  ঘাটালের শিলাবতী নদীর পাড়ের  প্রায় দেড়শত বছরেরও বেশি পুরাণো পৌষ সংক্রান্তি বা মকর সংক্রান্তির মেলা। [মেলার এবছরের ভিডিও দেখতে এখানে ক্লিক করুন] একসময় ভীড়েঠাসা মহকুমা তথা পশ্চিম মেদিনীপুরের অন্যতম বৃহৎ বাঁশ-বেত ও লোহার জিনিসের মেলাটি বর্তমানে প্রায় জনশূন্য। বছরের পর বছর ধরে চলে আসা ঘাটাল শহরের শিলাবতী নদীর পশ্চিম পাড়ে পৌষ সংক্রান্তির দিন গঙ্গা পুজোকে কেন্দ্র করে আয়োজিত এই মেলার সাথে জড়িয়ে আছে ঘাটাল বাসির আবেগ। বছরভর অপেক্ষা থাকে গৃহস্থালির কাজে প্রয়োজনীয় লোহা আর বেত ও বাঁশের তৈরি সংগ্রহের জন্য। ভোর-ভোর শিলাবতীর জলে স্নান সেরে গঙ্গাদেবীকে পুজো দেওয়ার জন্য পূণ্যার্থীদের ভিড়ের কোলাহলে জমজমাট হয়ে থাকত ঘাটাল শহর। হঠাৎ করেই কয়েক বছর ধরে সেই ভিড়ে বেজায় ভাটা। একই সাথে কমেছে মেলায় নিজ-নিজ জিনিসের পসরা নিয়ে হাজির হওয়া শাঁখারী, কামারদের সংখ্যাও। ঘাটাল পৌরসভার বর্তমান প্রশাসক বিভাস ঘোষ বলেন পৌরসভার জন্মলগ্নের আগে থেকেই এই মেলাটি হয়ে আসছে পরবর্তীকালে পৌরসভা সহযোগিতা করে এবং পৌরসভার কর্মীরা উদ্যোগ নিয়ে এই মেলাটি পরিচালনা করে এই মেলায় বিশেষত্ব হল এখানে দূরদূরান্ত থেকে বাঁশ ও বেতের জিনিসের পসরা নিয়ে হাজির হন বিক্রেতারা। তবে বর্তমান দিনে প্লাস্টিক,নাইলন সহ বিভিন্ন রকম গৃহস্থালির জিনিস  ক্রমশ গ্রাস করেছে বেত ও বাঁশের তৈরি দ্রব্যের বাজার। ফলে এইসব জিনিসের বিক্রেতারা সংখ্যা ও কমেছে।তবে এ বছর করোনার  জন্য অনেকেই মেলাটি এড়িয়ে গেছেন।
মেলায় আগত এক ক্রেতা নেপাল চক্রবর্তী বলেন, ছোটবেলা থেকেই আমরা এই মেলায় আসছি। শিলাবতীতে স্নান করে পুজো দিয়ে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনাকাটা করি। বাজারের থাকে বেশ সস্তায় লোহার আর বাঁশের তৈরি জিনিসগুলো পাওয়া যায়।
কিছু বছর আগে পর্যন্ত শাঁখারী পাড়া থেকে শাঁখের জিনিসের পসরা নিয়ে হাজির হতেন বিক্রেতারা থাকতো শিংয়ের তৈরি বিভিন্ন সৌখিনদ্রব্য গ্রামবাসীরা নিজের হাতে তৈরি করতেন। গ্রামীণ ঐতিহ্য এতদিন ধরে বহন করে চলা ঘাটালের এই একদিনের পৌষ মেলা আর কতদিন স্বমহিমায় টিকে থাকবে তা আজ সত্যিই প্রশ্নের মুখে।

ঘাটাল মহকুমার সমস্ত আপডেট তে যুক্ত হন আমাদের সাথে!