তৃপ্তি পাল কর্মকার: আবার দেখা গেল ঘাটালের মহকুমা শাসক অসীম পালের মানবিক দিক।
দৃশ্য এক: লকডাউন পরিস্থিতিতে অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছিলেন দাসপুর-১ ব্লকের খাটবাড়ুই গ্রামের ১০৩ বছর বয়সী কালীপদ প্রামাণিক। তাঁর বর্তমান অবস্থার কথা শুনে ত্রাণ নিয়ে এগিয়ে গেলেন ঘাটালের মহকুমা শাসক অসীম পাল। মহকুমা শাসক আজ কালীপদবাবুর বাড়িতে গিয়ে চাল-ডাল-তেল সহ বেশকিছু খাদ্য সামগ্রী দিয়ে এলেন। ওই খাদ্য সামগ্রী পেয়ে আপ্লুত ওই বৃদ্ধ।
কালীপদবাবুর বাপ-বেটির সংসার। স্ত্রী মেনকা প্রামাণিক মারা গিয়েছেন ৩০ বছর হল। মেনকাদেবী-কালীপদবাবুর সাত সন্তান। চার মেয়ে, তিন ছেলে। এক মেয়ে ও এক ছেলে ইতি মধ্যেই মারা গিয়েছেন। বর্তমানে এক মেয়ে সাবিত্রী হাজরা বাবার দেখাশোনা করেন। বাকি ছেলেমেয়েরা কেউ সেভাবে বাবার দায়িত্ব নিতে চাননি। কৃষক কালীপদবাবুর টুকটাক সামান্য জমিজমা রয়েছে। তাতে করে বাবা-মেয়ের কোনমতেই চলে না। আজ পর্যন্ত মেলেনি কোনও সরকারি সাহায্য। বার্ধক্য ভাতা পর্যন্ত মেলেনি। সে নিয়ে সরকারের প্রতি ক্ষোভ, অভিমান দুটোই রয়েছে বাবা-মেয়ের। সাবিত্রীদেবী বলেন, সরকার মানুষকে কত কিছু দিচ্ছে। আমরা কেন পাচ্ছি না, জানি না। অথচ কী করুণ পরিস্থিতির মধ্যে কাটাতে হচ্ছে আমাদের। বর্তমানে বাবার বয়সের উপযোগী কোনও খাবার দিতে পারি না। সামান্য ডাল ভাতের সংস্থান করতেই বড্ড কষ্ট পেতে হয়। সেখানে একটুখানি ভালোমন্দ ধরাছোঁয়ার বাইরে, অলীক গল্পের মতো। তাই দেশ জুড়ে লকডাউন পরিস্থিতিতে জেরবার ওই বাপ-মেয়ের পরিবার। আর ওই খবর পেয়েই মহকুমা শাসক কালীপদবাবুর বাড়িতে ছুটে গেলেন ত্রাণ নিয়ে।
চিত্র দুই: প্রায় পাঁচ দশক আগে দাসপুর থানা এলাকার চন্দ্রেশ্বর খাল কাটতে এসেছিলেন ঝাড়গ্রাম এলাকার কিছু লোধা সম্প্রদায়। সেই থেকেই রয়ে গিয়েছেন দাসপুর-২ ব্লকের গোপীগঞ্জে রয়ে গিয়েছেন। কিন্তু পাননি কোনও সরকারি সুযোগ সুবিধে। হয়নি জাতিগত শংসাপত্র। অনিশ্চিত ভবিষ্যেতের মধ্যে রয়েছেন ওই পরিবারগুলি। সেখানেও আজ ছুটে গেলেন মহকুমা শাসক। পরিবারগুলির হাতে তুলে দেন ত্রাণ সামগ্রী।
ঘাটালে এর আগেও অনেক মহকুমা শাসক এসেছিলেন। কিন্তু ব্যতিক্রম অসীমবাবু। এত মানবিক মহকুমা শাসক কখনই দেখা যায়নি। প্রতিটি পদক্ষেপেই তাঁর মানবিক অনুভূতির ছোঁয়া।
Home এই মুহূর্তে বিশেষ প্রতিবেদন মেলেনি বার্ধক্য ভাতা, ১০৩ বছরের বৃদ্ধের কাছে খাদ্যসামগ্রী নিয়ে পৌঁছে গেলেন এসডিও