৬ এপ্রিল,ঘাটাল:রাজ্য জুড়ে শিক্ষকদের ভোটের ট্রেনিং এ গিয়ে ট্রেনিং বয়কট এবং বিক্ষোভের ঝড় এবার আছড়ে পড়ল ঘাটাল মহকুমায়ও। শনিবার ছিল অন্যান্য সরকারি কর্মীদের সাথে মহকুমার শিক্ষক শিক্ষিকাদের প্রথম পর্যায়ের নির্বাচনী প্রশিক্ষণ। ঘাটাল বসন্তকুমারী উচ্চবিদ্যালয়ে এ বি টি এ এর পক্ষ থেকে শিক্ষকরা গায়ে পোস্টার লাগিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করলেন। তাঁদের গায়ে সাঁটানো পোস্টারে লেখা,আমি রাজকুমার রায় হতে চাই না,নিরাপত্তা চাই প্রতি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী চাই। উল্লেখ্য,গত বছর ১৪ মে পঞ্চায়েত নির্বাচনের ভোটগ্রহণে প্রিসাইডিং অফিসারের দায়িত্ব নিয়ে ইটাহারের লক্ষ্মীপুর প্রাথমিক স্কুলে ৪৮ নম্বর বুথে কাজে যোগ দিয়েছিলেন রায়গঞ্জের বাসিন্দা রহতপুর হাই মাদ্রাসার শিক্ষক রাজকুমার রায়। ভোটের দিনই ভোট চলাকালীন সন্ধ্যায় রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হন তিনি। পর দিন ১৫ মে সন্ধ্যায় রায়গঞ্জের সোনাডাঙি এলাকায় রেল লাইনের ধারে রাজকুমার রায়ের ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়। রাধিকাপুর এক্সপ্রেসের চালক নক ডাউন মেমো দেন রায়গঞ্জ স্টেশনে।
এই ঘটনায় সারা রাজ্যের শিক্ষক ভোটকর্মীরা প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছেন। নিজেরদের নিরাপত্তার দাবিতে ভোট ঘোষণার অনেক আগে থেকেই শিক্ষকদের বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি রাখা হয়েছিল এবার নির্বাচনে প্রতিটি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে তাঁদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন থেকে জানানো হয়েছে রাজ্যের সব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকছে না। এর জেরেই উত্তর দিনাজপুর থেকে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল সর্বত্র ভোটকর্মীদের বিক্ষোভের চিত্রটা একই।
ঘাটাল মহকুমার এবিটিএ এর শিক্ষক নেতা লছিপুর হাইস্কুলের শিক্ষক সৌরভ চক্রবর্তী বলেন,আমারা যেহেতু সরকারি কর্মী তাই সংবিধান বলে আমরা দেশের নির্বাচনের কাজে যুক্ত থাকতে বাধ্য। কিন্তু আমাদের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা চিন্তিত! গত নির্বাচনে নৃশংসভাবে আমাদেরই এক সহকর্মীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হল! অনাথ হল তাঁর ছেলে মেয়ে পরিবার! আমরা চাইনা আমাদের সাথেও এমন হোক। আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা লিখিতভাবে আমাদের মহকুমা শাসক তথা এবার নির্বাচনে আমাদের এ ই আর ও অসীম পালের কাছে তাঁরা লিখিতভাবে আমাদের দাবি গুলি জানিয়েছি। অসীম বাবু জানিয়েছেন,তিনি তাঁর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এর প্রতিলিপি পাঠিয়ে দেবেন।
এখন দেখার রাজনীতির ঘেরাটোপে নিজেদের কর্তব্য সঠিকভাবে পালন করতে নির্বাচন কমিশন শিক্ষকদের এই নিরাপত্তার আকূল আকুতিতে সাড়া দিয়ে নির্বাচন সংক্রান্ত ভোট কর্মীদের নিরাপত্তায় কিছু পরিবর্তন আনেন কিনা।