রাজ্য সরকারের কোপে পড়লেন এক প্রাথমিক শিক্ষক। অপরাধ, তিনি সহকর্মীদের হয়ে মাথা উঁচু করে কথা বলেছেন। সহকর্মীদের অধিকার ও দাবি নিয়ে আন্দোলন করছেন। সেজন্যই তাঁর বিরুদ্ধে ‘রাজশক্তি’ প্রয়োগ করা হল। শাস্তি হিসেবে তাঁকে কেশপুর থেকে পুরুলিয়া বদলি করে দেওয়া হল। ওই শিক্ষকের নাম চিরঞ্জীব বিশুই।
৯ মার্চের ঘটনা। দিল্লিতে সহকর্মীদের হয়ে সওয়াল করতে গিয়ে তখনও তাঁর বাড়ি ফেরা হয়নি। ট্রেনেই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার কেশপুর চক্রের ঘোষপুর এফ পি বিদ্যালয়ের ওই সহকারী শিক্ষক। ট্রেনে বসেই বিদ্যালয় থেকে ফোনে জানতে পেরেছেন তাঁকে বদলি করা হয়েছে সুদূর পুরুলিয়া জেলার একটি বিদ্যালয়ে। বদলির খবর পেয়ে যথেষ্ট বিচলিত চিরঞ্জীব বাবু। বুঝে উঠতে পারছেন না হঠাৎ ঠিক কোন কারণে তাঁকে একেবারে জেলা ছাড়িয়ে অন্য জেলায় বদলি করা হল!
৬ তারিখ পি আর টি স্কেলের দাবি নিয়ে এ রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকদের এক অরাজনৈতিক সংগঠন উস্থি ইউনাইটেড প্রাইমারি টিচার ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়াশানের(UUPTWA)এর শিক্ষকরা দেশের রাজধানী দিল্লিতে জমায়েত করে তাদের দাবি সারা দেশের গোচরে আনে। সারা দেশের রাজনৈতিক থেকে বুদ্ধিজীবী, শিক্ষানুরাগী থেকে আইনবিদ সবাই উস্থির ডাকে শিক্ষকদের এই আন্দোলনের পক্ষেই রাজ্যের সরকারের সমালোচনা করেছেন।
শিক্ষক আন্দোলন আটকে দিতেই বদলি করা হচ্ছে উস্থির সদস্যদের,দাবি উস্থির সভাপতির
ইতি মধ্যেই UUPTWA এর রাজ্য সভাপতি সন্দীপ ঘোষ ফেসবুজের মাধ্যমে জানিয়ে ছিলেন, দিল্লিতে গিয়ে আন্দোলন রাজ্য সরকারকে বেশ চাপে ফেলেছে। এর জেরেই নাকি বেছে বেছে তাঁদের সংগঠনের শিক্ষকদেরকে অন্যত্র বদলি করা হচ্ছে। এবার সন্দীপ বাবুর যুক্তি আরও বল পেল বলেই রাজ্যের শিক্ষক মহলের ধারণা। কারণ পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রাথমিক সংসদের কেশপুর চক্রের এই প্রাথমিক শিক্ষক চিরঞ্জীব বিশুই UUPTWA এর জেলা সম্পাদক।
চিরঞ্জীব বাবু বলেন, এর আগেও গত ৫ ফেব্রুয়ারি আমাকে কেশপুর চক্রেই একটি বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়েছিল। যদিও আমাদের বিদ্যালয়ে মোট ছাত্রছাত্রী ৬৪ জন এবং শিক্ষক সংখ্যা ২। আমাদের প্রাথমিক শিক্ষায় প্রতি ৩০ জন পিছু একজন করে শিক্ষক থাকার কথা বললেও আমাকে সে নিয়মের তোয়াক্কা করে অন্য বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়েছিল।