স্যার! আমার বিয়েটা রুখে দিন! আমি পড়তে চাই! শনিবার ছুটির ঘন্টা সবে পড়েছে৷ কাঁদতে কাঁদতে প্রধান শিক্ষকের কাছে এমনি আবেদন দশম শ্রেণির ছাত্রীর৷ স্কুলের চার দেওয়ালই তাঁর কাছে প্রিয়! আর্থিক অনটনের মধ্যেও পড়া চালিয়ে আগামী বছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসতে চলেছে কুলটিকরী ক্ষীরদাময়ী উচ্চ বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণির ছাত্রী মামনি প্রামানিক৷ কিন্তু বাবা-মায়ের সামর্থ নেই মেয়ের পড়াশুনোর খরচ যোগানোর৷ তাই সুপাত্র খুঁজে মেয়ের বিয়ে দেওয়ার প্রস্তুতি চলছিল বাড়িতে৷ মামনির বাবা স্বপন প্রামানিক পেশায় রাজমিস্ত্রীর জোগাড়দার৷ স্বপনবাবুর দুই মেয়ে ও এক ছেলে৷ মাসখানেক আগে পূর্বমেদিনীপুরের গোপালনগরে এক স্বর্ণব্যবসায়ীর সাথে বিয়ের সমন্ধ করেন তাঁরা৷ বিষয়টি জানার পরেই বিয়ে না করতে চেয়ে প্রধান শিক্ষককে লিখিত দিয়ে জানান মামনি৷ ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক সমীরণ চট্টোপাধ্যায় বলেন, আজ শনিবার, স্কুল ছুটি হওয়া পরে মামনি কাঁদতে কাঁদতে স্কুলে আসে৷ অভিযোগ পেয়ে প্রশাসনের নজরে বিষয়টি নিয়ে আসি৷ বি.ডি.ও সাহেব সাথে সাথেই আমাদের স্কুলে আসেন৷ মেয়েটি ও তাঁর পরিবারের সাথে কথা বলেন৷ দাসপুর-২ বি.ডি.ও অনির্বান সাহু বলেন, ছাত্রীর বয়স মাত্র ১৫ বছর! অস্বচ্ছলতা ইস্যুকে সামনে রেখে কোন ভাবেই ১৮ বছরের নিচে মেয়েকে বিয়ে দেওয়া যাবে না৷ ওই মর্মে অভিভাবকের তরফে লিখিত নেওয়া হয়েছে৷ সরকারী প্রকল্পগুলির সুবিধাগুলি ওই পরিবার সঠিক ভাবে পাচ্ছেন কী না গ্রামের প্রধানকে তা খোঁজ নিয়ে আমাকে দ্রুত জানাতে বলেছি৷
বিয়ের পরিকল্পনা বাতিল হওয়ায় খুশি মামনিও৷ সামনে মাধ্যমিক পরীক্ষা তাই আপাতত সেই নিয়েই ব্যস্ত থাকতে চায় মামনি৷