চন্দ্রকোণা পুরসভা চরম সঙ্কটে। বিরোধী শূন্য ওই পুরসভার দলের অর্ধেক কাউন্সিলারই এখন চেয়ারম্যান অরূপ ধাড়ার বিরুদ্ধে ‘বিদ্রোহ’ ঘোষণা করেছেন। যে বিদ্রোহ অনাস্থারই নামান্তর। দলের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ‘স্বেচ্ছাচারিতার’ অভিযোগ তুলে এভাবে পুরসভা বয়কট করার ফলে অপ্রস্তুতে পড়েছে তৃণমূলও। বিষয়টি দলের জেলা সভাপতির নজরেও আনা হয়েছে। কিন্তু দু’সপ্তাহ কেটে গেলেও সমস্যার সমাধান হয়নি।
• তৃণমূল নিয়ন্ত্রিত চন্দ্রকোণা পুরসভার চেয়ারম্যানের ব্যবহারে ‘অতিষ্ঠ’ হয়ে পুরসভা কার্যত বয়কট করলেন ওই পুরসভার ছয় কাউন্সিলার। তাঁরা দু’ সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে ওই পুরসভায় ঢুকছেন না। ফলে কাউন্সিলারদের তদারকিতে কাজ করাতে গিয়ে অনেক নাগরিক সমস্যায় পড়ছেন। চন্দ্রকোণার বিধায়ক ছায়া দোলই এবং চন্দ্রকোণা-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হীরালাল ঘোষকে সঙ্গে করে নিয়ে ওই ছয় কাউন্সিলার তাঁদের অভিযোগের কথা সরাসরি দলের সভাপতি অজিত মাইতিকে দেখা করে জানিয়ে এসেছেন। ছায়া দোলই বলেন, ছজন কাউন্সিলার পুরসভায় দীর্ঘ দিন না যাওয়ার ফলে সমস্যা হচ্ছে। আমি চেয়ারম্যান এবং কাউন্সিলারদের নিয়ে ২৪ তারিখে একটি বৈঠক ডেকেছি। সেখানেই বিষয়টি মিটিয়ে দেওয়া যাবে বলে আশা রাখছি।
ওই পুরসভার মোট আসন সংখ্যা ১২। ২০১৫ সালের নির্বাচনে ১১টি তৃণমূল পায়। ২ নম্বর ওয়ার্ডটিতে নির্দল প্রার্থী গোবিন্দ দাস জয়লাভ করেন। পরে তিনিও তৃণমূলে যোগদান করেন। বিগত কয়েক মাস ধরে তৃণমূলের ১২টি কাউন্সিলারের মধ্যে গোবিন্দ দাস, রীনা কামিল্যা, অশোক পালধী, স্বাতী সিংহ, অশোক মল্লিক এবং রঞ্জিত ভাণ্ডারি ছয় কাউন্সিলারের সঙ্গে চেয়ারম্যানের বিরোধ চরম তুঙ্গে। কাউন্সিলারদের অভিযোগ, চেয়ারম্যান কাউন্সিলারদের সঙ্গে কোনও রকম আলোচনা না করেই ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে কাজ করে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলারদের হেয় প্রতিপন্ন করে চলেছেন। কাউন্সিলাররা বলেন, আমাদের ওয়ার্ডে কী কাজ হচ্ছে আমরা নিজেরাই জানতে পারছি না। যুব উৎসব এবং নেতাজি জয়ন্তীর সমস্ত কেনাকাটা চেয়ারম্যান আমাদের না জানিয়েই করে নিয়েছেন। পুরসভার নিয়োগের স্ক্রুটিনির কাজটিও চেয়ারম্যান আমাদের না জানিয়ে তিনি নিজে নিজেই করছেন। বিদ্রোহী কাউন্সিলাররা বলেন, আমাদের জনপ্রতিনিধি হওয়ার কোনও মূল্যই দেওয়া হচ্ছে না। কাউন্সিলারদের যে শংসাপত্রগুলি দেওয়ার কথা সেগুলি পর্যন্ত চেয়ারম্যান আগ বাড়িয়ে নিজে থেকে ইস্যু করে দিচ্ছেন। বিষয়টি আত্মসম্মানেও লাগছে বলে কাউন্সিলাররা জানান। তাই তাঁরা প্রথমে পুরসভা যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। চেয়ারম্যান বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলি ঠিক নয়। আমি সবাইকে মানিয়ে নিয়েই কাজ করি।