নিজস্ব সংবাদদাতা: লকডাউন পরিস্থিতেও ঘাটাল মহকুমায় সিভিল সার্ভিসের ফ্রি কোচিং থমকে নেই। অনলাইনেই দুরন্তগতিতে চলছে ওই বিসিএস পরীক্ষার ফ্রি কোচিং। গৃহবন্দি বিসিএস অ্যাস্পির্যান্টরা মুঠির মধ্যে পেয়ে যাচ্ছেন বিসিএস পরীক্ষার সমস্ত টিপস ও নোটস, এমনকি অনলাইন লেকচারও। আর তা এই মুহূর্তে সম্ভব হয়েছে ঘাটাল মহকুমা শাসকের অফিসের এক ডেপুটি ম্যাসিস্ট্রেট অজুর্ন পালের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায়। করোনা উদ্ভুত পরিস্থিতিতে প্রশাসনের কাজের মাঝেই কোচিং নেওয়া ছাত্রছাত্রীদের সমস্যা কথা ভেবে পরিস্থিতি সামাল দিতে এগিয়ে আসেন ডেপুটি ম্যাসিস্ট্রেট অর্জুনবাবু।
মূলত তাঁরই উদ্যোগে, ক্লাসের ছাত্র ছাত্রীদের জন্য অন লাইনে ভিডিও লেকচারের ব্যবস্থা করা হয়। ইউ টিউব চ্যানেলের মাধ্যমে (https://www.youtube.com/channel/UCLzR8xneDBYRKQUzv92EhyA?view_as=subscriber) বিনামূল্যে ক্লাসগুলি সম্প্রচার করা শুরু হয়েছে। সেই সাথে সাপ্তাহিক মকটেস্টও চলছে হোয়াটস্যাপ গ্রূপের মাধ্যমে। গ্রূপের মধ্যে ছাত্র-ছাত্রীরা যে সমস্ত বিষয়ে বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে সেগুলিও বুঝে নিচ্ছেন গ্রুপে উপস্থিত শিক্ষক দের থেকেই। এক কথায়, কঠোর সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেও পরীক্ষার প্রস্তুতি পুরোদমে চালিয়ে যাচ্ছেন ভবিষতের সরকারি অফিসাররা। এবিষয়ে অর্জুনবাবু বলেন, মার্চ মাস থেকে এই প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে । অনেক উদ্বিগ্ন ছাত্র ছাত্রীর প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে আমরা এই পরিকল্পনা করি। কারণ ‘দা শো মাস্ট গো অন’ । আমরা নিয়মিত পরীক্ষা এবং এভালুয়েশনের ব্যবস্থাও করেছি। আর সবকিছুই অন লাইনে ছাত্রছাত্রীরা ঘরে বসেই দেখতে পারবে।
টিনটিনস ক্লাসেস নামে পরিচিত এই ইউটিউব চ্যানেলে ইতিমধ্যেই ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা পাঁচশো ছাড়িয়ে গেছে। কোনোরকম টাকাপয়সা ছাড়াই এই চ্যানেলে ভিভিও ও মকটেস্টের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীরা সিভিল পরীক্ষার প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছেন। মহকুমা শাসকের দপ্তরে পূর্বে নিয়মিত ক্লাস করা শুভম সরকার, সুইটি রায়, শ্রেষ্ঠা অধিকারীরা বলেন, এস ডি ও স্যারের এই অভূতপূর্ব সিদ্ধান্তে আমরা লক ডাউনএর সময়টা পুরোপুরি ব্যবহার করতে পারছি। এর জন্য স্যারকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমরা যাতে ভবিষ্যতে ওনার মতো অফিসার হতে পারি, তার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করবো।
প্রসঙ্গত, ঘাটাল মহকুমা প্রশাসনের উদ্যোগে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার জন্য বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হয়েছিল গত বছরেই। মহকুমার প্রায় ৮০ জন বাছাই করা গরিব এবং মেধাবী ছাত্রছাত্রীকে নিয়ে প্রশিক্ষণ শিবির শুরু করা হয়েছিল ঘাটাল মহকুমা প্রশাসনের অফিসেই। সপ্তাহে তিন দিন নিয়মিত ক্লাস নিতেন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট, বিডিও এবং উচ্চপদস্থ প্রশাসনিক কর্তারা। অন্য সব ক্ষেত্রের মতো করোনা এই উদ্যোগেও সমস্যা তৈরি করে। এই লক ডাউনের জন্য সশরীরে ক্লাস করার প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছিল। একদিকে পরীক্ষা সামনে, আর অপরদিকে এই সময়েই ক্লাস বন্ধ হয়ে গিয়ে প্রস্তুতি শিকেয় ওঠার অবস্থা। অর্জুনবাবুর উদ্যোগে ছাত্রছাত্রীরা এখন ষোলআনাই আত্মবিশ্বাসী। যোগাযোগ: 8348691732