রবীন্দ্র কর্মকার: করোনা কেড়ে নিয়েছে ক্লাবের সম্পাদককে। ক্লাব সম্পাদকের অকাল মৃত্যুতে শোকাচ্ছন্ন ক্লাবের সদস্যরা। প্রয়াত সম্পাদকের স্মৃতিতে ক্লাব সদস্যরা সপ্তাহব্যাপী সামাজিক কর্মসূচি পালন করলেন। সারা গ্রামে বিতরণ করা হল মাস্ক, এলাকায় বেশ কয়েকটি জায়গায় করা হয় স্যানিটাইজেশন। দাসপুর-১ ব্লকের গোপীনাথপুর গ্রামের স্বস্তিকা কালচারাল ক্লাবের সম্পাদক বরুণ মাইতি গত ৬ মে করোনার সাথে লড়াই করে মারা যান। বরুণবাবু কর্মসূত্রে গ্রামীণ চিকিৎসক ছিলেন। একই সঙ্গে তিনি দাসপুর-১ পি.এইচ.ই দপ্তরের পাম্প অপারেটর ছিলেন। বরুণবাবুর বাবা মোহনচন্দ্র মাইতির গ্রামীণ চিকিৎসক হিসেবে এলাকায় যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। বরুণবাবুও গ্রামীণ চিকিৎসক হিসেবে জনপ্রিয় ছিলেন। গত মে মাসে করোনা আক্রান্ত হয়ে প্রথমে ঘাটাল, তারপর মেচগ্রাম, শেষে কলকাতায় চিকিৎসা করিয়েও বাঁচানো যায়নি বরুণবাবুকে। হাজারো চেষ্টা সত্ত্বেও মাত্র ৪৩ বছর বয়সে বরুণবাবুর অকাল মৃত্যুতে এখনো গোটা গ্রাম স্তব্ধ ও শোকাচ্ছন্ন। ক্লাবের সদস্যরা বলেন, কর্মকর্তা হিসেবে দীর্ঘ ২০ বছর যাবৎ গোপীনাথপুর স্বস্তিকা কালচারাল ক্লাবের সম্পাদকের দায়িত্বে থেকে ক্লাবকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে তাঁর ভূমিকা ছিল অতুলনীয়। দীর্ঘ ১৬ বছরের ক্লাবের পক্ষ থেকে সর্বজনীন দুর্গোৎসব (গোপীনাথপুর ও কোটালপুর গ্রামসহ) পরিচালনা সবটাই ছিল বরুণবাবুর মস্তিষ্কপ্রসূত। বর্তমানে ক্লাবের নতুন পাকাগৃহ নির্মাণে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। কিন্তু বর্তমানে ক্লাবগৃহটি অর্ধসমাপ্ত অবস্থায় রয়েছে। সদাহাস্যময়, নম্র আচরণ ও তাঁর কর্মপদ্ধতি তাঁর পরিকল্পিত সমস্ত কাজকে সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে ক্লাবের সকল সদস্যদের অনুপ্রাণিত করে এসেছে। পিতা-মাতা, স্ত্রী ও দুই নাবালক পুত্র সন্তান ভাঙা হৃদয় নিয়ে কোনওরকমে আছেন। তাঁর স্মৃতির উদ্দেশ্যে ৬ জুন থেকে ১৩ জুন পর্যন্ত ক্লাবের পক্ষ থেকে করোনা মহামারীর বিরুদ্ধে এলাকার মানুষকে সচেতন করার লক্ষ্যে এলাকার পাঁচশটি পরিবারের প্রত্যেককে মাস্ক ও পরিবার পিছু একটি করে সাবান বিতরণ করা হয়। এছাড়াও ক্লাব চত্বর এবং আইসিডিএস সেন্টার, শিব ও শীতলা মন্দির প্রাঙ্গণ, প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্র চত্বর স্যানিটাইজেশন করা হয়।