নিজস্ব সংবাদদাতা: তৃণমূল বনাম তৃণমূল। দাসপুরের তৃণমূলকে পাল্লা এবং টক্কর দিচ্ছে কেশপুরের তৃণমূল। ঘটনার সূত্রপাত ঘাটালের বিধায়ক শঙ্কর দোলইয়ের মেয়ে জামাই।
রাজনগর গ্রামপঞ্চায়েতের রাজনগর ইউনিয়ন হাইস্কুলে শিক্ষকতা করেন কেশপুরের সরিষাখোলা গ্রামপঞ্চায়েত এলাকার টাবাগেড়্যা গ্রামের মলয় মাইতি। ২০১৪ সালে শংকরবাবুর মেয়ে সোনিয়ার সঙ্গে মলয়বাবুর বিয়ে হয়। মলয়বাবু বলেন, স্ত্রীর একের পর এক অন্যায় আবদার আমি মেনে নিতে পারিনি বলে আমাদের পরিবারের সাত জনের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের শেষের দিকে বধূ নির্যাতনের মামলা করা হয়।
ওই মামলার পরই মলয়বাবুর পরিবার আত্মগোপন করে থাকে। ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে তাঁদেরকে গ্রেপ্তার করলে জামিন খারিজ হয়। দু সপ্তাহের বেশি উপসংশোধনাগারে থাকার পর মলয়বাবুরা ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে জামিনে ছাড়া পান। মলয়বাবু বলেন, যেহেতু আমাকে সাসপেনশনের নোটিস দেওয়া হয়নি তাই ১৮ ফেব্রুয়ারি স্কুলে যোগদান করতে যাই।
ওই দিন মলয়বাবু স্কুলে যোগদান করতে গেলে দাসপুর-১ ব্লকের বেশ কয়েকজন তৃণমূল নেতা মলয়বাবুকে স্কুলে যোগদান করতে বাধা দেন। মলয়বাবু বলেন, সোমবার থেকে প্রতিদিন আমি স্কুলে যাচ্ছি আমাকে বাধা দিয়ে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
ওই ঘটনার পরই মলয়বাবু বিষয়টি সরিষাখোলা তৃণমূল নেতৃত্বকে বলেন। এমনিতে বাম আমলে সিপিএমের অত্যাচারে মলয়বাবুদের পরিবার দীর্ঘদিন ঘরছাড়া ছিলেন। তাই ওই এলাকার তৃণমূল নেতৃত্ব মলয়বাবুদের পরিবারের প্রতি বেশ সহানুভূতিশীল। দিলীপবাবু বলেন, রাজনগরে যা হচ্ছে শংকরবাবুর অঙ্গুলি হেলনেই হচ্ছে। তাই পাল্টা হিসেবে আমরা ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে স্কুলে স্কুলে ওই নির্দেশ দিয়ে এসেছি। ওই নির্দেশ পাওয়ার পর ঘাটাল বিধানসভা এলাকার যেসমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকা সরিষাখোলা গ্রামপঞ্চায়েত এলাকায় শিক্ষককতা করতেন তাঁরা আর ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে স্কুলে যাননি।
শুধু তাই নয় রাজনগর ইউনিয়ন হাইস্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং শিক্ষা কর্মীরা মলয়বাবুকে যোগদান করার দাবি নিয়ে ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে সিজওয়ার্ক শুরু করেছেন। ওই স্কুলের আকাদেমি কাউন্সিলের সম্পাদক মঞ্জুলেখা বেরা বলেন, আমরা ন্যায়ের পক্ষে। যতদিন না মলয়বাবুকে স্কুলে যোগদান করতে দেওয়া হবে ততদিন উচ্চমাধ্যমিকের পরীক্ষা সংক্রান্ত কাজ ছাড়া স্কুলের অন্য কোনও কাজ করব না। ক্লাসও নেব না।
দাসপুর-১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি সুকুমার পাত্র ওই স্কুলের পরিচালন কমিটির সভাপতি। আমরা মলয়বাবুর বিষয়টি শিক্ষা দপ্তরকে জানিয়েছি। ডিআই যা বলবেন, সেই মতো আমরা চলব।
মেয়ে জামাই ইস্যুকে কেন্দ্র করে কেশপুর এবং ঘাটাল বিধানসভা এলাকার রাজনৈতিক পরিবেশ ক্রমশ উত্তপ্ত হচ্ছে। কীভাবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় সেটার দিকেই প্রতীক্ষায় রয়েছেন দুই বিধানসভা এলাকার রাজনৈতিক মহল।