রবীন্দ্র কর্মকার, স্থানীয় সংবাদ, ঘাটাল: পুজোর আগে চাকরিতে নিয়োগ দেওয়ার দাবিতে মেদিনীপুর জেলা শাসকের কাছে মিছিল করে ডেপুটেশন দিলেন প্রাইমারি টেটপাস প্রার্থীরা। আজ ২৩ আগস্ট মেদিনীপুর শহরে আন্দোলনের ঢেউ তোলেন ‘২০১৪ প্রাইমারি টেটপাস প্রশিক্ষিত নট ইনক্লুডেড ক্যান্ডিডেটস একতা মঞ্চ’-র ঘাটাল, দাসপুর, চন্দ্রকোণা, সবং, পিংলা, ডেবরা সহ পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন জায়গার টেটপাস প্রার্থীরা। চাকরির দাবিতে রাজ্য জুড়ে এভাবেই জেলায় জেলায় এই কর্মসূচি হচ্ছে বলে জানান ওই মঞ্চের সভাপতি অচিন্ত্য ধাড়া।
প্রসঙ্গত, ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক পূর্বমুহূর্তে ১১ নভেম্বর, ২০২০ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্নে প্রেস কনফারেন্স করে ঘোষণা করেছিলেন, রাজ্যে প্রাইমারি টেট-২০১৪ পাশ প্রার্থী রয়েছেন প্রায় কুড়ি হাজার। সেখান থেকে ১৬ হাজার পাঁচশ জন প্রার্থীকে অতিসত্ত্বর নিয়োগ করা হবে এবং সেই কুড়ি হাজারের মধ্যে যারা বাকি রয়ে যাবেন তাদেরও নিয়োগ ধাপে ধাপে হবে। মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি পেয়ে কুড়ি হাজার প্রশিক্ষিত টেটপাস চাকুরিপ্রার্থী ও তাদের পরিবার আশার আলো দেখেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত তাদের চাকরি না মেলায় চরম হতাশায় দিন কাটছে।
নট ইনক্লুড প্রার্থী অদ্বৈত রানা বলেন, সময়মতো নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়ে ইন্টারভিউ হয়, যথাযথ সময় অনুযায়ী চলতি বছরে ১৬ ফেব্রুয়ারি প্রথম মেধাতালিকায় প্রকাশিত হয়। তাতে কিছু জন ইনক্লুড হন এবং আরো কয়েক হাজার প্রার্থী নট ইনক্লুড হন।
আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী প্রতিটি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদে যে মেধাতালিকা টাঙানো হয়,সেই তালিকা হিসেব করে আমরা বুঝতে পারি ১২ হাজারের থেকে কিছু বেশি প্রার্থীর নাম তালিকায় রয়েছে। আরো জানতে পারি এরাজ্যে প্রাথমিকে শূন্যপদের সংখ্যা প্রায় কুড়ি হাজার, কিন্তু সাত আট মাস কেটে গেলেও বর্তমানে অধিকাংশ প্রার্থী নট ইনক্লুড তালিকায় আছেন। চাকুরী প্রার্থীরা চিন্তাগ্রস্ত অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন এবং বেশ কিছুজন প্রার্থীর বয়স প্রায় শেষের দিকে। হতাশায় চারজন নট ইনক্লুড প্রার্থী আত্মহননের পথও বেছে নিয়েছেন। এই অবস্থায় আমাদের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে। বাধ্য হয়েই আমরা এই আন্দোলনে সামিল হয়েছি।
অচিন্ত্যবাবু বলেন, আমরা ২০১৪ সাল থেকে টেট পাস করে বসে আছি এবং প্রত্যেকেরই প্রাথমিক শিক্ষক হওয়ার জন্য সব ধরনের শিক্ষাগত যোগ্যতা ও প্রশিক্ষণ রয়েছে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি থাকলেও দীর্ঘ সাত মাস কেটে গেছে সরকার এখনো আমাদের নিয়োগ দেয়নি। চাকুরি পাবার সব রকম যোগ্যতা থাকা সত্বেও আমরা বঞ্চিত। আমাদের চাকরির বয়সের সময়সীমা প্রায় শেষের দিকে। তিনি আরও বলেন, বাংলার ভোট-পর্ব সম্পন্ন হয়েছে, কোভিড পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে, এবার মুখ্যমন্ত্রী যেন প্রতিশ্রুতি মত, ২০১৪ সালের প্রাইমারি টেটপাস প্রশিক্ষিত সকল নট ইন্ক্লুড প্রার্থীদের এবছর দুর্গাপুজার আগেই নিয়োগ করে বেকার যন্ত্রণা থেকে মুক্ত করেন।