নিজস্ব প্রতিনিধি: ঘাটালে শিলাবতী নদীর সাহেবঘাটে কংক্রিটের ব্রীজ নির্মাণের জন্য অবিলম্বে অর্থ বরাদ্দ ও তা না হওয়া পর্যন্ত সরকারী উদ্দ্যোগে বিনা মূল্যে পারাপারের বন্দোবস্ত এবং বর্তমানে খেয়া পারাপারের টোলট্যাক্স বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবীতে আজ সাহেবঘাট ব্রীজ নির্মাণ সংগ্রাম কমিটি’র পক্ষ থেকে ঘাটাল বিডিও অফিসে বিক্ষোভ ডেপুটেশন দেওয়া হয়। সাহেবঘাটে শহীদ ক্ষুদিরাম সেতু(কাঠের ব্রিজ)পারাপারের জন্য সম্প্রতি টোল ট্যাক্স বৃদ্ধি করা হয়েছিল। প্রতি মোটর সাইকেল(ড্রাইভার সহ)’র টোলট্যাক্স পূর্বে ছিল ৪ টাকা। বাড়িয়ে হয়েছিল ৫ টাকা। প্রতি ট্রলির টোলট্যাক্স পূর্বে ছিল ২০ টাকা, বাড়িয়ে হয়েছিল -২৫ টাকা। এরই প্রতিবাদে ওই কমিটি’র উদ্যোগে গত ৩০ মে ব্রীজ সংলগ্ন স্থানে এক বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। ফলস্বরূপ বর্ধিত টোল ট্যাক্স আদায় বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। এলাকার প্রায় দুই শতাধিক মানুষ বিক্ষোভ ডেপুটেশন কর্মসূচিতে সামিল হন। কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন কমিটির উপদেষ্টা নারায়ন চন্দ্র নায়ক, সভাপতি ডাঃ বিকাশ চন্দ্র হাজরা, যুগ্ম সম্পাদক কানাইলাল পাখিরা ও ঝাড়েশ্বর মাজী প্রমূখ।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য ২০০২ সালে বাড়ানন্দী-সাহেবঘাটে শিলাবতী নদীর উপর প্রথম ওই কাঠের ব্রীজটি তৈরী হয়। সেই সময় হরিরামপুরের’বিপ্লবী ক্ষুদিরাম সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতি’ওই ব্রীজটি তৈরি করে ও রক্ষণাবেক্ষণ করার দায়িত্ব পায়। এবং তারাই টোল ট্যাক্স আদায় করা শুরু করে। ব্রীজটি একদিকে ঘাটাল, অন্যদিকে দাসপুর-১ ব্লকের সংযোগকারী একটি গুরুত্বপূর্ণ সেতু। সেতুটি দিয়ে দেওয়ানচক-১ ও ২,অজবনগর-১, রাজনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের আনুমানিক ৪০-৫০ টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করে। ওই ব্রীজ দিয়ে কালিচক বাড়গোবিন্দ দেশপ্রাণ হাইস্কুল, সুরতপুর শ্রী অরবিন্দ শতবার্ষিকী বিদ্যামন্দির, রাজনগর হাইস্কুল, মহারাজপুর হাইস্কুল,চৌকা নেতাজী বিদ্যামন্দির সহ বেশ কিছু হাইস্কুল ও কয়েকটি প্রাইমারী স্কুলের কচিকাঁচারাও যাতায়াত করে। ব্রীজটি দিয়ে সাইকেল- মোটর সাইকেল-চার চাকার মাল ও যাত্রীবাহী গাড়ী প্রভৃতি যাতায়াত করে। সর্বোপরি এলাকাটি সবজি প্রধান এলাকা হওয়ায় কৃষিজীবীরা সবজি নিয়ে ওই সেতু পেরিয়ে গ্রামীণ হাট-বাজারে যান। ২০১৩ সালে বিধ্বংসী বন্যার প্রকোপে ব্রীজটি ভেঙে যায়। এরপর ২০১৪ সালে ফের নতুন ব্রীজ তৈরি করে এলাকার কয়েকজন বিত্তশালী ব্যক্তি মুনাফার স্বার্থে। তারা সেই থেকে টোল ট্যাক্স আদায় করে এবং ২০১৬ ও ২০২০ সালে ফের ট্যাক্স বাড়ায়। বর্তমান করোনা মহামারীতে যখন মানুষজনের দুর্বিষহ অবস্থা, ঠিক সেই সময় আবার ২০২২ সালে ওই মালিকরা উপরোক্ত ট্যাক্স বাড়ানোয় জনসাধারণের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।
কমিটির যুগ্ম সম্পাদক কানাইলাল পাখিরা বলেন, আমরা চাই, ব্রীজটি ব্লক প্রশাসন নিয়ন্ত্রণ করুক। এবং জনসাধারণের স্বার্থে ব্লক প্রশাসনই বিনা পয়সায় পারাপারের বন্দোবস্ত করুক এবং যত শীঘ্র সম্ভব ওই স্থানে একটি কংক্রিটের ব্রিজ নির্মাণ করা হোক।