তনুপ ঘোষ:রক্তের অভাবে স্বামীর অকাল মৃত্যু মেনে নিতে পারেননি স্ত্রী। তাই স্বামীর মৃত্যু দিবসে প্রতিবছর রক্তদান শিবির করেই স্বামীকে স্মরণ করে আসছেন স্ত্রী। চন্দ্রকোনা থানার বাঁকা গ্রামে আজ ২৯ মে এমনই এক ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত এর সাক্ষী হয়ে থাকলেন উপস্থিত অনেকেই।
১৪ বছর আগে ঠিক আজকের এই দিনটিতেই দুর্ঘটনার কবলে পড়েন বাঁকা গ্রামের বাসিন্দা বিবেকানন্দ করণ। হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও রক্তের অভাবে বিবেকানন্দবাবুকে বাঁচানো যায়নি। অকালে প্রাণ হারাতে হয় তাঁকে।
বিবেকানন্দবাবু ছিলেন রক্তদান আন্দোলনের কর্মী। ব্যবসার পাশাপাশি এলাকার মানুষের আপদে বিপদে সবার আগে ছুটে যেতেন তিনি। এলাকার মানুষের ভরসা ছিলেন বিবেকানন্দ বাবু ।কিন্তু ভাগ্যের নিঠুর পরিহাসে ২০০৫ সালে ঠিক এই দিনটিতেই চার বছরের ছোট্ট মেয়ে সোমদত্তা ও স্ত্রী চন্দনাদেবীকে রেখে তিনি মারা যান। রক্তদান আন্দোলনের কর্মীরই রক্তের অভাবে মৃত্যুকে মেনে নিতে পারেননি তার পরিবার, আত্মীয় , বন্ধু শুভার্থীরা। তাই এই রক্তদান আন্দোলনের কর্মী কে রক্তদানের মাধ্যমেই তারা শ্রদ্ধা জানিয়ে আসছেন ১৪ বছর ধরে, এবং যতদিন পারবেন এই শিবির টি করে যাবেন তার স্ত্রী, কন্যা ও আত্মীয় পরিজন।
আজকের এই রক্তদান শিবিরে ৪৮ জন রক্তদান করেন। বিবেকানন্দ বাবুর কন্যা একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী সোমদত্তা শিবিরটির সূচনা করে। সোমদত্তা বলে তারও যখন আঠারো বছর বয়স হবে সেও বাবার এই মৃত্যুদিনে রক্ত দান করবে। এই ধরনের সামাজিক অনুষ্ঠানে রক্তদান শিবিরের প্রশংসা করেন ফেডারেশন অফ ভলান্টারি ব্লাড ডোনার অরগানাইজেশনের সম্পাদক নরেন বারুরি।
সম্পূর্ণ পারিবারিক উদ্যোগে এমন এক শোকের আবহে থেকেও যে মানুষের মঙ্গলার্থে কিছু করা যায় তারই অনন্য নজির বলা যেতে পারে।