তৃপ্তি পাল কর্মকার, ‘স্থানীয় সংবাদ’, ঘাটাল: তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হতেই চন্দ্রকোণায় কারোর মুখে হাসি ফুটেছে তো কারো হাসি উবে গেছে। তবে সবচেয়ে বেশি আলোচিত হয়েছে ৫ নম্বর ওয়ার্ড থেকে বিলু মান্নার নাম ঘোষিত হওয়ায়। এই নিয়ে [✔‘স্থানীয় সংবাদ’-এর সমস্ত কিছু জানতে এখানে ক্লিক করুন]পরপর চারবার এই ওয়ার্ডটি মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হয়েছে। এইবার মহিলা সাধারণের জন্য সংরক্ষিত হওয়ার জন্য ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর সীমা কুণ্ডু এক প্রকার আশায় বুক বেঁধে ছিলেন টিকিট পাওয়ার জন্য। কিন্তু শোনা যাচ্ছে বর্তমান বিধায়ক অরূপ ধাড়ার সাথে গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের ফলে তাঁকে সরিয়ে বিদায়ী পৌর প্রশাসক ও ৪ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর বিলু মান্নাকে টিকিট দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত চন্দ্রকোণায় জগদ্ধাত্রী পুজোয় বিধায়ক অরূপ ধাড়ার বিরোধী গোষ্ঠী পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হীরালাল ঘোষের টিমের দায়িত্ব পালন করেই বিরাগভাজন হয়েছিলেন সীমা কুন্ডুর স্বামী তপন কুন্ডু।
এই নিয়ে তপন কুন্ডুর অনুগামীরা ফেসবুকের মাধ্যমে একের পর এক পোস্ট করেছেন, যার লক্ষ্য বিধায়কের মায়ের টিকিট পাওয়া নিয়ে। ৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রার্থী হয়েছেন বিধায়কের মা মেনকা ধাড়া।
আবার বিধায়কের কিছু অনুগামী ক্ষোভ প্রকাশ করছেন ৭ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী সুনিতা খাড়াকে নিয়ে। এরই মাঝে অল্পবিস্তর ক্ষোভ ৩ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর লক্ষ্মণ কামিল্যার সদ্য বিবাহিত পুত্রবধূর টিকিট পাওয়া নিয়ে। অন্য দিকে ৪ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী গোবিন্দ দাস পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির লোক হলেও গত বিধানসভা নির্বাচনে আড়ালে থেকে বিজেপির পক্ষ নিয়ে কাজকর্ম করেছেন বলে শোনা যায়। দলীয় আনুগত্য বা পারফরম্যান্সের চেয়ে লবির গুরুত্ব অনেক বেশি সেটাই বুঝতে পারছেন বেশ কিছু টিকিট প্রত্যাশী তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী।
এইসমস্ত খবরকে ছাড়িয়ে গেছে এক ব্যাক্তির কয়েক লাখ টাকা দিয়ে টিকিট কেনার খবর, শোনা যায় টিকিট না পাওয়ায় তিনি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে পর্যন্ত ভর্তি হন। দীর্ঘদিন ধরে দক্ষিণপন্থী রাজনীতি করে আসা অশোক পালধী যে এবার টিকিট পায়নি তাও রীতিমত বিস্ময়কর অনেকের কাছে। টিকিট পাননি প্রাক্তন ভাইস-চেয়ারম্যান ওসমান গেনিও। গত ২০১৫ সালের পৌরনির্বাচনেও বেশ কিছু বিক্ষুব্ধ নির্দল হয়ে ভোটে লড়বেন বলে নমিনেশন করেও শেষ পর্যন্ত তা প্রত্যাহার করেন। এবারে ভোটে নির্বাচন সহজেই জয়লাভ হবে এই ভেবে প্রার্থী হতে চাওয়ার ইচ্ছা চরমে পৌঁছে গিয়েছিল কিন্তু তালিকা প্রকাশিত হতেই সেই আশার বুদবুদ মিলিয়ে গেছে। তবে যারা তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিট পায়নি তারা ভোট বাক্সে “অন্য খেলা” দেখাতে পারে কিনা সেটাই দেখার বিষয়। যদিও তৃণমূলের চন্দ্রকোণা শহর সভাপতি প্রদীপ সাঁতরা জানিয়েছেন, প্রার্থী তালিকা রাজ্য থেকে হয়েছে। এনিয়ে তাঁদের কোনও হাত নেই। সেই সঙ্গে তিনি এও জানান, চন্দ্রকোণা পুরসভায় তৃণমূলের প্রার্থী নিয়ে কোনও সমস্যা নেই।