ভিনরাজ্য ফেরত মহকুমাবাসীদের রেশন কুপন নিয়ে দুর্নীতি চলছে ঘাটালের বিভিন্ন এলাকায় এমন অভিযোগ তোলা হল দাসপুর সিপিএমের তরফে। সে অভিযোগে সায় দিলেন দাসপুরের এক তৃণমূল নেতাও। এই অভিযোগের প্রমাণ স্বরূপ সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য গুনধর বোস জানান দাসপুর ১ ব্লকের সামাটে এক রেশন দোকানে একাধিক গ্রামবাসী পরিযায়ী শ্রমিকদের রেশন কুপনে মাল নিয়েছেন। অথচ তারা পরিযায়ী শ্রমিক নয় এবং তাদের ডিজিটাল রেশন কার্ডও রয়েছে। তিনি আরও অভিযোগ তোলেন ঘাটালের মহকুমাশাসকের অফিসের এক গাড়ি চালক অবৈধ উপায়ে একসাথে একাধিক কুপনে সামাটের ওই রেশন দোকান থেকে রেশনদ্রব্য তুলেছেন।
ঘটনাটি মহকুমাশাসকের কানে যেতেই ঘাটাল মহকুমাশাসক অসীম পাল প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেন। ভুয়ো টেম্পোরারি কুপনধারী ওই ব্যক্তি চাল ফেরত দিতে বাধ্য হয়। জানা গেছে, সামাটের রেশন ডিলার নারায়ণ মণ্ডলের কাছে এক ব্যক্তি নিজেকে মহকুমাশাসকের গাড়ি চালক পরিচয় দিয়ে প্রায় ৩৯০ কেজি চাল এবং ১১ কেজি ছোলা দাবি করে। তার সাথে টেম্পোরারি কুপন ও ছিল বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। সেই কুপন দেখে নারায়ণবাবু খাদ্যসামগ্রী দিয়ে দেবার পর গোলমালের সূত্রপাত হয়। স্থানীয় মানুষ জন ডিলারকে অভিযোগ করতে শুরু করেন। একজন ব্যক্তি কি করে এতো খাদ্যসামগ্রী পেলেন সেই নিয়ে অভিযোগ শুরু হয়।
ডিলার তখন মহকুমা খাদ্য নিয়ামক পিটার রঞ্জন বরকে ফোনে বিষয়টি জানান। পিটার বাবু বিষয়টি মহকুমাশাসক অসীম পালকে জানালে তিনি তৎক্ষণাৎ বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দেন। ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ে তদন্তে জানা যায় যে ওই ব্যক্তি ভুয়ো নথিপত্র জমা দিয়ে অফিস থেকে কুপনগুলি সংগ্রহ করেছেন। সাথে সাথে মহকুমাশাসকের দপ্তর থেকে নির্দেশ জারি করে ওই ব্যক্তিকে অবিলম্বে খাদ্যদ্রব্য ফেরত দিতে বলা হয়।
মহকুমাশাসকের চাপে ওই ব্যক্তি সমস্ত খাদ্যদ্রব্য রেশন ডিলারকে ফেরত দিতে বাধ্য হয়। মহকুমা শাসক বলেন, আমরা একটা অভিযোগ পেয়েছিলাম। তার পরিপ্রেক্ষিতে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিয়েছি।এই রকম দুর্নীতির খবর কেউ আমাদের জানালে প্রশাসন সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেবে। এই ব্যাপারে যে কেউ জড়িত থাকুক না কেন, তাকে ছেড়ে কথা বলা হবে না।আমরা চাই,যে কারণে এই খাদ্যদ্রব্য দেওয়া হচ্ছে সেগুলি যাতে সঠিক উপভোক্তার কাছে পৌঁছয় সে ব্যাপারে সুনিশ্চিত করা।
আমি এব্যাপারে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। জানা গেছে,ওই গাড়ি চালক মহকুমাশাসক দপ্তরে ভাড়া করা গাড়ি চালান। গাড়ির চালক নিয়োগ করেন গাড়ির মালিক। মালিকই বেতন দেন। চালকদের সাথে সরাসরি অফিসের কোনো সম্পর্ক থাকে না। গাড়ির মালিক রণজিৎ মাইতি কে মহকুমাশাসক জানিয়ে দেন, ওই চালক যেন মহকুমাশাসক দপ্তরে আর কখনো প্রবেশ না করেন।