সৌমেন মিশ্র, ‘স্থানীয় সংবাদ’ ঘাটাল: নারী শক্তির আরাধনায় নারীরাই ব্যাত্য ৬০০ বছরের বেশি সময় ধরে এভাবেই চলে আসছে নাড়াজোল রাজবাড়ি জয় দুর্গার পুজো।মায়ের পুজোতে মায়েরাই ব্যাত্য এমনটাই চলে আসছে ৬০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে দাসপুরের নাড়াজোল রাজবাড়ির দুর্গাপুজোয়। এটাই রাজবাড়ির প্রথা আর সেই প্রথা আজও অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলেছেন রাজ পরিবারের মহিলারা।রাজ পরিবার সূত্রে জানা যায় বর্ধমান রাজার নায়েব ছিলেন উদয়নারায়ন ঘোষ। তিনি রাজার অনুমতি নিয়ে মেদিনীপুর জেলায় শিকার করতে এসেছিলেন। দাসপুরের নাড়াজোল জঙ্গলে শিকার করে ফেরার পথে হঠাৎই দেখেন একটি বক তাড়া করছে বাজপাখি কে। এই দৃশ্য দেখে চমকে গিয়েছিলেন নায়েব মশাই। বাড়ি ফিরে সেই রাতেই তিনি স্বপ্ন দেখেন ওই জঙ্গলেই রয়েছেন মা দুর্গার অষ্টধাতুর মূর্তি। মায়ের নির্দেশে সেই মূর্তি জঙ্গল থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন। নাড়াজোল এলাকার জঙ্গল সাফাই করে তৈরি করেন বাড়ি এই বাড়িতেই অষ্টধাতুর দুর্গা মূর্তি পূজা শুরু করেন বাংলার ৮২০ বঙ্গাব্দে। পরবর্তীকালে উদয় নারায়ণ ঘোষ নাড়াজোল রাজ বাড়ির প্রতিষ্ঠা করেন। দুর্গাপুজোর যাবতীয় বিধি নিষেধ তিনি চালু করেন। আজ নাড়াজোল রাজবাড়ি ধ্বংসের পথে। কিন্তু প্রথা মেনে আজও রাজবাড়ীতে অষ্টধাতুর দুর্গা মূর্তি পূজিত হন। রাজবাড়ীতে বৈষ্ণব মতে পূজিত হন মা দুর্গা তাই নেই বলি প্রথা । আজও রাজবাড়ির মহিলারা পুষ্পাঞ্জলি দিতে পারেন না। নিতে পারবেন না প্রসাদ ও বেলপাতাও।রাজবাড়ীর অষ্টধাতুর মূর্তি তে মা একাই পূজিত হন এখানে মায়ের সাথে থাকেনা কার্তিক, গণেশ, লক্ষ্মী ও সরস্বতী। এখানে যেহেতু অষ্টধাতুর দুর্গা তাই বিসর্জন হয় না হয় শুধুমাত্র ঘট ডুবিয়ে নিরঞ্জন দেওয়া হয়।মেদিনীপুরের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস জড়িয়ে আছে নাড়াজোল রাজবাড়ি তে সেই ইতিহাসই আজ ধ্বংসের পথে। বর্তমানে হেরিটেজ স্বীকৃতি পাওয়ার পর শুরু হয় সংস্কারের কাজ। মাঝপথেই বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে রাজবাড়ী সংস্কারের কাজ। নাড়াজোল রাজবাড়ি সংস্কার করে প্রাচীন ইতিহাস কে রক্ষা করার আবেদন রাজবাড়ীর সদস্যদের।