সৌমেন মিশ্র, ‘স্থানীয় সংবাদ’, ঘাটাল: বাঁধ ঠিক কবে ভেঙেছিল তা মনে করতে পারছেন না ওরা।
[✔‘স্থানীয় সংবাদ’-এর সমস্ত কিছু জানতে এখানে ক্লিক করুন]
তবে বছর ১০ এর উপর হবে বাঁধের হাল সেই বেহালই। অন্যদিকে ১৭ বছর ধরে ঘাটালের চৌকা নেতাজি বিদ্যামন্দিরে যাতায়াত করছেন ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রদ্যোত চৌধুরি। কখনও পোক্ত বাঁধ দেখেননি। মাঝে বছর খানেক আগে বাঁধের ভাঙা অংশে জুটেছিল বাঁশের মাচা। কিন্তু মেরামতের অভাবে তার হালও বেহাল। শিলাবতীর এই বাঁধ বরাবর রাস্তা দাসপুর ১ ব্লকের রাজনগর পশ্চিম এলাকায় হলেও শুধু দাসপুর নয়, ঘাটাল ব্লকেরও শিমুলিয়া, জয়কৃষ্ণপুর, চৌকা, মসরপুরের মতো বহু গ্রামের মানুষ পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীরা এই বাঁধ দিয়েই যাতায়াত করে। রাতে-ভিতে হঠাৎ বিপদে এই পথেই অনেক দ্রুত পৌঁছানো যায় ঘাটাল, দাসপুরের মতো হাসপাতালে। অন্যদিকে শিলাবতী নদীর এই ভাঙা বাঁধ দিয়েই জল ঢুকে প্লাবিত হয় রাজনগর ও নিজ নাড়াজোল গ্রাম পঞ্চায়েতের বহু গ্রাম। যে বাঁধের এমন গুরুত্ব সে বাঁধ বাঁধায় এত অনিহা কেন? গ্রামবাসীরা যখন রাজ্যের তৃণমূল আর কেন্দ্রের বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়াচ্ছেন বৃহস্পতিবার সেই সময়ই ওই ভাঙাচোরা বাঁধ আর বাঁশের সাঁকো দিয়ে বাড়ি ফিরতে ব্যস্ত ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের বিদায়ী পঞ্চায়েত সদস্যা জয়শ্রী হাইত। গত ৫ বছর ধরে তৃণমূল পরিচালিত রাজনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের রাজনগর পশ্চিমের এই বুথেরই তিনি পঞ্চায়েত ছিলেন। জয়শ্রীদেবী জানালেন, তাঁর মেয়াদকালে তিনি গ্রামে, ব্লকে বারে বারে এই বাঁধ মেরামতের জন্য বলেছেন। মাঝে মধ্যে কাজও হয়েছে। কিন্তু শিলাবতীতে জল বাড়লে এই বাঁধ রক্ষা করা সম্ভব হয় না। বারে বারে ভেঙে যায়। তিনি আরও জানান, এবার ইরিগেশন দপ্তরের অধীনে এই বাঁধ মেরামতের কাজের প্রাথমিক প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তবে পঞ্চায়েতে তাঁর মেয়াদ শেষ। বর্তমানে গ্রামে, ব্লকে জেলায় নতুন বোর্ড গঠন হলে এই কাজ দ্রুত সম্পন্ন হবে তিনিও আশা করছেন। প্রতি বছর লাগাতার বৃষ্টি সাথে নদীতে জল বাড়লেই রাজনগরে শিলাবতীর এই ভাঙা পোলের ভাঙা মুখ দিয়ে জল ঢুকে প্লাবিত হয় একের পর এক গ্রাম। আবার লাগাতার বৃষ্টি, ঘাটালের বিভিন্ন অংশে নদীর জল বেড়ে গ্রামের পর গ্রাম বিচ্ছিন্ন হওয়ার খবর যত আসছে দাসপুর ও ঘাটালের মাঝে হাইত পাড়া, দোলই পাড়া সহ রাজনগর পশ্চিম, রামগড়, রামদেবপুর, হোসেনপুর সামাটের পাশাপাশি বন্যার জল যন্ত্রণার প্রহর গুনছে ঘাটালের শিমুলিয়া, চৌকা সহ বহু গ্রামের মানুষ। উল্লেখ্য দাসপুরের এই অংশ একদিকে যেমন ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্র তথা ঘাটালের সাংসদ দেবের এলাকা অন্যদিকে জায়গাটি ঘাটাল বিধান সভা এলাকার, বর্তমানে এই অংশের বিধায়ক শীতল কপাট। তবে কী কেন্দ্র ও রাজ্য উভয় সরকারের গেরোয় ফেসে শিলাবতীর আলগা বাঁধের বাঁধনে ফাস লাগছে না?