এই মুহূর্তে ক্রীড়া/অনুষ্ঠান অন্যান্য সাহিত্য সম্পাদকীয় নোটিশবোর্ড

E-Paper

শিক্ষা ও বর্তমান সমাজ: প্রাসঙ্গিক আলোচনা

Published on: May 18, 2022 । 7:43 AM

দেবাশিস কুইল্যা, অতিথি সাংবাদিক, স্থানীয় সংবাদ: শিক্ষার উদ্দেশ্য মানসিক ও সামাজিক উন্নতির উপযুক্ত [‘স্থানীয় সংবাদ’-এর সমস্ত কিছু জানতে এখানে ক্লিক করুন]করে তোলা। শিক্ষা সমাজকে উন্নততর পথে পরিচালিত করে যেমন সত্য কিন্তু সমাজের উপযোগী না হলে সে শিক্ষা সমাজের কাছে মূল্যহীন হয়ে পড়ে। বর্তমান সময়ে এই উপযোগিতার অভাব আছে বলেই অনুভূত হয় ।
প্রাচীন ভারতে আশ্রমিক শিক্ষায় সমাজ ও জীবনের উপযোগী শিক্ষার শিক্ষা দেওয়া হত। শিক্ষার এই আটপৌরে ব্যবস্থায় কম অসন্তোষের পাশাপাশি বিলাসিতা প্রকাশ পাওয়ার সুযোগ ঘটেনি। এই শিক্ষা ব্যবস্থায় যাঁরা বিভিন্ন বিষয়ে পাণ্ডিত্য লাভ করতেন, তাঁরাও নিজ নিজ জগতের মধ্যে দিন কাটিয়ে দিতেন। বর্তমান সময়ে কতজন শিক্ষার জন্যই উচ্চ-শিক্ষা লাভে সচেষ্ট। তাঁদের মূখ্য উদ্দেশ্য জ্ঞানের বিস্তার। তাঁরা সমাজের যে অংশ থেকেই আসুক না কেন। কিন্তু অধিকাংশ জনই শিক্ষার মাধ্যমে জীবন ধারণের জন্য শিক্ষা চায়। এপ্রসঙ্গে অনায়াসেই বলা যায় শেষোক্ত শ্রেণির শিক্ষার আত্মীকরণে ঘাটতি রয়ে যায়। এই শিক্ষার সমাজ ও সংসারে প্রয়োজন খুব বেশি আছে বলে মনে হয় না। যাঁদের জ্ঞানপিপাসা অপেক্ষা অর্থপিপাসা প্রবল সেই শিক্ষায় দোকানের মতো প্রসার বাড়তে পারে কিন্তু মানসিক ও সামাজিক উন্নতি সম্ভব নয়। ফলে দেশের ভবিষ্যতের পথকে রুগ্ন থেকে রুগ্নতর করে দেয় ।
আর একটা গুরুতর ব্যাধি, শিক্ষায় নীতি শিক্ষার অভাব। নীতি শিক্ষার অভাব মানুষকে অসামাজিক ও উৎশৃঙ্খল করে তোলে। প্রাচীন মুনিঋষিদের আশ্রমকেন্দ্রিক শিক্ষার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ছিল পরমার্থ, লৌকিকার্থ নয়। এই ভাবটি তৎকালীন দেশের শিক্ষার মধ্যে সংক্রামিত হয়েছিল বলেই পরীক্ষায় পাশ অপেক্ষা উন্নত চরিত্র বলের মানুষের সন্ধান পেয়েছিল ভারতবর্ষ। অপরদিকে সে দেশে হাজার হাজার অভাবের মধ্যেও বিলাসিতার প্রাচুর্যতা লক্ষ্য করা যাবে শিক্ষায় যদি নীতি শিক্ষা থাকে।
শিক্ষা জীবনব্যাপী; বিদ্যালয়ে তার ভিত্তিস্থাপন হয় মাত্র। বিদ্যালয়ের গণ্ডি ছেড়ে তারা কোনও কাজের মধ্যে প্রবেশ করে, তাঁরা সেই কর্মেই শিক্ষিত হয়ে উঠে। আর যারা কর্মহীন অবস্থায় দিন কাটায় তাদের অসহায় অবস্থার বর্ণনা ভাষাতীত। বিদ্যালয়ে পড়াশোনা চলাকালীন মনে যতটা আশার সঞ্চয় হয়েছিল সংসার প্রাঙ্গণে এসে ততটা হতাশ হতে হয়। অসামাজিকতা ও উদ্ধত জীবনে নানা বিভ্রাট ঘটিয়ে দেয়। অন্য কাজের অভাব রাজনীতি ওয়ালারের হাতের ক্রীড়নক হয়ে দাঁড়ায়। এই জায়গা থেকেই সংসার, পরিবার, সমাজ ও দেশের মধ্যে অশান্তির জন্ম দেয়। রাজনীতির মাধ্যমে দেশহিতৈষিতা ভাল কিন্তু দীর্ঘকাল পরে ব্রিটিশের অবদানে যে দেশ- সমাজের চোখ খুলেছে তার পক্ষে দেশের গণতন্ত্রের উপযুক্ত হতে যে চেষ্টা, যত্ন আর অধ্যবসায় দরকার তার পরিবর্তে বালকোচিত, বাহু ও পেশিবলের প্রয়োগ অসৎ শিক্ষার প্রতিফলন। প্রকৃত শিক্ষা কর্মজীবনকে সৎ পথে চালিত করবে, নানা বাধা বিপত্তির মধ্যেও মনের দৃঢ়তা আনবে এবং নিজেকে অপরের সেবায় নিয়োজিত করতে উৎসাহিত করবে ।
আমাদের শিক্ষার মধ্যে আকাঙ্ক্ষা গভীর ও যথেষ্ট কিন্তু শক্তি কম। তাই সমাজ ও দেশের মধ্য সুশৃঙ্খল নিয়মের বাইরে মিথ্যাচার আর অসামঞ্জস্য। আমাদের গৃহলক্ষ্মীরা অধিকতর সুশিক্ষিত হলে সমাজ ও দেশের সংস্কারের পথে সুগম অনায়াসেই হবে। যে সংস্কার দেশকে উন্নতির দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে, অন্ধ অনুকরণের মধ্য ডুবিয়ে না দেয়। উপযুক্ত শিক্ষার সাথে মৌলিক ও নীতি শিক্ষায় সমাজ ও দেশের পরিবর্তন সম্ভব। আর সেই পরিবর্তিত সমাজ ও দেশ হতে লোকে শিক্ষালাভ করবে এর পৃথক পথে। এতেই সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি নীতি শিক্ষায় শিক্ষিত মানুষের মতকে গুরুত্ব দেওয়া আবশ্যিক, যা অনেক সময় সাপেক্ষ, কিন্তু সে উদ্যোগ কোথায়?

নিউজ ডেস্ক

‘স্থানীয় সংবাদ’ •ঘাটাল •পশ্চিম মেদিনীপুর-৭২১২১২ •ইমেল: [email protected] •হোয়াটসঅ্যাপ: 9933998177/9732738015/9932953367/ 9434243732 আমাদের এই নিউজ পোর্টালটি ছাড়াও ‘স্থানীয় সংবাদ’ নামে একটি সংবাদপত্র, MyGhatal মোবাইল অ্যাপ এবং https://www.youtube.com/SthaniyaSambad ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে।

Join WhatsApp

Join Now

Join Telegram

Join Now