সংবাদদাতা, ঘাটাল ও দাসপুর: ঘাটালের বিভিন্ন ব্লকে রেশন দপ্তরের বিশেষ শিবিরে লম্বা লাইন। কেউ এসেছেন ভোর সকালে আবার কেউ বাচ্চা কোলে নিয়েই ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে। উদ্দেশ্য একটাই যেভাবেই হোক নিজের বা পরিবারের ডিজিটাল রেশন কার্ড হাতে পেতে হবে। দিনভর লাইনে দাঁড়িয়ে হইচই, ঠেলাঠেলি, হাতাহাতি কিছুই বাদ পড়ছে না দপ্তর চত্বরে। চরম বিশৃঙ্খলা তৈরি হচ্ছে ঘাটালের অধিকাংশ রেশন দপ্তরের অফিসেই। গ্রাহকদের মধ্যে অনেকেরই অভিযোগ পূর্বে কয়েকবার ফরম ফিলাপ করার পরেও রেশন কার্ড তাঁরা পাননি। রেশন কার্ড হাতে না থাকার কারণে রেশন দোকান থেকে মাসের-পর-মাস চাল গম আটা কেরোসিন দেওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে অনেকের। অনেকেরই আবার রেশন কার্ড ভুলে ভরা। তাই অযথা হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে গ্রাহকদের অভিযোগ। রেশন দপ্তরের বিশেষ শিবিরে গত ৯ সেপ্টেম্বর থেকেই চলছে নতুন ডিজিটাল কার্ড, হারিয়ে যাওয়া কার্ড, আগে ফরম পূরণ করেও না পাওয়া কার্ড, কার্ডের ভুল সংশোধন ইত্যাদির জন্য ফরম জমা নেয়ার কাজ। এই কাজে এসে অধিকাংশ গ্রাহককেই টাকা দিয়ে ফরম ফিলাপ করতে হচ্ছে বলে অভিযোগ। ঘাটাল ব্লকের আজবনগর থেকে আসা বেলারানী পোড়ে বলেন, রেশন কার্ডের বানান ঠিক করতে এসে ২০ টাকা দিয়ে ফরম ফিলাপ করতে হল, আমরা ফর্ম ফিলাপ করতে জানিনা, তার উপরে আবার ইংরেজি ফর্ম, তাই বাধ্য হয়েই অন্যকে টাকা দিয়ে ফরম ফিলাপ করতে হল। অন্যান্য অনেক গ্রাহকই বলেন, আমরা জানিনা বলেই বাধ্য হয়ে ইংরেজি ফরম অন্যদের টাকা দিয়ে ফিলাপ করতে হচ্ছে। জানা যায় ফরম ফিলাপ করার জন্য কেউ নিচ্ছেন ২০ টাকা, কেউ নিচ্ছেন ৩০ টাকা, আবার কেউ কেউ ৪০-৫০ টাকা পর্যন্ত হাঁকাচ্ছেন। গ্রাহকদের এই অসহায় অবস্থার সুযোগ নিয়ে বেশকিছু কলমধারী ব্যক্তি অফিস চত্বরেই চাটা মিলে বসেছেন টাকার বিনিময়ে ফরম ফিলাপ করে দেওয়ার জন্য। ভরামরশুমে রমরমিয়ে চলছে সেই ব্যবসা। মাঝখান থেকে হয়রানি আর আর্থিক ক্ষতির শিকার হতে হচ্ছে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষদের। মহুকুমা খাদ্য সরবরাহ দপ্তরের আধিকারিকের উক্ত বিষয়ে সবই জানেন। তিনি বলেন, টাকা-পয়সা নিয়ে ফরম ফিলাপ করার বিষয়টি আমরা শুনেছি, কিন্তু এই নিয়ে আমাদের কিছুই করার নেই, ডিজিটাল কার্ড যেহেতু ইংরেজি নামে হয় তাই আমরা ইংরেজি ফরমটা চালু রেখেছে।
মনসুকা থেকে আসা পূজা কর নামে এক গৃহবধূ বলেন, বাচ্চা কোলে নিয়ে সকাল থেকে দাঁড়িয়ে আছি, কখন কাজ হবে কিছু বুঝতে পারছিনা। প্রসঙ্গত রেশন দপ্তরের এই বিশেষ শিবিরকে কেন্দ্র করে অফিস চত্বরের সামনের রাস্তাতেও দৈনন্দিন যানজট তৈরি হচ্ছে, এর জেরে আজ ২৩ সেপ্টেম্বর দাসপুর-১ ব্লকের অফিস চত্বরের সামনের রাস্তায় চরম যানজট তৈরি হয়। ভোগান্তির শিকার হতে হয় যাত্রীদের। তেমনই ঘাটাল বিডিও অফিসের সামনেও দফায় দফায় দীর্ঘক্ষন যানজট তৈরি হয়। সবে মিলে ক্ষুব্ধ অনেকেই।
Home এই মুহূর্তে দাবি/অভিযোগ ডিজিটাল রেশন কার্ড বানানোয় নেই আধুনিকতার ছোঁয়া, চরম হেনস্তার শিকার ঘাটালবাসী