নাটক নিয়ে P.hD শেষে ‘ডক্টরেট’ সম্মানে ভূষিত ঘাটালের ভূমিপুত্র অধ্যাপক প্রবীর মাইতি

নিজস্ব সংবাদদাতা, স্থানীয় সংবাদ: তাঁর একাধিক পরিচয়। তিনি “ঘাটাল কলেজ অফ এডুকেশন” তথা ঘাটাল বি.এড. কলেজের কর্ণধার, আবার পেশাগত ভাবে বঙ্গ ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক। পাশাপাশি সবুজ ও পরিবেশ রক্ষায় অরণ্য সপ্তাহ উদযাপনের মাধ্যমে প্রতি বছর স্কুল কলেজে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে বৃক্ষ রোপণ উৎসব ও চারাগাছ বিতরণ করেন। এতো কাজের মাঝেও তিনি নিরলস পরিশ্রম, নিষ্ঠা ও অধ্যাবসায়ের মাধ্যমে করে চলেছিলেন নাটক নিয়ে গবেষণা। সদ্য প্রয়াত কিংবদন্তী নাট্যকার, নাট্য নির্দেশক, মঞ্চ ও চিত্রাভিনেতা মনোজ মিত্রের নাটক এবং তাঁর জীবন নিয়ে ” নাট্যকার মনোজ মিত্র : জীবন ও সাহিত্য” এই শিরোনামে গতবছর গবেষণাপত্র জমা করেন NAAC দ্বারা স্বীকৃত “A” গ্রেড প্রাপ্ত কোলকাতার অ্যাডামাস বিশ্ববিদ্যালয়ে। অবশেষে আসে সাফল্য। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় তার অষ্টম কনভোকেশনের মঞ্চে আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর সুরঞ্জন দাস প্রবীর মাইতিকে “ডক্টরেট” উপাধিপ্রাপ্ত প্রশংসাপত্রটি প্রদান করেন।

অধ্যাপক প্রবীর মাইতির জন্ম ঘাটাল মহকুমা শহর লাগোয়া হরিসিংপুর গ্রামে।   তিনি ইতিমধ্যে শিক্ষার একাধিক সোপান সাফল্যের সঙ্গে অতিক্রম করেছেন। ঘাটাল বিদ্যাসাগর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত সিটি কলেজ (মেন) থেকে বঙ্গভাষা ও সাহিত্য বিভাগে স্নাতক ও বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতকোত্তর পাশ করেন। এরপর বি.এড., এম.এড., এম. ফিল., মাস.কম. (ডিপ্লোমা)  করে শেষে পি.এইচ.ডি  সম্পূর্ণ করেন।

২০১০ সালে নন্দনপুর টিচার্স ট্রেনিং কলেজে অধ্যাপনা দিয়ে তাঁর কর্মজীবন আরম্ভ হয়। পরে ২০১৬ তে তিনি নিজেই “ঘাটাল কলেজ অফ এডুকেশন” নাম দিয়ে নিজের গ্রাম হরিসিংপুরে একটি কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। বি. এড. এবং ডি.এল.এড. এই দুই বিভাগ নিয়ে সাফল্যের সঙ্গে চলছে কলেজটি। বর্তমানে তিনি ওই কলেজেরই গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারী হিসেবে কাজ করে চলেছেন।

সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে বি. এড. করার সময় বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে একাডেমি অফ ফাইন আর্টসে গিয়েছিলেন মনোজ মিত্র অভিনীত “অপারেশন ভোমরাগড়” নাটক দেখতে। সেই ভালোলাগা পরবর্তীকালে ভালোবাসায় পরিণত হয়। একটার পর একটা নাটক পড়তে পড়তে তাঁর নাটকের বিষয় বৈচিত্র, চরিত্র চয়ন সর্বোপরি নাটকের নির্মাণ শৈলী ভীষণ টানে। ফলে সেই সময় থেকেই প্রবীরবাবু সিদ্ধান্ত নেন, মনোজ মিত্রের নাটকের ওপরই গবেষণা করবেন।

পরবর্তী সময়ে গবেষণা সন্দর্ভটি পুস্তকাকারে প্রকাশ করার ইচ্ছে আছে তাঁর। কারণ, মনোজ মিত্রের নাটক বা তাঁকে নিয়ে কেউ কাজ করলে এই গ্রন্থ থেকে সাহায্য পেতে পারেন। এই সম্মান অর্জন যাঁদের সাহায্য এবং উৎসাহ ছাড়া কোনোভাবেই সম্ভব হতো না, তাঁদের প্রত্যেককে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন অধ্যাপক মাইতি। বিশেষ করে, তাঁর সুপারভাইজার ড. কৌশেয়ী বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রফেসর ব্রততী চক্রবর্তী, প্রফেসর ও নাট্য ব্যক্তিত্ব সৌমিত্র বসু, নাট্য ব্যক্তিত্ব সুমিতা বসু, প্রভাতী সামন্ত, অমলেন্দু চক্রবর্তী, সুবীর মাইতি, রাসবিহারী সামন্ত, দেবকুমার সাঁতরা আর সবার ওপর মা-বাবা। তাঁদের অবদান ছাড়া এই ডিগ্রি লাভ সম্ভব হত না বলে জানান প্রবীরবাবু।

ঘাটাল মহকুমার সমস্ত আপডেট তে যুক্ত হন আমাদের সাথে!