নিজস্ব সংবাদদাতা: পরকীয়ার প্রেমিকের কাছ থেকে টাকা ধার। শোধ না দিতে পেরে ব্ল্যাকমেইল। তারই জেরে খুন হতে হল চন্দ্রকোণা থানার জয়ন্তীপুরের গৃহবধূ সোমা পালকে। পুলিশের কাছে তদন্তে এমন তথ্যই উঠে এসেছে। প্রসঙ্গত, রবিবার রাতে সোমাদেবী নিজের বাড়িতেই খুন হন। খুনের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ খুনির মোবাইল ট্রাক করে গৌতম শী নামে দাসপুর থানার নারায়ণচকের
এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে। গৌতমও খুনের বিষয়টি স্বীকার করেছে পুলিশের কাছে।
পুলিশ সিনেমার কায়দায় গৌতমকে গ্রেপ্তার করে। সোমা খুন হওয়ার পর তার রুমে কোনও মোবাইল ছিল না। পুলিশ সোমার মোবাইল নম্বরের কললিস্ট ট্রাক করে জানতে পারে সোমার বিগত এক মাসে ১২২০বার কল করেছিল এক নম্বরে। পরে পুলিশ মোবাইলের লোকেশন ট্রাক করে জানতে পারে, যে নম্বরে সোমা এতো বার ফোনকরেছিল সেই মোবাইল এবং সোমার মোবাইল একই জায়গায় রয়েছে।
এর ফলেই পুলিশ সুনিশ্চিত হয় এবং লোকেশন ট্রাক করে গৌতমকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
যদি পরকীয়াই ছিল তাহলে সোমাকে খুন করতে গেল কেন গৌতম? এর উত্তরে গৌতম পুলিসকে জানায়, কিছু দিন আগে সে সোমাকে এক লক্ষ টাকা ধার দেয়। রবিবার গৌতম আমেদাবাদ থেকে ট্রেনে করে খড়্গপুরে নামার পর সোমাকে পাঁশকুড়া স্টেশনে ডাকে। সোমা তার আড়াই বছরের বাচ্চাকে নিয়ে পাঁশকুড়ায় গৌতমের সঙ্গে দেখা করে এবং একটি লজে কয়েক ঘণ্টা কাটান। ওই দিনই গৌতমকে টাকা ফেরৎ দেওয়ার জন্য সোমা জয়ন্তীপুরের বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায়। রাতে দু’জনেই বিরিয়ানি ও মদ পান করে। গৌতম পুলিশকে বলে, আমি টাকা চাইতেই সোমা আমাকে ব্ল্যাকমেইল করতে শুরু করে। সোমা গৌতমকে হুমকি দিয়ে বলে, তার(গৌতমের) অনেক ছবি ও কল রেকর্ডিং রয়েছে। তাই বিয়ে না করলে সোমাদেবী গৌতমকে ফাঁসিয়ে দেবে। গৌতম বার বার বুঝিয়েও সোমাদেবীকে শান্ত করতে পারেনি। গৌতম পুলিশকে বলে, বাড়িতে তার স্ত্রী সন্তান রয়েছে। এই মুহূর্তে বিয়ে করা সম্ভব ছিল না সোমাদেবীকে। তাই বাধ্য হয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে খুন করে সোমাদেবীর মোবাইল নিয়ে গৌতম বাড়িতে পালিয়ে যায়। কাল হয়ে দাঁড়ায় সোমাদেবীর ওই মোবাইল। মোবাইল ট্রাক করেই গ্রেপ্তার হতে হল গৌতমকে।