নিজস্ব সংবাদদাতা, স্থানীয় সংবাদ,ঘাটাল: মাত্র পাঁচ বছর বয়সেই হারমোনিকা তথা মাউথ অর্গানের সাড়া ফেলে দিয়েছে ঘাটালের শ্রীহান। শ্রীহানের বাড়ি দাসপুর-২ ব্লকের কলাগেছিয়া-এরেটিতে। তার বাবা মিহির সামন্ত মুর্শিদাবাদের একটি স্কুলে পদার্থবিদ্যার শিক্ষক। মা সোমা মাল প্রাথমিক বিদ্যালের শিক্ষিকা। বাবা-মা দুজনেই কর্মসূত্রে মুর্শিদাবাদের লালবাগ শহরে থাকেন। সেখান থেকেই শ্রীহান মাউথ অর্গানে সুরে চমকে দিয়েছে হাজার-হাজার মানুষকে।
করোনা মহামারীর ভয়াবহ পরিস্থিতিতে খোলামঞ্চে সঙ্গীতানুষ্ঠানের সুযোগ না থাকলেও সোশ্যাল মিডিয়ায় মাধ্যমে হাজার হাজার মানুষের মধ্যে মাউথ অর্গানের সুর ছড়িয়ে দিচ্ছে এই ‘বিস্ময় শিশু’। সহজ থেকে কঠিন বাংলা ও হিন্দি সব ধরনের গানের সুর খুব অনায়াসেই পরিবেশন করতে পারে এই শিশুটি। সম্প্রতি সর্বভারতীয় দুটি হারমোনিকা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে সুনামধন্য বিচারকমণ্ডলীর বিশেষ নজরে এসেছে এবং নিজের ঝুলিতে এসেছে পুরষ্কার স্বরূপ দুটি মাউথ-অর্গান ও ‘তরুণতম প্রতিভা’-এর খেতাব।
শ্রীহানের সংগীত যাত্রা শুরু হয়েছিল আট মাস পূর্বে বাবামায়ের কাছেই। প্রথমবার মাউথ অর্গানে ফুঁ দেওয়ার চারদিনের মধ্যেই ‘আয় তবে সহচরী’ রবীন্দ্র সংগীতটি
সুর ও তাল বজায় রেখে সম্পূর্ণভাবে বাজিয়ে বিস্মিত করে দিয়েছিল বাড়ির লোকজনদের। তারপর একের পর এক গানের সুরের মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়াতে বহুল প্রশংসা ও আশীর্বাদ কুড়িয়েছে এই ছোট্ট শিশুটি। ভাইরাল হয়েছে একের পর এক ভিডিও। শ্রীহানের বাবা মিহির সামন্ত পেশায় স্কুল শিক্ষক হলেও একজন সঙ্গীত অনুরাগী। বাবার তবলা, গীটার ও মাউথ অর্গান সহ ভিন্ন ভিন্ন বাদ্যযন্ত্রের চর্চা বিশেষভাবে উজ্জীবিত করেছে শ্রীহানকে। করোনা পরিস্থিতিতে সঙ্গীতায়োজনের বিরলতার মধ্যেও তিনটি লাইভ স্টেজ পারফর্মের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে এই ক্ষুদে শিল্পী। কোনও প্রকার স্বরলিপি না দেখে মিউজিকট্রাকের সাথে একটানা ১৫টিরও বেশি গানের সুর বাজাতে পারে এই প্রতিভাবান বালকটি। মাউথ অর্গান ছাড়াও শ্রীহানের ছবি আঁকা ও পড়াশুনার প্রতি ভালোবাসা গভীর।
অনেকে ভাবেন মাউথ অর্গান বাজালে শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানি হয়। এই ধারনাটি একেবারে ভুল বললেন শ্রীহানের বাবা। একজন মাউথ-অর্গান বাদক হিসাবে মিহিরবাবু বলেন, মাউথ অর্গানে সুর তোলার সময় হাওয়া টানতেও হয় আবার ছাড়তেও হয় ফলে হার্টের একপ্রকার এক্সারসাইজ হয় যা আমাদের হৃদযন্ত্রকে অধিক সচল রাখে। তাই পদার্থবিদ্যার শিক্ষক তথা শ্রীহানের বাবা সাধারণ মানুষের এই ভ্রান্ত ধারণা দূর করে এই বিলুপ্তপ্রায় বাদ্যযন্ত্রটি আরও জনপ্রিয় করে তোলার বার্তা দিলেন।