সংহিতা শিরোমনি:সমাজের যেকোনও ভালো কাজে ঘাটাল ব্লকের মারিচ্যার পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ওয়েলফেয়ার সোসাইটি যে এগিয়ে আসে তা আবারও প্রমাণিত হল। ২৭ মে ওই সোসাইটির পক্ষ থেকে মহকুমার প্রশাসক ও পুলিশ আধিকারিকদের ফুলের তোড়া ও মানপত্র দিয়ে বিশেষ সম্মান ও কৃতজ্ঞতা জানানোর ব্যবস্থা করা হয়। হঠাৎ করে কেন প্রশাসন ও পুলিশকে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এই ধরনের সম্মান ও শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের ব্যবস্থা করা হল তার উত্তরে ওই সোসাইটির সম্পাদক শেখ রফিক আলি খান বলেন, করোনা জনিত লকডাউন পরিস্থিতিতে দেশবাসীকে রক্ষা করার জন্য বিভিন্নভাবে স্বাস্থ্য কর্মী, চিকিৎসক, দমকল, পুলিশ ও প্রশাসনের আধিকারিকরা যে ঝুঁকি নিয়ে সরকারি দায়িত্ব পালন করে চলেছেন তা দেখে আমরা অভিভূত। ওই সমস্ত আধিকারিকরা পরিবার-পরিজনদের সময় না দিয়ে দেশবাসীর জন্য ২৪ঘন্টা উৎসর্গ করে দিয়েছেন। অথচ এই লকডাউন পরিস্থিতিতে সারা দেশের প্রায় সমস্ত সরকারি বা আধা সরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ এবং অফিসের কর্মীরা বাড়িতে বসে সেই ছুটির আমেজ উপভোগ করছেন কিন্তু আজ পর্যন্ত প্রশাসন ও পুলিশের ডিউটিতে কোনও খামতি নেই। বরং এই সময়ে তাঁদের কাঁধে ডিউটির বোঝা দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। তাই আমাদের প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ওই সমস্ত আধিকারিকদের শ্রদ্ধা, সম্মান ও কৃতজ্ঞতা জানানোর জন্যই এই ক্ষুদ্র প্রয়াস। ওই দিন আমরা ঘাটালের মহকুমা শাসক অসীম পাল, ঘাটালের বিডিও অরিন্দম দাশগুপ্ত, ঘাটাল মহকুমার পুলিশ আধিকারিক অগ্নিশ্বর চৌধুরী, ঘাটালের সার্কেল ইন্সপেক্টর অফ পুলিশ সুপ্রিয় বসু এবং ঘাটালের ওসি দেবাংশু ভৌমিকের অফিসে গিয়ে ফুলের তোড়া ও মানপত্র দিয়ে সম্মানও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে এসেছি। আগামী দিনে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, দমকল বাহিনীর কর্মীদের উদ্দেশ্য একই ভাবে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সম্মান জানানোর ইচ্ছে রয়েছে। তবে প্রত্যেক কর্মীকে ব্যক্তিগতভাবে এই সম্মান জানানো সম্ভব হবে না বলে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের এক একজন আধিকারিকদের হাতেই এই প্রতীকী সম্মান জানানো হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানের ওই উদ্যোগে খুশি পুলিশ ও সাধারণ প্রশাসনের আধিকারিকরা। ঘাটাল ব্লকের বিডিও অরিন্দম দাশগুপ্ত এবং সিআই অব পুলিশ সুপ্রিয় বসু বলেন, টাকার মূল্যে বিচার করলে হয়তো এটা কিছুই নয়। কিন্তু এই সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে ওই প্রতিষ্ঠান আমাদের সঙ্গে দেখা করে একটা ফুলের তোড়ার মধ্যে দিয়ে অনেকটাই মনোবল ও উৎসাহ বাড়িয়ে দিলেন।
ঘাটাল ব্লকের মারিচ্যার পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ওয়েলফেয়ার সোসাইটি শুধু এই করোনা পরিস্থিতিতেই নয়, সরকারের যে কোনও কর্মসূচিকে বাস্তবায়িত করতে নানা ভাবে সহযোগিতা করে আসছে। তারমধ্যে ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ কর্মসূচির প্রচারকে সর্বস্তরের মানুষের কাছে তুলে ধরতে ঘাটাল থানা জুড়ে ওই প্রতিষ্ঠানের বিশেষ একটা ভূমিকা ছিল বলে ঘাটাল থানার পুলিশ জানিয়েছে। এবিষয়ে রফিকবাবুর বিনম্র উত্তর, নিজের বা প্রতিষ্ঠানের নাম জাহির করার জন্য নয়, যেকোনও ভাবে মানুষের পাশে থাকতে পারলে নিজেকে খুব পরিতৃপ্ত লাগে।
প্রসঙ্গত, ওই সোসাইটির অধীন পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মিশন, কাজি নজরুল ইসলাম কলেজ অফ এডুকেশন এবং পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর পি.টি.টি.আই ও বি.এড কলেজ রয়েছে। ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির পঠন-পাঠনের মানও জেলা জুড়ে নাম করে নিয়েছে।
[সম্মান প্রদানের ভিডিওটি দেখতে চাইলে নিচের প্লেবাটনটিতে ক্লিক করতে পারেন]