‘অপ্রকাশিত —মল্লিকা দাস
মরুভূমির ও একটা অপ্রকাশিত চাওয়া আছে
সেও চায়
নীচে বহু নীচে প্রশান্ত সাগরের মারিয়ানা খাতে
নিজেকে হারাতে।
তার না প্রকাশ হওয়া ইচ্ছেটা
দিনে তাকে ক্রোধে উত্তপ্ত করেছে যতো
রাতে বিষাদের শীতলতা দিয়েছে ততোটা।
…
পাহাড় ও চায় একবার
তার প্রেমিকার হাত ধরে যাযাবর হতে,
না প্রকাশ হওয়া ইচ্ছে টা
তাকে আদিম অনড় করেছে।
…
নদীর ও ইচ্ছে হয়
সাগরেরর থেকে গতিকে সরিয়ে
একবার পরকীয়া করে
গতিকে ঘোরায়।
না প্রকাশ হওয়া ইচ্ছেতে
অভিমানে অবিরাম বয়ে চলে সে।
…
আমার একটা অপ্রকাশিত প্রেম আছে
যার একটা চুম্বনে
হাজার বছরের তৃষ্ণা মেটে
মৃত্যু কে উপেক্ষা করে
আর একটা চুম্বনের আপেক্ষায় বেঁচে থাকতে ইচ্ছে করে। [শেষ]
‘বানান বিভ্রাট’ —মল্লিকা দাস
মেজাজ টা সেদিন এমনিতেই ঠিক ছিল না।
হঠাৎ হোয়াটসঅ্যাপে তোমার ম্যাসেজ
Nasta korlam
আমি ওমনি পড়ে নিলাম
‘নষ্ট করলাম’
ব্যাস আগুনে ঘি পড়া অবস্থা!
কী নষ্ট করলে? কেন নষ্ট করলে? কাকে নষ্ট করলে???
উত্তরের অপেক্ষা না করে দুমদাম সব বন্ধ।
হোয়াটসঅ্যাপ ম্যাসেন্জার ফোন নাম্বার সব।
দুদিন অপেক্ষা করে তুমি আমার কাজের রাস্তায় তোমার কাজ বন্ধ করে দাঁড়িয়ে রইলে একদিন
পরের দিন কোনও রকমে আমাকে থামিয়ে সামনের একটা চা দোকানে হাঁক পেড়ে বললে,
দু‘প্লেট ঘুগনি দুকাপ চা।
রাগী মুখে ঝাল ঝাল ঘুগনি শেষ করে চায়ে চুমুক দিচছি
তুমি বলে উঠলে
সেদিন থেকে এখনো নাস্তা করিনি।
খাবার nasta হয়েছে অনেক।
ঘুগনির ঝালে আমার মুখ
তখনো লজ্জায় লাল।
কী বিভ্রাট বলুন তো?? [শেষ]
‘খোঁজ’ —মল্লিকা দাস
সেই যে গেলে
গেলে তো গেলেই
ফিরলে না আর কোনদিন
অনেক খুঁজেছি
এখনো খুঁজি।
জানি যদি কেউ ইচ্ছা করে হারিয়ে যায়
সে ফিরবে না বলেই হারায়।
তাকে খোঁজা বাতুলতা।
তবুও…
মেঘলা দিনের
কোনো এক মন কেমনের বিকেলে
পারলে রাস্তা চিনে ফিরে এসো। [শেষ]
‘জানো কি কেউ তারা কথা রাখেনি…’ —মল্লিকা দাস
এইতো দুদিন আগেই বলেছিলে
আমার ছোট্ট আঁচলে
তুমি আকাশ এনে বেঁধে দেবে।
দেখো দু‘সুতো সময় ও কাটেনি
তুমি কেমন কাঁটা দিয়ে আকাশ টাকেই ফুটো করে চলে গেলে।
সব জল পড়ে ভিজে গেলাম
চুপসানো বেলুনের মত আকাশে ফুঁ দিয়ে
তুমি চলে গেলে অবহেলায়।
তুমি বলেছিলে
মাটিতে পা ফেললে
তুমি হাত পেতে দেবে,
আমার পায়ে কাঁটা না বেঁধে
সেই তুমি কী সুন্দর করে
বুকে ছুরি বসিয়ে দিলে যত্নে
শরীরের রক্তে আমি স্নান করলাম
আর তুমি তৃপ্তি নিয়ে দেখলে।
তুমি বলেছিলে
আমাকে ভালোবেসে কয়েক যুগ পার করে দেবে।
অথচ কত সহজে তুমি সব ভুলে গেলে।
কথা দিয়েছিলে কেন বলো?
তুমি কথা দিয়ে কথা রাখোনি
এ যন্ত্রণা তোমাকে ক্ষত করেছে কিনা জানি না
আমি ক্ষত বিক্ষত করেছি নিজেকে।
অপমানের ক্ষত।
অনেক ভালোবাসি তাই
ঘৃণা করতে পারিনি।
কথা দিয়ে কথা রাখোনি তুমি।
আসলেই কেউ তারা কথা রাখেনি। [শেষ]
‘সময়’ —মল্লিকা দাস
পৃথিবীতে যতকিছু দামী আছে
সোনা হীরা মুক্তা প্রবাল
তবু ‘সময়’-এর কাছে হার মানে সব
চাইলে কি ধরে রাখা যায়?
সময়ের স্রোতে সময় ফুরায়
জমে নাকো, না যায় জমানো
কেবলই ফুরায়।
ঘরে কথা বলা যায়না
টাওয়ার থাকে না বলে
এটা সকলেই জানে
তবু তিন রাত না ঘুমের পর
যে রাতে ঘুমের সময়
তখনই আসে যতো ফোন
আমার সময় কম
তবু তার থেকে কিছুটা খরচ করি
আর ঘুম কমে যায়।
তারপরো জেগে থাকি
যে রাতে ডেকে ডেকে পেঁচা ফিরে গেছে তাকে ফেরাবার।
ফিরবেনা জেনে যে চলে গেছে ফিরে
তাকে কি ফেরানো যায়
সময়ের মতো?? [শেষ]