সন্তু বেরা, স্থানীয় সংবাদ, ঘাটাল: দুপুরে গরম দু’মোঠো বাড়া ভাত নিজের বাড়ির ঠাণ্ড মেঝেতে [✔‘স্থানীয় সংবাদ’-এর সমস্ত কিছু জানতে এখানে ক্লিক করুন] বসে কোলের সন্তান আর অসুস্থ শাশুড়িকে নিয়ে একসাথে খাওয়া হল না! সমস্ত আসবাব সহ পরিবারের সবাইকে বাড়ির বাইরে বার করে দেওয়া হল। ছোট্ট নির্মীয়মান বাড়ি আর যৎসামান্য জমি যা ছিল তা মরগেজ রেখে প্রায় ৫ লক্ষ টাকা ব্যাঙ্ক থেকে লোন নিয়েছিলেন দাসপুর থানার মামুদপুরের বাসিন্দা শঙ্কর খামরই। ঘটনা ২০০৮ সালের। আজ ২০২৩ সালের মে মাসের ১২ তারিখ শুক্রবার। কর্মসূত্রে শঙ্করবাবু বাইরে থাকেন। বাড়িতে স্ত্রী সন্তান আর অসুস্থ মা।ব্যাঙ্কের ওই ঋণ না মেটানোর জন্য আদালতের নির্দেশে দাসপুর থানার পুলিশকে সাথে নিয়ে ওই ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ শঙ্কর খামরই এর বাড়ির সদস্যদের পাশাপাশি যাবতীয় আসবাবপত্র বাড়ি থেকে বার করে দিয়ে ওই বাড়ি সিল করে দিল। অভিযোগ, বছরের পর বছর গেলেও শঙ্করবাবু ব্যাঙ্ক থেকে নেওয়া ঋণ শোধ করেননি। অন্যদিকে শঙ্করবাবুর স্ত্রীর দাবি, ৫ লক্ষ টাকার মধ্যে ৩ লক্ষ টাকা তাঁরা শোধ করে দিয়েছিলেন। বকেয়া টাকা তাঁরা কিছু কিছু করে শোধ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ কোনও কথাই শোনেনি। কাগজে কলমে ব্যাঙ্ক থেকে নেওয়া ঋণ বকেয়া। আদালতের নির্দেশ মানতে বাধ্য প্রশাসন। কিছুক্ষণ আগেও যে পরিবারের মাথায় ছাদ ছিল। আজ শুক্রবারের বিকেল গড়াতেই সে পরিবারের মাথা থেকে ছাদ উধাও। ছোট্ট সন্তান আর অসুস্থ শাশুড়িকে নিয়ে খোলা আকাশের নীচে পরিবার। ঘটনার খবর পেয়ে ছুটে যান দাসপুর-১ ব্লক তৃণমূল সহ সভাপতি তপন চক্রবর্তী। কিন্তু কিছু করার নেই। তাঁর যেটুকু করার তিনি অবশ্য করেছেন। এক খানা কালো ত্রিপল ওই পরিবারের হাতে তুলে দেন তিনি। কালো ত্রিপলের নীচে কালোরাত যাপন শুরু এককালের নিজের সেই অন্ধকারাচ্ছন্ন বাড়ির সামনে বসেই।