চৌধুরী সামসুল আলম[রাজনৈতিক বিশ্লেষক•মো: ৯৭৩২৯৬৮৬৭৩]: গত ১৬ আগষ্ট তৃণমূলের ‘খেলা হবে’ দিবস মহা সমারোহে দিদির সাবালক, নাবালক ভাইয়েদের উদ্যোগে উদযাপিত হলো। ভাইয়েরা, এমনকি কোনও কোনও বোনেরাও যেভাবে এই খেলা হবে দিবস উদযাপন করলো সেটা অভিনব। অবশ্যই ওই বোনগুলোকে টাকা দিয়ে ভাড়া করে আনা হয়েছিল সেটা নিশ্চিত। সোসাল মিডিয়ায় সেই বোনেদের উদ্দাম নৃত্য ভাইরাল হয়েছে। ওইদিন বেশকিছু ভাইয়েদের ভিডিওতে দেখা গেল। আপনারাও নিশ্চয়ই দেখেছেন, উপভোগ করেছেন। শুধু উপভোগই নয়, তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করেছেন। তার জন্য অবশ্যই মাননীয়া ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য। উনি নিজে একজন মহিলা। মহিলা নেত্রী এবং মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর আহ্বানে এই খেলা হচ্ছে। সেখানে যুবতী মেয়েদের সঙ্গে দিদির ভাইয়েদের এই উদ্দাম নাচ তারই অনুপ্রেরণার ফসল। এটাই নাকি বাংলার সংস্কৃতি। উনি কখন খেলা হবে দিবস পালন করছেন! যখন বন্যায় বাংলার মানুষ বিপন্ন, যখন এসএসসি পাশ করা বেকার যুবক-যুবতীরা সরকারের প্রতিশ্রুতি দেওয়া সত্বেও নিয়োগ হতে না পেরে বিকাশ ভবনের সামনে ধর্নায় বসে। তাদের হঠাতে পুলিশি আক্রমন হচ্ছে। যখন এম.এ, পিএইচ ডি করা যুবতী পশ্চিমবঙ্গে একটা এইট পাশ ডোমের পদের জন্য দরখাস্ত করেন। যখন ডিজেল, পেট্রোল, রান্নার গ্যাসের দাম আকাশ ছোঁয়া, যখন বাংলার শিক্ষিত এমনকি অশিক্ষিত লোকজন পরিযায়ী শ্রমিক হয়ে ভিন্ রাজ্যে পাড়ি দিচ্ছেন। শিল্পের নামে প্রহসন ও ধোঁকাবাজি হচ্ছে, তখন নাকি রাজ্য জুড়ে এই খেলা হচ্ছে। খেলা মানে এতদিন আমরা জেনে এসেছি ফুটবল, ক্রিকেট, ভলিবল, কবাডি ইত্যাদি ক্রীড়াগুলিকে। খেলা হলো বিনোদন, শরীরচর্চা। যে খেলা ভিডিওতে দেখলাম তা অত্যন্ত ভয়ঙ্কর খেলা। যে খেলায় সুকান্তের ‘আঠারো’র যুবকদের মেরুদন্ডকে ভেঙে, দুমড়ে, মুচড়ে দেওয়ার খেলা। যে খেলা অপসংস্কৃতির বেনো জল- যা বাংলার যুবসমাজকে হতাশা, নিরাশা এমনকি আত্মহননের পথে আগামীদিনে ঠেলে দেবে সেই খেলা। কবে বাংলার মানুষ বাংলার স্বঘোষিত ‘বাংলার গর্ব’ তথা নেত্রীও মুখ্যমন্ত্রীর এই ভয়ঙ্কর আত্মঘাতী খেলা থেকে নিস্তার পাবে ভবিষ্যতই জানে। কিন্তু সচেতন মানুষের এই অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে জনমত গঠনে এই মুহূর্তে পথে নামা জরুরি হয়ে পড়েছে। না হলে তিল তিল করে একদা গড়ে ওঠা বাংলার জ্যাত্যাভিমান, আত্মমর্যাদার অবশিষ্ট বলে আর কিছুই থাকবে না।
Home এই মুহূর্তে খেলা-ধুলা যুবতীদের উদ্দাম নাচের সঙ্গে পালিত হ’ল ‘খেলা হবে’ দিবস, কারো পৌষমাস কারো...