নিজস্ব সংবাদদাতা: দুশ্চিন্তার কোনও কারণ নেই। বসে যাওয়া দাসপুর-২ ব্লকের কালাচাঁদ সেতুর সংস্কারের কাজ যুদ্ধকালীন তৎপরতায় শুরু হয়েছে। আর দু’সপ্তাহের মধ্যেই ব্রিজটি সংস্কারের কাজ শেষ হয়ে যাবে। ফলে আগের মতো করেই ওই সেতুর উপর দিয়ে সমস্ত ধরনের গাড়ি যাতায়াত করতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে।
দাসপুর-২ ব্লকের এই ব্রিজটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দাসপুর-২ ব্লক তথা পশ্চিম মেদিনীপুরের সঙ্গে পূর্ব মেদিনীপুরের দূরত্ব কমাতে পিপিপি তথা পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ বা সহভাগী পরিকল্পনায় ২০১৭ সালের মার্চ মাসে ৬৫লক্ষ ব্যয়ে শ্যামগঞ্জে দুর্বাচটি খালের উপর ওই কাঠের সেতুটি তৈরি করা হয়েছিল। ওই কাঠের সেতুটি তৈরি হওয়ার ফলে দাসপুর-২ ব্লকের সঙ্গে পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাট রেল স্টেশনের প্রায় ৩০ কিলোমিটারেরও বেশি দূরত্ব কমে যায়। প্রত্যেক দিন বেশ কয়েক হাজার নিত্যযাত্রীর সুবিধে হয়। •এই খবর সম্পর্কিত ভিডিওটি দেখতে চাইলে ▶এখানে ক্লিক করতে পারেন।
খুকুড়দহ থেকে কংসাবতী নদীর একটি শাখা দুই মেদিনীপুরের প্রায় সীমানা বরাবর দাসপুর-২ ব্লকের শ্রীবরাতে গিয়ে রূপনারায়ণ নদের সঙ্গে মিশেছে। ওই শাখাটিকে দুর্বাচটি খালও বলা হয়। পশ্চিম মেদিনীপুরের দক্ষিণ-পূর্ব কোণের জোতঘনশ্যাম এবং দুধকোমরা গ্রামপঞ্চায়েত এলাকার গ্রামগুলি তো বটেই সেই সঙ্গে ওই দুটি গ্রামপঞ্চায়েত এলাকা সংলগ্ন ওই ব্লকের বেশ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দাদের কোলাঘাট সামনে হলেও কিন্তু সহজে যাতায়াত করতে পারতেন না।
দাসপুর-২ পঞ্চায়েত সমিতির সহকারী সভাপতি আশিস হুদাইতের বাড়ি জোতঘনশ্যামে। তিনি বলেন, খুকুড়দহ থেকে শ্রীবরা পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার লম্বা ওই খালটির ওপর কোনও মজবুত সাঁকো বা সেতু ছিল না। বেশ কয়েকটি মতো বাঁশের সাঁকো ছিল। তাই ওই সমস্ত বাঁশের সাঁকো দিয়ে যাত্রীবাহী ছোট গাড়িও যাতায়াত করতে পারত না। সেজন্য ওই সমস্ত এলাকার বাসিন্দাদের খুবই সমস্যার মধ্যে থাকতে হয়। অনেক সময় ঘুর পথে নিয়ে যেতে যেতে সাপে কাটা রোগী চিকিৎসার অভাবে মারা গিয়েছেন। সন্তান সম্ভবা প্রসূতি সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা পাননি। তাই ওই সমস্ত সমস্যার কথা ভেবেই শ্যামগঞ্জে ওই খালের ওপর ৩০০ ফুট লম্বা ১২ ফুট চওড়া একটি কাঠের মজবুত সেতু বানানো হয়েছিল। জোতঘনশ্যাম গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত এক সরকারি কর্মী বিশ্বনাথ কুইল্যা ও তাঁর পরিবার ঋণ নিয়ে ৬৫ লক্ষ টাকা ব্যয় করে ওই সেতুটি নির্মাণ করেছেন। সেতু নির্মাণের খরচ তুলতে তিনি পারা পারের জন্য সরকার নির্দিষ্ট হারে টাকা তথা টোল তুলেন।
আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে সেতুটি বসে যায়। ফলে বাইক, সাইকেলে বা হেঁটে ছাড়া ওই সেতুর উপর দিয়ে যাতায়াত করা সম্ভব হচ্ছে না। ব্রিজের স্বার্থেই ভারি গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখতে হয় বলে জানা গিয়েছে। সমস্যা ও দুশ্চিন্তায় পড়েন নিত্যযাত্রীরা।
ব্রিজটি বসে যাওয়ার পরই বিশ্বনাথবাবু ফের ব্রিজটি সংস্কার করার উদ্যোগ নেন। যাত্রীদের কথা ভেবে ব্রিজ সংস্কারের কাজ দেখভাল করার জন্য এলাকায় প্রতিনিয়ত নজরদারি করছেন জোৎঘনশ্যামের রূপকার আশিস হুদাইত। তিনি বলেন, আর কয়েক দিনের মধ্যেই ব্রিজটির সংস্কারের কাজ শেষ হয়ে যাবে।
ঘাটাল মহকুমার সমস্ত খবর পেতে আমাদের MyGhatal মোবাইল অ্যাপ ডাউনলোড করুন [লিঙ্ক 👆] এবং ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করে রাখুন[লিঙ্ক 👆]।