মনসারাম কর👆 স্থানীয় সংবাদ, ঘাটাল: •ভয়াবহ কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ এখন ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র, গ্রাম গঞ্জের অনেক পরিবারই এখন জ্বর-সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত, সরকারি হিসেবেও করোনা আক্রান্তের সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে গ্রামের মানুষদের সুস্থ রাখতে রাত দিন লাগাতার পরিশ্রম করে চলেছেন কিছু কোয়াক ডাক্তার যারা সাধারণত গ্রামীণ চিকিৎসক হিসেবেই পরিচিত। পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছে শিক্ষক, অফিসার, কৃষক ব্যবসায়ী, মজুর এমনকি গ্রামে থাকা সরকারি স্বাস্থ্য কর্মীরাও সকলেই তাঁদের শারীরিক অসুস্থতার জন্য প্রথম ডাকেন গ্রামীণ চিকিৎসকদের। রাস্তা ঘাটে হঠাৎ দুর্ঘটনা ঘটলেও প্রাথমিক চিকিৎসা করে অসুস্থ ব্যক্তিকে সঠিক জায়গায় পাঠানোর ক্ষেত্রে গ্রামের এই চিকিৎসকরাই অনেক সময় পাশে থাকেন। আসলে গ্রামে গ্রামে যেহেতু সরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান নেই বা চাইলেই হঠাৎ করে হাতের কাছে পাশ করা সরকারি ডাক্তার মেলে না, তাই গ্রামের মানুষের কাছে আজও গ্রামীণ চিকিৎসকরাই বড় ভরসা। প্রসঙ্গত, গ্রামে গ্রামে মহিলা স্বাস্থ্য কর্মী থাকলেও প্রসূতি মা ও শিশুদের ক্ষেত্রেও গ্রামীণ চিকিৎসকদের ভূমিকা বেশি দেখা যায়।
বর্তমান সময়ে ঘাটাল মহকুমা সহ প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতে বহু মানুষ যখন জ্বর সর্দি কাশিতে ভুগছে তখন তাদের ডাকে সাড়া দিয়ে জীবনের বাজি রেখে তাঁদের পাশে থাকছেন এই গ্রামীণ চিকিৎসকরা। সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের সাথে কথা বলে জানা গেছে বর্তমান সময়ে মানুষ যে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির উপর দাঁড়িয়ে রয়েছেন সেখানে গ্রামীণ চিকিৎসকদের এগিয়ে আসার ভূমিকায় খুশি গ্রামের মানুষজন। শিক্ষাবিদ ড. শান্তনু বেরা বলেন, গ্রামাঞ্চলের ক্ষেত্রে গ্রামীণ চিকিৎসকদের বড় ভূমিকা অবশ্যই রয়েছে কারণ পরিকাঠামো অনুযায়ী হঠাৎ প্রয়োজনে বা সামান্য কোনও শারীরিক সমস্যার জন্য সরকারি প্রতিষ্ঠানে পৌছানো ও দৈনন্দিন পরিষেবা নেওয়া গ্রামের মানুষের ক্ষেত্রে অনেকটাই কঠিন, আর যে কোনও সমস্যা নিয়ে সকল মানুষ যদি সরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে পৌছে যেত তাহলে পরিষেবা পাওয়া তো পরের কথা সেখানে দাঁড়ানোর জায়গাও থাকতো না। অন্যান্য ফ্রন্ট লাইন ওয়ার্কারদের মতো বর্তমান সময়ে গ্রামীণ চিকিৎসকদেরও করোনা টিকা দিয়ে তাদেরও সুরক্ষার কথা ভাবা দরকার।
গ্রামীণ চিকিৎসকদের মধ্যে ঘাটালের বালিডাঙ্গা গ্রামের অভিজিৎ মান্না, ঘাটাল শহরের গম্ভীর নগরের তাপস মিশ্র, মনোহরপুরের শুকদেব দোলই, দাসপুর-২ ব্লকের রামনগরের দীপক হাইত, ইসবপুরের কমল মাইতি, বেলিয়াঘাটার নিতাই পাত্র, দুবরাজপুরের গীতাংশু মুখোপাধ্যায়, রূপকুমার বেরা প্রমুখ বলেন, যে কোনও শারীরিক সমস্যায় গ্রামের মানুষ আমাদের কাছে আসেন ও আমাদের ডাকেন, আমরা ২৪ ঘণ্টা সকলের পাশে থেকে আমরা তাঁদের সুস্থ করার চেষ্টা করি। কোভিড পরিস্থিতিতেও আমরা আমাদের জীবনের বাজি রেখে সেই কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। এই কাজে আমাদের অনেকেই অনেকসময় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। আমাদের মধ্যে কেউ কেউ মারাও গিয়েছেন। সম্প্রতি দাসপুর গোপীনাথপুরের এক গ্রামীণ চিকিৎসক বরুণ মাইতি(৪১) করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন।
গ্রামীণ চিকিৎসকেরা বলেন, সরকারের কাছে আমাদের আবেদন, সকল গ্রামীণ চিকিৎসকদের প্রায়োরিটির ভিত্তিতে অবিলম্বে স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে করোনা টিকা দেওয়া হোক। তাহলে তাঁরা মনোবল পেয়ে প্রত্যন্ত এলাকায় চিকিৎসা পরিষেবা দিতে পারবেন। ভালো রাখতে পারবেন বহু মানুষকে।
•আমাদের ফেসবুক পেজ:https://www.facebook.com/SthaniyaSambad.Ghatal/
•ইউটিউব চ্যানেল:https://www.youtube.com/SthaniyaSambad
•আমাদের সংবাদপত্রের মোবাইল অ্যাপ:https://play.google.com/store/apps/details?id=com.myghatal.eportal&hl=en
•টেলিগ্রাম চ্যানেল:https://t.me/SthaniyaSambadGhatal