কাজলকান্তি কর্মকার[সাংবাদিক, M: 9933066200]:নদীর একটু জল বাড়লেই আমাদের স্নায়ুর চাপও বাড়তে শুরু করে। ব্যাপারটা কিন্তু তা নয়। এবছর যে উচ্চতায় জল পৌঁছেছে তাতে বাঁধ ভাঙার কোনও সম্ভাবনা নেই। বিগত ১০ বছরের মধ্যে সবচাইতে বেশি জল বেড়েছিল ২০২১ সালে। [কাজলকান্তি কর্মকারের ফেসবুক পেজের লিঙ্ক👆] ২০১৭ সালে তার থেকেও কম উচ্চতায় থাকা সত্ত্বেও প্রতাপপুরে শিলাবতী নদী বাঁধ ভেঙে গিয়েছিল। যদিও প্রতাপপুরে নদী বাঁধের ভাঙন নিয়ে বহু বিতর্ক রয়েছে। ওই এলাকার এক শ্রেণির মানুষ এখনও গলা উঁচিয়ে বলেন, কিছু মানুষ পরিকল্পিতভাবে ষড়যন্ত্র করেই প্রতাপপুরে শিলাবতী নদীর বাঁধ ভাঙানোর ব্যবস্থা করেছিলেন। যদিও সেই অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। তবে ২০২১ সালের জলস্তরে যদি মহকুমার সমস্ত নদীর বাঁধকে রক্ষা করা যেতে পারে, তাহলে অনেকেরই অভিমত, ২০১৭ সালেও প্রতাপপুরের বাঁধকে রক্ষা করা যেত।
২০১৭ সালের ২৬ জুলাই রাত ৮টা ৪০ মিনিট নাগাদ যখন প্রতাপপুরে শিলাবতীর নদীর বাঁধ ভেঙে ছিল তখন কোন নদীতে কতটা সর্বোচ্চ জলস্তর ছিল দেখে নেওয়া যাক। বাঁকাতে ছিল ১৫ মিটার ৪৯ সেন্টিমিটার। গাদিঘাটে ছিল ৯মিটার ৯০ সেন্টিমিটার বন্দরে ছিল ৮মিটার ৩২সেন্টিমিটার। রানিচকে ৭মিটার ২৮ সেন্টিমিটার, গোপীগঞ্জে ৬মিটার ৮৫ সেন্টিমিটার এবং কল্মীজোড়ে ১০ মিটার ৬০ সেন্টিমিটার।
২০২১ সালে ৩১ জুলাই রাতে মহকুমা শাসকের কার্যালয়ের সামনের গার্ডওয়াল ভেঙে সারা ঘাটাল শহর প্লাবিত হয়েছিল। সে অর্থে বড় কোনও ক্ষতি হয়নি। ওই সময় নদ-নদীগুলির জলস্তর ছিল বাঁকাতে ১৬ মিটার ৩৭ সেন্টিমিটার(২০১৭ সালের থেকে বেশি), গাদিঘাটে ১০মিটার ৪২ সেন্টিমিটার(২০১৭সালের থেকে বেশি), বন্দরে ৮মিটার ৬২ সেন্টিমিটার(২০১৭ সালের থেকে বেশি), রানিচকে ৭ মিটার ৮৩ সেন্টিমিটার(২০১৭সালের থেকে বেশি), গোপীগঞ্জ ৫মিটার ৯৯ সেন্টিমিটার(২০১৭ সালের থেকে কম) এবং কল্মীজোড়ে ১০ মিটার ৫০ সেন্টিমিটার( ২০১৭ সালের থেকে ১০ সেন্টিমিটার কম)।
এবছর তথা ২০২৩ সালে বাঁকাতে সর্বোচ্চ উচ্চতা হয়েছিল ১৫ মিটার ১৩ সেন্টিমিটার (২০১৭ সালের থেকে ৩৬ সেন্টিমিটার এবং ২০২১ সালের থেকে এক মিটার এক সেন্টিমিটার কম), গাদিঘাটে ৮ মিটার ৯৬ সেন্টিমিটার (২০১৭ সালের থেকে ৯৪ সেন্টিমিটার এবং ২০২১ সালের থেকে এক মিটার ৪৬ সেন্টিমিটার কম), বন্দরে ৭মিটার ৭৪ সেন্টিমিটার (২০১৭ সালের থেকে ৫৮ সেন্টিমিটার এবং ২০২১ সালের থেকে ৮৮ সেন্টিমিটার কম), রানিচকে ৬মিটার ৪ সেন্টিমিটার (২০১৭ সালের থেকে ১ মিটার ২৪ সেন্টিমিটার এবং ২০২১ সালের থেকে এক মিটার ৭৯ সেন্টিমিটার কম), গোপীগঞ্জে ৫মিটার ১১ সেন্টিমিটার(২০১৭ সালের থেকে ৭৪ সেন্টিমিটার এবং ২০২১ সালের থেকে ৮৮ সেন্টিমিটার কম)এবং কল্মীজোড়ে ১০ মিটার ৩৭৫ সেন্টিমিটার (২০১৭ সালের থেকে ২৩ সেন্টিমিটার এবং ২০২১ সালের থেকে ১৩ সেন্টিমিটার কম)।
বিগত এক দশকে দু’টি বন্যার পরিসংখ্যান থেকেই পরিষ্কার এবার সে অর্থে বন্যা ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।