নিজস্ব সংবাদদাতা, ‘স্থানীয় সংবাদ’, ঘাটাল: বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় যেখানে শুধুমাত্র পরকীয়া সন্দেহে সংসার ভেঙে যাচ্ছে সেই মুহূর্তে এক বিরল চিত্র দেখা গেল ঘাটাল শহরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে। দুই স্ত্রীকে নিয়ে দিব্যি সুখের সংসার করছেন এক গাড়ি ব্যবসায়ী দেবু মাইতি। দেবুবাবু তনুশ্রীদেবীকে প্রথম বিয়ে করেন ২০০৭ সালে। তনুশ্রীদেবীর ১২ বছরের একটি মেয়ে এবং সাত বছরের একটি ছেলে রয়েছে। রেণুকাদেবীর সঙ্গে বিশেষ সম্পর্ক তৈরি হওয়ায় ২০১৯ সালে তাঁকেও বিয়ে করেন। মাস পাঁচেক হল রেণুকাদেবীর যমজ
সন্তানও হয়েছে। বর্তমানে এই বাড়িতে দুই সতীন থাকেন। নিজেদের মধ্যে কোনও রকম সমস্যাও হয় না। তনুশ্রীদেবী বলেন, আমার কর্তা রেণুকাকে বিয়ে করার সময় আমার মনটা একেবারে ভেঙে গিয়েছিল। তারপর মনটাকে অনেক বুঝিয়ে মেনে নিয়েছি। এখন আর কোনও সমস্যাই হয়নি। আর রেণুকাদেবী বলেন, আমি তো আগে থেকেই জানতাম দেবুর আগের বউ আছে। তাই সেই দিদি আমাকে মেনে নেবে কিনা
তা নিয়ে খুব চিন্তায় ছিলাম। অস্বীকার করব না, শ্বশুরবাড়িতে আসার সময় প্রথম প্রথম অ্যাডজাস্ট হতে সমস্যা হচ্ছিল। এখন আমরা দু’জন দুজনকে সতীন নয়, বান্ধবী মনে করি। প্রত্যেককে সব কথা শেয়ার করি। বরং কেউ যদি কোনও প্রয়োজনে বাড়ির বাইতে চলে যায় তখন খুব মিস করি।
বাড়ির কাজ করতেও কোনও সমস্যা হয় না। ভাগাভাগি করে কাজ করে নিই। পরস্পরকে সহযোগিতা করি। আর স্বামীর কাছ থেকেও কখনও মনে হয় না ভালোবাসা ভাগাভাগি হয়ে গিয়েছে। দেবুবাবুর প্রথম স্ত্রীর সন্তান হাসি ও শুভজিৎ বলে, আমাদের নতুন মা আমাদের দু’জনকে খুব ভালোবাসে, আদর করে। তাই নতুন মা কোথাও চলে গেলে মন খারাপ করে।
একই বাড়িতে দু’টি স্ত্রী দেখে প্রতিবেশীরা মুখটিপে হাসলেও দেবুবাবু বিষয়টিকে নিয়ে মোটেও গুরুত্ব দেন না। এবিষয়ে দেবুবাবু বলেন, বাড়িতে স্ত্রীকে রেখে বাইরে পরকীয়া করাটা পছন্দ করি না। তখন বরং মনে হয় একজনকে ঠকানো হচ্ছে। সেজন্যই দুজনকেই একই ছাদের তলায় নিয়ে এসে আমি অন্তত মানসিক পরিতৃপ্তি পেয়েছি।