ড.পুলক রায়, স্থানীয় সংবাদ: আজ সকাল সাড়ে আটটায় খড়ারের দলপতি পুরে ঘাটাল মহকুমা সাহিত্য একাডেমির প্রাক্তন কার্যকরী সভাপতি এবং দাসপুর সাহিত্য সংসদের প্রাক্তন সভাপতি বিশিষ্ট সাহিত্যিক সাংবাদিক এবং বিদ্যাসাগর গবেষক গোপাল চন্দ্র মিশ্র শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর।বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি প্রয়াত হন। কিছুদিন ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালে র আই, সি,ইউ তে ভর্তি ছিলেন।গোপাল বাবুর জন্ম ১৯৪৫ সালের ৩০ মে। অত্যন্ত বিনয়ী সাদাসিধে অনাড়ম্বর জীবন যাপনে অভ্যস্ত গোপাল চন্দ্র মিশ্র চরম আর্থিক সংকটের মধ্য দিয়ে বহু কষ্ট সহ্য করে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রফুল্ল চন্দ্র সেন এবং রাজ্যপাল শ্রীমতী পদ্মজা নাইডুর ব্যক্তিগত সাহায্যে ঘাটাল কলেজের দ্বিতীয় বার্ষিক পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। বংশ গৌরবেও খ্যাতি ছিল গোপাল বাবুর। শ্রীগৌরাঙ্গজনক বংশীয় বিদ্যাসাগর সুহৃদ ত্রিপুরা চরণ মিশ্র বিদ্যারত্ন এর পৌত্র ছিলেন তিনি।
খুব অল্পবয়স থেকেই সাহিত্য সংস্কৃতির প্রতি তিনি আকৃষ্ঠ হয়েছিলেন। মাত্র দশ বছর বয়সে গ্রামের যাত্রপালায় অভিনয় পুরস্কার লাভ। ১৯৫৮ সালে স্বদেশী যাত্রা এবং থিয়েটারে অভিনয় কৃতিত্ব। দুবছর পরে ” শিশু সাহিত্য চক্রের” প্রতিষ্ঠা, আর যষ্ঠ শ্রেণীতে অধ্যয়ন কালে তাঁর প্রথম কবিতা প্রকাশ। ১৯৬৩ সালে মেদিনীপুর কৃষ্টি সংসদ কর্তৃক আয়োজিত জেলা সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় সাহিত্য কবিতা বিভাগে তরুণ দের শাখায় প্রথম স্থান অধিকার করে ডিস্ট্রিক্ট চ্যাম্পিয়ন হন। এক ই বছর ২৮ শে এপ্রিল দীঘায় রাজনৈতিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী প্রফুল্লচন্দ্র সেন, জহরলাল নেহেরু, রেলমন্ত্রী লালবাহাদুর শাস্ত্রী প্রমুখের সাহচর্য লাভ।
১৯৭০ সালে দীর্ঘ গবেষণা র পর ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জীবনের বহু অপ্রকাশিত কাহিনী ঘটনা নিয়ে ” বাংলার বিদ্যাসাগর ” গ্রন্থ প্রকাশ করেন। ১৯৭৪ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তথ্য ও জনসংযোগ বিভাগে থেকে গোপাল বাবুই প্রথম গভর্ণমেন্ট প্রেস কার্ড প্রাপ্ত নিখিল ভারত বঙ্গ সাহিত্য সম্মেলনে র সদস্য ভুক্ত হন। বহু পত্র পত্রিকা য় তাঁর লেখা প্রকাশ পেয়েছে। এগুলো র মধ্যে কয়েকটি: দৈনিক বসুমতী, যুগান্তর, জনমত, আরো আগে, সোনালী রোদ, নূপুর, সবুজ নক্ষত্র, শিউলি, রামধনু, বেদূঈন প্রভৃতি পত্রিকা। তাছাড়া বেতার কেন্দ্র থেকেও তাঁর কিছু রচনা, গান পরিবেশিত হয়েছে।
ঘাটাল মহকুমা র একজন উল্লেখযোগ্য সাহিত্য সেবী এবং শিক্ষানুরাগী হিসেবে তিনি সুধীমহলে পরিচিত ছিলেন। ঘাটাল মহকুমা সাহিত্য একাডেমি তথা সমগ্র ঘাটাল মহকুমা তাঁর একজন সুযোগ্য সন্তান কে হারাল।