শুভম চক্রবর্তী, ঘাটাল:এক ‘করোনা’তে নাই রক্ষে নেই ‘মরফিন’ তার দোসর, বাজারের ভাবগতিক দেখে মহকুমার মাংস ও ডিম ব্যবসায়ীদের মুখে মুখে ঘুরছে এমনই কথা। বছরের এই সময়টাতে নানান উৎসব-অনুষ্ঠান,বিয়ে ইত্যাদির দৌলতে মাংস ও ডিম ব্যবসায়ীদের মুখে প্রায় সারাক্ষণই চওড়া হাসি লেগেথাকলেও এবার যেন বিধি বাম।
সম্প্রতি চীনে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়ানোর পরে বিভিন্ন সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে গুজব ছড়াতে থাকে দাবানলের মতো।ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ এর মতো বেশ কিছু সোশ্যাল সাইটে দাবি করা হয় ভারতে করোনা ভাইরাস ছড়াচ্ছে নাকি মুরগির মাংস থেকে। সঙ্গে বেশ কিছু ভয়ংকর ছবিও জুড়ে দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্নভাবে সতর্ক করা হচ্ছে এইসব মাংস খাওয়ার ব্যাপারেও। আর এই গুজবের জেরেই মাংসের বাজার থেকে ক্রমশ মুখ ফেরাতে শুরু করেছেন বেশ কিছু নিয়মিত খদ্দের। ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন ভাবে বোঝানোর চেষ্টা করেও বিফল হয়েছেন। করোনা ভাইরাস নিয়ে গুজবের জেরে এতদিন মন্দা চলছিল মুরগিরমাংসের বাজারে,এবার সোস্যাল মিডিয়ায় দৌলতে কোপ পড়ল খাসির বাজারেও।
এরমধ্যেই আবার গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো এসে হাজির হয়েছে মরফিন ভাইরাস এর গুজব সেই সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেই।সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটগুলোতে দাবি করা হচ্ছে ব্রয়লার ও পোল্ট্রি মুরগির নয় মুলত খাসির মাংস থেকেই মূলত ছড়াচ্ছে এই মরফিন ভাইরাস।এরই সঙ্গে বেশ কিছু ভয়ংকর রোগগ্রস্থ ছাগল ও খাসির ছবি আপলোড করে সর্তকতা জানানো হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়াগুলি তে।
মরফিন এবং করোনা ভাইরাসের নিয়ে স্রেফ গুজবের জেরেই মুরগির ডিম ও মাংসের থেকে আগেই মুখফিরিয়ে নিয়েছিল ক্রেতারা এবার তারই ছায়া পড়ল খাসির বাজারেও।তাই মাছে ভাতে বাঙালি এবার ভীষণভাবে মাছের দিকেই আগ্রহ দেখাচ্ছেন। আর এই সুযোগ নিচ্ছে বেশ কিছু অসাধু ব্যবসায়ী।এই আবহাওয়ায় ফায়দা লুটছে কিছু মাছ ব্যবসায়ী।ঘাটাল বড়বাজার মাছের বাজারে প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মাছের দাম। দেশি পুকুরের মাছ তো বটেই সেই তালিকায় বাদ যাচ্ছেনা ময়না বা বিলাসপুর থেকে আনা চালানি মাছগুলোতেও। যদিও মহকুমার চিকিৎসক মহলের এই প্রসঙ্গে বক্তব্য সোশ্যাল মিডিয়াতে এমন প্রচার নিতান্তই গুজব ভিত্তিক। ডিম ও মাংস সঠিক ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে রান্না করলে ভয়ের কিছুই নেই।
ঘাটাল বড় বাজার সংলগ্ন মাছ বাজারের ক্রেতা রাজকুমার সমন্ত বলেন বাড়ির জন্য প্রতি রবিবারই মাংস কিনি কিন্তু এখন যা অবস্থা তাতে মাংস কিনতেই ভয় করছে অগত্যা মাছকিনেই বাড়ি ফিরব। একই সুর শোনা গেছে ঘাটাল প্রগতি মার্কেটের এক ক্রেতা সুদীপ্ত চক্রবর্তী গলাতে ও। তারবক্তব্য বাড়িতে অতিথি এসেছে অন্যবার মাংস নিয়ে গেলেও সোশ্যাল মিডিয়ায় যা সব দেখছি তাতে মাংস কেনার সাহস হচ্ছে না।তাই দামটা অনেক বেশি হলেও পুকুরের মাছের উপরেই ভরসা করতে হচ্ছে।