বাবলু সাঁতরা, স্থানীয় সংবাদ, ঘাটাল: সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে কিন্তু বছরের পর বছর নেই কোনও সংযোগ,নিরাপত্তা রক্ষী রাখার সরকারি নির্দেশিকা থাকলেও তাও নেই,নিত্যদিন চুরি থেকে অসামাজিক কাজ বেড়ে চলেছে জেলার বৃহৎ চন্দ্রকোনা রেগুলেটেড মার্কেট ও কৃষক বাজারে,নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে ব্যবসায়ী থেকে এলাকাবাসী।
বছরের পর বছর এমনই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা ২ ব্লকের চন্দ্রকোনা পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা রেগুলেটেড মার্কেট কমিটির সর্ববৃহৎ চন্দ্রকোনা রেগুলেটেড মার্কেট ও কৃষক বাজার। ৫ নং ওয়ার্ডের এই রেগুলেটেড বাজার জেলার সবচেয়ে বড় বৃহৎ বাজার বলেই পরিচিত।২০১৪ সালেই রেগুলেটেড মার্কেট চত্বরেই গড়ে তোলা হয় কৃষক বাজার,ঢেলে সাজানো হয় গোটা বাজার চত্বরকে।সবজি বাজারের একাধিক সেড,বিভিন্ন দোকানের স্টলের পাশাপাশি নতুন কৃষক বাজারের অধিন গড়ে তোলা হয় ৮৪ টি দোকানের স্টল,সাথে একাধিক গুদামঘর থেকে খুচরো ও পাইকারি সবজি বিক্রেতাদের জন্য দুটি বড় সেড।ইতিমধ্যে বেশকিছু স্টলে রকমারি দোকান করে ব্যবসাও শুরু করেছে অনেকেই।কিন্তু ব্যবসায়ীদের অভিযোগ,এতবড় কৃষক বাজার চত্বরে নেই কোনও নিরাপত্তা,বিশেষ করে সন্ধ্যা নামলে তাদের দোকানের চারদিক অন্ধকার থাকে,বিকল বিদ্যুতের আলো।আর এতেই দিনদিন বেড়ে চলেছে নেশার আসর,চত্বরেই পড়ে থাকতে দেখা যায় মদের বোতলও।জানাযায়,বছর দেড়েক আগে চন্দ্রকোনা থানার উদ্যোগে নজরদারির জন্য থানা এলাকার গুরুপুর্ণ জায়গায় বসানো হয়েছিল সিসিটিভি ক্যামেরা।তেমনই চন্দ্রকোনা রেগুলেটেড মার্কেট চত্বরেও বসানো হয়েছিল ৪-৫ টি ক্যামেরা।কিন্তু তা কোনও কাজেই দেয়না,ক্যামেরা থাকলেও এখনও তার সংযোগই করা হয়নি অপারেটরের জন্য।জানাযায়,২০১৪ সালে রাজ্য সরকার জেলার সবকটি কৃষক বাজারে নিরাপত্তার জন্য ৬ জন সিভিক ভলেন্টিয়ার নিয়োগের নির্দেশিকা জারি করে,সেমতো জেলা প্রশাসনও সেই নির্দেশিকা পালনে অর্ডার জারি করেছিল।কিন্তু সেই নির্দেশিকাই সার,এখনও চন্দ্রকোনার এই রেগুলেটেড মার্কেট ও সাথে থাকা কৃষক বাজারে নেই কোনও নিরাপত্তা রক্ষী এমনকি কোনও সিভিক ভলেন্টিয়ারও। ফলে মার্কেট চত্বরে আকছার বাইক সহ দোকানে চুরির ঘটনা ঘটে চলেছে,বাড়ছে নেশার আসর।আর এতে বেজায় ক্ষুব্ধ বাজার চত্বরের ব্যবসায়ীরা।তাদের আরও অভিযোগ,সরকার ঝাঁচকচকে কৃষক বাজার গড়ে তুললেও তা রক্ষনাবেক্ষন,নজরদারির অভাবে পরিকাঠামোগত ও পরিষেবার ঘাটতি রয়েছে।মার্কেট চত্বর জুড়ে বাতি স্তম্ভ,আলোর ব্যবস্থা থাকলেও অনেক জায়গায় তা বিকল বা ভেঙে পড়েছে।এর জেরে সন্ধ্যা নামলেই দোকানের স্টলগুলির সামনে অন্ধকার নেমে আসে।এতে আরও উপদ্রব বাড়ে নেশাড়িদের।যদিও ইতিমধ্যে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা রেগুলেটেড মার্কেট কমিটির পক্ষ থেকে নিরাপত্তা চেয়ে এবং সরকারি নির্দেশ মতো দ্রুত ৬ জন সিভিক ভলেন্টিয়ার নিয়োগের দাবিতে চন্দ্রকোনা থানায় লিখিত আবেদনও করা হয়েছে।উল্লেখ্য,শুধু চন্দ্রকোনাই নই,লাগোয়া গড়বেতা,কেশপুরের বিস্তৃর্ণ এলাকার ক্রেতা,বিক্রেতা এবং ফোঁড়েরা দৈনিক ভিড় জমায় এই রেগুলেটেড মার্কেটে।ভোর ৩ টে থেকে ফোঁড়েদের ভিড় জমে, সবজি বাজার চলে দুপুর পর্যন্ত।পাশাপাশি দুবেলাই খোলা থাকে মার্কেট চত্বরে থাকা দোকানগুলিও।আর এই মার্কেটে আসা ক্রেতা বিক্রেতাদের একটাই দুঃশ্চিন্তা থাকে নিত্যদিন ঘটে চলা বাইক চুরি,এমনকি একাধিক বার মার্কেটের ভিতরে থাকা দোকানে চুরির ঘটনা নিয়ে।প্রশাসন দ্রুত মার্কেটের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্যোগী না হলে বড়সড় অঘটন ঘটার আশঙ্কায় সকলেই।এবিষয়ে রেগুলেটেড মার্কেটের ইনচার্জ রাজীব পালধী অবশ্য জানান,”মার্কেট চত্বরে বেশকিছু ঘটনা ঘটছে আমাদের কাছেও ইনফরমেশন এসেছে,আমরা ইতিমধ্যে ডিএম ম্যাডামের নির্দেশে থানায় চিঠি করেছি ৬ জন সিভিক ভলেন্টিয়ার নিয়োগের জন্য।সরকারি নির্দেশ রয়েছে প্রত্যেক কৃষক বাজারে ৬ জন সিভিক ভলেন্টিয়ার নিরাপত্তার জন্য রাখার।আশাকরছি দ্রুত তা করা হবে।আর সিসিটিভি ক্যামেরা প্রসঙ্গে তিনি জানান,ওগুলো চন্দ্রকোনা থানার তরফে লাগানো হয়েছিল,আমাদের এখানে অপারেটরের জন্য কোনও ডিভাইস বা সিস্টেম নেই,পুলিশের কাছে আছে কিনা তারাই বলতে পারবে।”সরকারি নির্দেশিকা থাকা সত্বেও দীর্ঘ বছর ধরে জেলার এতোবড় একটি বাজার চত্বরে কেনো সিভিক ভলেন্টিয়ার নিয়োগ বা নিরাপত্তার জন্য কোনও তৎপরতা নেই,স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের উদাসীনতা নিয়েই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।