নিজস্ব সংবাদদাতা: বৃহস্পতিবার দিনভর হঠাৎ করেই ঘাটাল-পাঁশকুড়া সড়কের পাশাপাশি ঘাটাল-মেদিনীপুর সড়কেও অতিরিক্ত হারে মাল বোঝাই গাড়ির যাতায়াত। দাসপুর, ঘাটাল জুড়ে সোরগোল মেদিনীপুরে সেতু ভেঙে এই বিপত্তি। চলুন জানি আসল রহস্যটা কোথায়। কেনই বা সমস্ত মালবাহী গাড়ি গুলি এইপথে। জাতীয় সড়কের ওপর কংসাবতী নদীর উপরে থাকা তৈরি দক্ষিণবঙ্গে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সেতু হল পশ্চিম মেদিনীপুরের বীরেন্দ্র শাসমল সেতু। কয়েক বছর ধরেই সেতুর অবস্থা বিপজ্জনক আঁচ করে শুরু হয়েছিল সংস্কার। তাতেও পরিস্থিতি খারাপ দেখে বুধবার রাত থেকেই বন্ধ করে দেওয়া হলো ওই সেতুর উপর দিয়ে ভারি গাড়ি যাতায়াত। জেলাশাসক এর নির্দেশে ওই জাতীয় সড়কের ওপর এর দূরপাল্লার গাড়িকে অতিক্রম করতে হচ্ছে প্রায় ৭০ থেকে ৮০কিলোমিটার পথ। বৃহস্পতিবার কলকাতা থেকে হাজির হন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের ইঞ্জিনিয়ারগণ। জানালেন আরেকটি “মাঝেরহাট” কাণ্ড আটকাতে আপাতত বন্ধ করা হচ্ছে এই ব্রিজের উপর লোড। এক বছর সংস্কার চলার সাথে সাথে বিকল্প ব্রিজ তৈরির কাজ শুরু হবে দ্রুত। মেদিনীপুর শহরের পাশে থাকা ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের ওপর এই বীরেন্দ্র শাসমল সেতু দীর্ঘ ৫০ বছরের পুরনো। প্রায় ছ’শো মিটার দীর্ঘ সেতুটির ওপর দিয়ে প্রতিদিন লক্ষাধিক গাড়ি যাতায়াত করে। সেতুর একদিকে কলকাতা মুম্বাই ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক সংযোগ। অন্যদিকে আসানসোল রানীগঞ্জ যাওয়ার রাস্তা। প্রতিদিন বহু গুরুত্বপূর্ণ যানবাহন ওই সড়কের উপর দিয়ে যাতায়াত করে। দু’বছর আগে সেতুর বিপজ্জনক পরিস্থিতি দেখে সংস্কার শুরু হয়েছিল। তার পরেও সংকট মনে হয় বুধবার থেকে সেতুর উপরে ভারি গাড়ি বন্ধ করে দেওয়া হল। চন্দ্রকোণা রোড এলাকাতে আসানসোল রানীগঞ্জের দিক থেকে আগত বড় গাড়িগুলিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে ঘাটাল এর রাস্তায়। ওই এলাকার লরি ব্যবসায়ী সংগঠনের পক্ষ থেকে বিনয় প্রসাদ বলেন-“চরম সমস্যা তৈরি হয়েছে রাত থেকে গাড়ি ঘুরিয়ে দেওয়ায়। অতিরিক্ত ৭০ কিলোমিটার এর বেশি ঘুর পথে যেতে হচ্ছে আমাদের। আমরাও সংগঠনের পক্ষ থেকে সমস্ত লরি চালক ও অন্যান্য বহন চালকদের সতর্ক করা শুরু করেছি”
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ওই সেতু পরিদর্শন করে দ্রুত তৎপর হওয়ার জন্য প্রস্তুতি শুরু করলেন পূর্ত দপ্তরের ও জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের আধিকারিকরা। জাতীয় সড়ক বিভাগের চিফ ইঞ্জিনিয়ার রাজীব চট্টরাজ বলেন-“সেতুর অবস্থা যথেষ্ট বিপজ্জনক। তাই আরেকটি মাঝেরহাট কাণ্ড আটকাতে আমাদের দ্রুত তৎপর হতে হচ্ছে। মানুষ অসুবিধায় পড়বেন জানি, কিন্তু এটা মেনে নিতেই হবে। ঘুর পথে যাতায়াত করতে হবে। এক বছরের মধ্যে এই সেতু সংস্কার শেষ করবো সেই সঙ্গে পাশেই একটি বিকল্প সেতু তৈরির উদ্যোগ শুরু হচ্ছে।” তবে আপাতত এই ৬০০ মিটার সেতুর পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বড় ভারি গাড়িগুলিকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে কলকাতা বা অন্যান্য স্থানে যেতে হচ্ছে। জেলা পরিষদের পক্ষ কর্মাধ্যক্ষ নির্মল ঘোষ বলেন, জেলাশাসকের নির্দেশে রাত থেকেই তৎপর হয়েছে সকলেই। সেতুর দুই প্রান্তের গাড়ি গুলিকে দু দিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার কাজ শুরু করেছে পুলিশ।